আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা উঠছে আজ
- শফিকুল আলম ভুইয়া, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
- ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০১
আজ পর্দা উঠতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৫ চতুর্থবারের মতো রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিভিশন সেন্টারে (বিবিসি এফইসি) বাণিজ্য মেলার স্থায়ী ভবনে আয়োজন করা হচ্ছে।
এবারের মেলার মূল আকর্ষণ হলো প্রবেশ গেটে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে মেলার প্রধান প্রবেশদ্বার ৩৬ জুলাইয়ের স্মৃতির আদলে তৈরি করা হয়েছে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে ইপিবির সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, ‘১ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসর বসবে।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল ১০টার দিকে মেলা প্রাঙ্গণে সশরীরে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করবেন বলে সম্মতি দিয়েছেন। প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় নতুন কিছু সংযোজন করা হয়। সে হিসেবে এবারের মেলার মূল আকর্ষণ হচ্ছে জুলাই-আগস্টে গণ-আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যে আত্মত্যাগ সেটাকে সামনে রেখে মেলা সাজানো হয়েছে। শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে মেলা প্রাঙ্গণে শহীদ আবু সাঈদ কর্নার ও মীর মুগ্ধ কর্নার নামে দু’টি কর্নার রাখা হয়েছে।
এছাড়া যুবকদের জন্য একটি যুবক (ইয়ুথ) প্যাভিলিয়ন থাকবে। দর্শনার্থীদের বসার জন্য থাকবে তিনটি সিটিং জোন। ব্যাংকিং লেনদেনের জন্য থাকছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোনালি ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের একাধিক বুথ। এছাড়াও বিশাল পরিসরে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার মূল ক্যাম্পাসের ভিতরে নিজস্ব একটি ক্যাফেটরিয়া রয়েছে। একসাথে ৫০০ মানুষ খাবার খেতে পারবে এখানে।
মেলায় দেশী-বিদেশীসহ ছোট-বড় মিলিয়ে প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা রয়েছে মোট ৩৬২টি। মেলায় ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
বিদেশী ব্যবসায়ীরা ১৫টি স্টলে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। প্যাভিলিয়ন ও স্টলের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শিল্পীর তুলিতে রঙ-বেরঙের দৃশ্য আকা হচ্ছে। সাজানো হচ্ছে জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন স্মৃতি দিয়ে।
তবে এবারের বাণিজ্য মেলার আরেকটা বাধা হতে পারে এশিয়ান বাইপাস সড়কের গাজীপুর থেকে সোনারগাঁওয়ের মস্তল পর্যন্ত অসমাপ্ত নির্মাণ কাজ। এ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিনিয়ত যানজটের আশঙ্কা করছেন মেলা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা।
বাণিজ্য মেলার গেট ইজারাদার এস এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর মেলায় প্রবেশ করতে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কিনতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এর মাধ্যমে দর্শনার্থীরা ঝামেলা ও ভিড় এড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন।’
ট্রাফিক ইনচার্জ রাজিব বাহাদুর বলেন, ‘যানজট এড়ানোর জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য সুব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণে গাড়ির বেশি চাপ থাকলে টোল ফ্রি থাকবে এমন পরিকল্পনাও রয়েছে।’
গত বছরের মতো এ বছরও মেলায় প্রবেশ মূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা আর অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। থাকছে একটি ডিজিটাল শিশুপার্ক। মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য এবারও থাকছে স্পেশাল বিআরটিসির দ্বিতল ও ডাবল ডেকার বাস সার্ভিস। কুড়িল-বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচল মেলা প্রাঙ্গণে ভাড়া থাকছে ৩৫ টাকা ও ভুলতা-গাউছিয়া থেকে ২০ টাকা। এছাড়া নদী পথে ট্রলারযোগে মেলায় আসারও ব্যবস্থা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সাত শতাধিক পুলিশ।’
সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক টহলে থাকবেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। মেলায় যেন কোনো প্রকার সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেজন্য মেলা প্রাঙ্গণে ২৩৪টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার পাশাপাশি থাকছে পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়া সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বিশেষ পুলিশ ক্যাম্পও থাকছে।