টানা পতনের মুখে পুঁজিবাজার, তিন দিনে সূচক কমেছে ৪০ পয়েন্ট
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪৬
সপ্তাহের তিন কার্যদিবসেই পতন হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে। চলতি সপ্তাহের এ কয়েকদিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ৪০ পয়েন্ট।
মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের উত্থান হলেও দিনের শেষে এসে কমেছে প্রধান এবং শরীয়াভিত্তিক সূচক।
এতে করে গত সপ্তাহে ৫১৬৬ পয়েন্ট নিয়ে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ডিএসইএক্সের সূচক টানা তিন দিনের পতনে কমে হয়েছে ৫১২৬ পয়েন্ট।
এক দিনের লেনদেনে ডিএসইএক্স কমেছে ৩ পয়েন্ট। শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ৪ পয়েন্ট। তবে সূচক বেড়েছে বাছাইকৃত শেয়ারে। ব্লুচিপ ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কমলেও দিনের লেনদেনে দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেন হওয়া ৪০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৭৩, কমেছে ১৫২ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এ ক্যাটাগরিতে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ২২২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৯১, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
বি ক্যাটাগরিতে দাম কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ৯১ কোম্পানির মধ্যে ৩৩ কোম্পানির দাম বাড়লেও, কমেছে ৪০ কোম্পানির দাম। আর অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম বাড়ার তালিকায় আনুপাতিক হারে এগিয়ে আছে জেড ক্যাটাগরি। এই ক্যাটাগরির ৮৫ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ২২ কোম্পানির। দাম অপরিবর্তিত আছে ১৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ৩৬ মিচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানির দামই ছিল অপরিবর্তিত। ৯ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছেও ৯ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ব্লক মার্কেটে ১৭ কোম্পানির ১৮ লাখ ৫৯ হাজার শেয়ার ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকায় লেনদেন হয়েছে।
খাতভিত্তিক শেয়ারে সর্বোচ্চ সিরামিক খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অন্যান্য খাতের মধ্যে খাদ্যশিল্প, টেক্সটাইল, টেলিকমিউনিকেশন, কাগজশিল্প, ইন্স্যুরেন্স, মিচ্যুয়াল ফান্ড এবং করপোরেট বন্ডের দাম বেড়েছে।
উল্লেখযোগ্য বাকি খাতে চামড়াশিল্প, প্রযুক্তিখাত এবং পাটশিল্প কেন্দ্রিক কোম্পানির শেয়ারের দাম সবচেয়ে বেশি কমেছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দাম বাড়লেও ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানখাতে সার্বিক মূল্যমান নেমেছে নেতিবাচকের ঘরে।
ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ওমিক্স ইলেকট্রোড লিমিটেড। এক দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। সর্বশেষ ওমিক্সের প্রতিটি শেয়ার ২৮ টাকা দরে লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ দাম কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে এডিএন টেলিকম লিমিটেড। এক দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০৮ দশমিক ১০ টাকা উঠলেও লেনদেশ শেষ হয়েছে ৯৭ দশমিক ৮০ টাকায়।
মঙ্গলবার লেনদেনে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ পেয়েছে ১০ কোম্পানি থেকে। এদের মধ্যে পুঁজিবাজারে মূলধন জোগানদাতা প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বিনিয়োগকারীদের শেয়ারপ্রতি ২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
আইসিবি ২০১৫ সালে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারপ্রতি সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা ক্রমাগত কমতে কমতে ২০২৩ সালে ২ দশমিক ৫০ শতাংশে এসে ঠেকেছে। ২০২৪ সালে এসে এই লভ্যাংশ আরো দশমিক ৫০ শতাংশ কমেছে।
দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় থাকা স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস শেয়ারপ্রতি ১১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। গত এক দশকে প্রতিষ্ঠানটি এবারই সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দিলো বিনিয়োগকারীদের।
স্কয়ার গ্রুপের আরেক কোম্পানি স্কয়ার টেক্সটাইল পিএলসি বিনিয়োগকারীদের ৩২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৩০ শতাংশ। কোম্পানিটি এক দশকে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল ২০২২ সালে।
গত দশ বছরে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দিয়েছে কোহিনূর কেমিক্যালস কোম্পানি। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ৫০ শতাংশ লভ্যাংশ বণ্টন করেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৪০ শতাংশ। এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম উঠেছিল সর্বোচ্চ ৮৩০ টাকা এবং দাম কমে সর্বনিম্ন ৪৫৯ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছিল। লভ্যাংশের ঘোষণা দিলেও মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৫৩৪ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে।
লোকসান হওয়ার পরেও বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বোর্ড সভায় কোম্পানিটি ২০২৪ সালে বিনিয়োগাকারীদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
ডিএসসিকে দেয়া হিসাবে গত বছর সিঙ্গারের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৯১ পয়সা, যেখানে আগের বছর শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা ২৪ পয়সা আয় হয়েছিল।
লোকসানের কারণ উল্লেখ করে সিঙ্গার জানিয়েছে, ব্যাংকঋণের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় বেড়েছে কোম্পানির অর্থায়নের। ২০২৩ সালে অর্থায়ন ব্যয় (ফাইন্যান্সিয়াল কস্ট) ৬০ কোটি ৪০ লাখ থাকলেও ২০২৪ সালে বেড়ে হয়েছে ১৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
এদিকে সূচক বেড়েছে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। এক দিনের লেনদেনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২১ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১৮৬ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭০ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে সূচক বাড়লেও গতদিনের তুলনায় কমেছে লেনদেন। সারাদিন সিএসইতে ১০ কোটি ২৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে, যা পূর্বের কর্মদিবসের তুলনায় ২১ কোটি টাকা কম।
সূত্র : ইউএনবি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা