০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

জুনের মধ্যে ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল প্রত্যাশা করছে সরকার : অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন - ফাইল ছবি

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকার আগামী জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল পাওয়ার আশা করছে।

তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটনে উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে আলোচনার পর আমরা আগামী জুনের মধ্যে তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার পাওয়ার আশা করছি ‘

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে আইএমএফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জয়েন্দু দে’র নেতৃত্বে আইএমএফের একটি মিশনের সাথে সাক্ষাৎ শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন একথা বলেন।

তিনি বলেন, ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তির চতুর্থ কিস্তি ছাড়ার শর্ত পূরণের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে আইএমএফের তৃতীয় পর্যালোচনা মিশন আজ ঢাকায় পৌঁছেছে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও ওপেক তহবিলের সাথে আলোচনা হয়েছে এবং সরকার আগামী জুনের মধ্যে কিছু প্রতিশ্রুতি আশা করছে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা অদূর ভবিষ্যতে এডিবি ও ওপেক তহবিল থেকেও অর্থায়ন আশা করছি। প্রতিশ্রুতি আসবে, কিন্তু এক বছরেও সহায়তা সরবরাহ আসবে না।’

উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আইএমএফ মিশন তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে আরো আলোচনার জন্য আগামী বছরের মার্চ মাসে আবারো আসতে পারে।

চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার ১১১ কোটি ডলার ছাড় করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আইএমএফ মিশনের এই সফরে প্রাথমিকভাবে রাজস্ব খাত, রাজস্ব ঘাটতি, প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত যে কৌশলগুলো নিয়েছি এবং আগামীর জন্য যে পরিকল্পনাগুলো করেছি তাও তারা মূল্যায়ন করবে। ব্যাংকিং সংস্কার, খেলাপি ঋণ, আমানতকারীদের চাপসহ অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আলোচনা করবে আইএমএফ মিশন।’

ড. সালেহউদ্দিন জোর দিয়ে বলেন, পুরোপুরি না হলেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উন্নতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখনই সময় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং বিদেশী দাতাদের অবদান রাখতে উৎসাহিত করার।’

তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। কিছু ব্যাংকের তারল্য সহায়তার প্রয়োজন হলেও বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং অন্যান্য ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ড. সালেহউদ্দিন উল্লেখ করেন, বিধিনিষেধের কারণে অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স ও রফতানি প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী থাকলেও আমদানি কম, বিশেষ করে উৎপাদনকারী উপকরণ।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছি।’

আইএমএফ মিশন বাংলাদেশে আরো কয়েকদিন অবস্থান করবে বলে জানান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি যে আমরা যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব তা দীর্ঘমেয়াদে দেশকে উপকৃত করবে।’ ভবিষ্যতের প্রশাসনের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে- এমন সিদ্ধান্ত নেয়াকে এড়িয়ে যায় সরকার।

তিনি বলেন, ‘সমস্ত পদক্ষেপ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা হয় এবং ভালোভাবে মূল্যায়ন করা হয়। আইএমএফ মিশনও আশ্বস্ত।‘

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আইএমএফ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনার পর বাড়তি অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন চলমান ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করছি, পরে অতিরিক্ত তহবিল চাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করব।’

উপদেষ্টা আরো বলেন, ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতের সংস্কারের মতো সরকারের সংস্কার উদ্যোগের জন্য বৈদেশিক অর্থায়নের পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতি এবং চলতি হিসাবের ভারসাম্য মোকাবেলার ব্যবস্থা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেছি।’

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement