১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
সিএমজেএফের সাথে বিএসইসির অধ্যাপক শিবলী

‘বন্ডের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করলে জনগণের ওপর কর চাপ কমবে’

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সাথে সিএমজেএফ নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলো বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে করতে হবে। তাহলে জনগণের ওপর ট্যাক্সের চাপ কমে আসবে।

আগামী ৪ বছরে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আগারগাঁওস্থ বিএসইসি ভবনের সম্মেলন কক্ষে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এসব কথা বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

এসময় সিএমএজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানি ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু আলী, সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমানসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘পুঁজিবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের উপর কর আরোপ করা হবে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্তৃপক্ষ প্রতিবছরই বাংলাদেশকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে একটি ক্যাপিটাল গেইনের উপরে ট্যাক্স আরোপ করা। কিন্তু এটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্ভব না। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাথে আলাপ হয়েছে। তারা ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স আরোপ করবে না।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) এবং সেকেন্ডারি মার্কেটের সূচক দেখা আমার কাজ না। এই দুটিইসহ পুঁজিবাজার দেখভালের দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জের। আজকে এ বিষয়টি স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে বলে দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরকেও সেদিকে যেতে হবে। আমেরিকাসহ বিশ্বের উন্নত দেশ বন্ডের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন করে বন্ডের অর্থায়ন দিয়ে। দেশটির ট্রিলিয়ন ডলার বন্ড ইস্যু করা রয়েছে, প্রয়োজনেই বন্ড ইস্যু করে। আমাদের দেশ বিষয়টি জানেই না।’

অধ্যাপক শিবলী বলেন, ‘আমি বিমান বাংলাদেশকে বলছি ১০টি উড়োজাহাজ কিনতে, তাদের জন্য আমরা বন্ড অনুমোদন দেবো। তাদের বলেছি, আপনাদের সরকারের কাছে গিয়ে টাকা আনার দরকার নেই। বন্ড ছেড়ে এই টাকায় বিমান কিনবেন। বন্ড ইস্যু করবেন বিদেশীরা কিনে নিবে, আট বছর পর বন্ডের টাকার দিয়ে দিবেন। আট বছর পরও যদি বন্ডের টাকা দিতে না পারেন তবে আবার বন্ডের অনুমোদন দিয়ে দিবো। সেই টাকা দিয়ে আগের বন্ডের টাকা পরিশোধ করে দেবেন।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘করোনার সময় বন্ড, ডেরেভিটস ও কমোডেটিভ মার্কেট নিয়ে এসেছি। এগুলো সম্পূর্ণ হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতির সিনারিও চেইঞ্জ হয়ে যাবে। বন্ডের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন হবে। এটাই হলো আমার প্রধান কাজ। ঋণ নিয়ে কিংবা করের টাকা দিয়ে উন্নয়ন কোনো দিন সম্ভব না।’

তিনি বলেন, ‘করের বোঝা চাপিয়ে দিলে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ সবাই ক্ষেপে যায়। ধরুন, আপনি গুলশান মার্কেট করবেন, সাধারণ মানুষের টাকা দিয়ে গুলশান মার্কেট করবেন। বঙ্গবাজার মার্কেট করবেন, ঢাকার চারদিকে সুয়ারেজ খাল করবেন এগুলো করবে বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে।’

অধ্যাপক শিবলী বলেন, ‘বিএসইসিতে দুই বারে আট বছরের বেশি নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ নেই। আমার এরইমধ্যে দুই বার নিয়োগ হয়েছে। তৃতীয় বার নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ নেই। তাই আর হারানোরও কিছু নেই। এখন শেয়ারবাজারের জন্য শুধু ভালো কিছু করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘গত চার বছরে পুঁজিবাজারের অনেক কিছুই চিনতে ও বুঝতে শিখেছি। কে বন্ধু আর শত্রু, তা বুঝি। সে আলোকে আগামীতে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নেবো।’

‘সূচক বৃদ্ধি-পতন দেখার কাজ বিএসইসির না। আর কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনাও বিএসইসির কাজ না। কিন্তু শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এ দুটি কাজ করতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছি,’ বলেন অধ্যাপক শিবলী।


আরো সংবাদ



premium cement