২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

অনুমোদন ছাড়াই মুনাফা দেশে নিতে পারবে বিদেশী কোম্পানি

অনুমোদন ছাড়াই মুনাফা দেশে নিতে পারবে বিদেশী কোম্পানি - ছবি : সংগৃহীত

বিদেশী কোম্পানিগুলোর বাংলাদেশস্থ শাখা তাদের পরিচালন মুনাফা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই নিজ দেশে নিতে পারত। এবার কোম্পানিগুলোর শাখার বাইরেও অন্যান্য কোম্পানি তাদের মুনাফা দেশে নিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে না। তবে মুনাফা পাঠানোর ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে। এ বিষয়ে বৈদেশিক মুদ্রাবিনিময় নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক সার্কুলার জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তা ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদেরকে অবহিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রাবিনিময় আইন ১৯৪৭ এর ১৮বি(১) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশে কার্যরত বিদেশী কোনো কোম্পানির শাখা বাংলাদেশে ব্যবসা করে ব্যবসার মুনাফা দেশে নিতে পারত। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বিদেশী কোম্পানির শাখার বাইরেও অন্যান্য কোম্পানি বা ফার্ম তাদের কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। বিদ্যমান আইনের অস্পষ্টতার কারণে শাখার বাইরে অন্যান্য কোম্পানি তাদের মুনাফা দেশে নিতে জটিলতা দেখা দিত। আইনি জটিলতা এড়াতে বাংলাদেশে কার্যরত প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের আশঙ্কায় এত দিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সার্কুলারের মাধ্যমে অন্যান্য কোম্পানি বা ফার্মগুলোর মুনাফা দেশে পাঠানোর বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। বলা হয়, বাংলাদেশে থাকা বিদেশী কোম্পানিগুলোর শাখার মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও তাদের মুনাফা দেশে নিতে পারবে।

অন্য দিকে দেশে কার্যরত বিদেশী কোম্পানির কোনো শাখা বন্ধ হয়ে গেলে বন্ধ শাখার আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সামগ্রীর বিক্রির অর্থ এবং শাখার নামে ব্যাংকে থাকা অর্থ দেশে পাঠানোর কোনো নীতিমালা ছিল না। গতকালের সার্কুলারে শাখাগুলোর অবশিষ্ট অর্থও দেশে পাঠানোর বিষয়ে স্পষ্ট করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বন্ধ হওয়া শাখাগুলোর অবশিষ্ট অর্থও দেশে নিতে পারবে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ শাখার অনুমোদন নিতে হবে।

এ দিকে বিদেশী কোম্পানিগুলো আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করে থাকে। কিন্তু প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে দেরি হওয়ার কারণে প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য ব্যয় পরিচালনার ক্ষেত্রে অর্থসঙ্কট দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় কোম্পানিগুলোর প্রধান অফিস থেকে অর্থ ধার করে প্রকল্প কাজ চালানো হয়। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রাবিনিময় আইনে বিদেশী কোম্পানিগুলোর প্রধান কার্যালয় থেকে ধারকৃত অর্থ দেশে ফেরত নেয়ার কোনো বিধান ছিল না। আইনি জটিলতা এড়াতে গতকাল জারিকৃত সার্কুলারে প্রধান কার্যালয় থেকে ধার করা অর্থ ফেরত পাঠানোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক আবু ছালেহ মুহম্মদ সাহাব উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক সার্কুলার জারি করা হয়। সার্কুলারটি পরিপালনের জন্য গতকালই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে অবহিত করা হয়। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রাবিনিময় নীতিমালা শিথিলের কারণে মুনাফা নিজ দেশে পাঠানোর নামে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হয়ে যায় কি না, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি কার্যক্রম আরো জোরদার করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement