লকডাউনে বন্ধ হচ্ছে ব্যাংকের শাখা
- আশরাফুল ইসলাম
- ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০৯:১৫
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। যেসব ব্যাংক শাখার অবস্থান লকডাউন করা এলাকায় আওতাভুক্ত ওই শাখাগুলো জনস্বার্থে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ ধরনের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
এ দিকে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পন্ন হয় এমন ব্যাংক শাখাগুলোর লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গতকাল এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব এলাকায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি ওইসব এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। অর্থাৎ, ওইসব এলাকা থেকে কাউকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। আবার বাইরে থেকে কাউকে ওইসব এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে এ বিষয়ে প্রশাসন থেকেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এতে বিপত্তিতে পড়েছেন ওইসব এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকগুলোর শাখায় কর্মরত ব্যাংকাররা।
যেমন, খিলগাঁও এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। কিন্তু ওইএলাকায় পূবালী ব্যাংকের একটি শাখা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই শাখার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তার বাসা মোহাম্মদপুর এলাকায়। লকডাউনের কারণে তিনি ওই শাখায় গতকাল যেতে পারেননি। কারণ জনস্বার্থে ওই শাখা গতকাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লকডাউন না ছাড়া পর্যন্ত ওই শাখা আপাতত বন্ধ রাখা হবে। নিকটস্থ অন্য শাখায় গ্রাহকদের লেনদেন করতে ব্যাংক থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো: আব্দুল হালিম চৌধুরী গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি শাখা ব্যবস্থাপককে নির্দেশনা দেয়া আছে, যেসব এলাকায় করোনার প্রভাবে লকডাউন থাকবে ওইসব শাখাগুলো আপনাআপনিই বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ নিরাপত্তার স্বার্থেই বাইরে থেকে ওইসব এলাকায় লোকজন যাবে না। আর ভেতর থেকে বাইরে যাবে না। এ কারণেই শাখাগুলো বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেয়া আছে।
ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশব্যাপী ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৩০টি শাখা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে লকডাউনের কারণে। এর মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের শাখা রয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, আগে মানুষের নিরাপত্তা তারপর ব্যাংকিং। লকডাউন ছাড়ার পর আবার শাখাগুলো খোলা হবে। এ জন্য যদি কোনো গ্রাহকের জরুরি ব্যাংক লেনদেনের প্রয়োজন হয় তাহলে সেসব গ্রাহককে নিকটস্থ অন্য শাখায় এসে লেনদেন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা বৃদ্ধি : এ দিকে দীর্ঘ দিন ধরে সীমিত পরিসরে ব্যাংক লেনদেন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় প্রথমে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা এবং এর পরবর্তী নির্দেশনায় তা আরো এক ঘণ্টা বাড়িয়ে ১টা অর্থাৎ তিন ঘণ্টা করা হয়েছিল।
কিন্তু গ্রাহকের চাপ বেশি থাকায় বৈশ্বিক বাণিজ্যে নিয়োজিত ব্যাংকগুলোর শাখায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। গ্রাহকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি করার পর গতকাল শুধুমাত্র বৈদেশিক বাণিজ্য হয় এমন ব্যাংক শাখাগুলোতে (এডি শাখা) লেনদেনের সময়সীমা আরো এক ঘণ্টা বাড়িয়ে বেলা ২টা করা হয়।
অর্থাৎ এডি শাখাগুলোতে এখন থেকে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত। কিন্তু অন্যান্য হিসাব সম্পন্ন করার সময়সীমা আগের মতোই অর্থাৎ ৩টা পর্যন্ত বহাল রাখা হয়েছে। তবে অন্য শাখাগুলোতে দুপুর ১টা পর্যন্ত লেনদেন হবে। এ নির্দেশনা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গতকাল এক সার্কুলার লেটার জারি করে গতকালই ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীকে অবহিত করা হয়েছে।