০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

বিদ্যুৎ খাতে সংস্কার হলে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে পারে পিডিবি

- ছবি : ইউএনবি

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের বছরে ১২০ কোটি ডলার বা ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইএফএ)।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আইইএফএ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে পিডিবির এই ক্ষতিপূরণ করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্প-কারখানার ব্যবহৃত অর্ধেক ক্যাপটিভ জেনারেটরের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে স্থানান্তর, ৩ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংযোজন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় লোডশেডিং ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন লস ৮ শতাংশে সীমাবদ্ধ করার মাধ্যমে এই সাশ্রয় অর্জন সম্ভব।

২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত পিডিবির মোট বার্ষিক ব্যয় ২.৬ গুণ বেড়েছে, যেখানে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১.৮ গুণ। ফলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা (১০.৬৪ বিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এরপরও পিডিবির ২৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা (১.৯৯ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে।

শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই পিডিবিকে ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা (৩.২২ বিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি দিয়েছে সরকার।

ভর্তুকির বোঝা কমাতে শিল্প-কারখানাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে জাতীয় গ্রিডের ওপর নির্ভরশীল করার পরামর্শ দিয়েছে আইইএফএ।

আইইএফএ বাংলাদেশের জ্বালানি-বিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, ‘৬১.৩ শতাংশ রিজার্ভ মার্জিন নিয়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতার (ওভার ক্যাপাসিটি) মতো সমস্যা রয়েছে যা পিডিবির ভর্তুকির বোঝা বাড়াচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের দাম বারবার সমন্বয় করার পরও বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি এবং ভর্তুকির বোঝা ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে জ্বালানি সাশ্রয় বিবেচনা করে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাসের পদ্ধতি উন্নত করা, জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ সীমিত করা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি, শিল্প-কারখানাগুলোকে গ্রিড বিদ্যুতের দিকে স্থানান্তর, লোডশেডিং হ্রাস ও বিদ্যুৎ গ্রিড আধুনিকায়নের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

পাশাপাশি বয়লারের মতো গ্যাসচালিত যন্ত্রপাতি ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক সিস্টেমে স্থানান্তরেরও প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। এর ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে পিডিবির আয় বাড়বে বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম।

সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিবেদনে ২০২৫ সাল থেকে জ্বালানি সাশ্রয় এবং চাহিদা স্থানান্তরের বিষয়গুলি বিবেচনা করে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাস তৈরির জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement