২০ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহারে সঙ্কটাপন্ন ব্যাংকগুলোর ক্ষতি ১৬৬৩.৩৮ কোটি টাকা

ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহারে সঙ্কটাপন্ন ব্যাংকগুলোর ক্ষতি ১৬৬৩.৩৮ কোটি টাকা - ছবি : সংগৃহীত

একসময় লাভজনক খাত হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে খেলাপি ঋণ ও বড় ধরনের লোকসানে জর্জরিত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত। সর্বশেষ ত্রৈমাসিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ৯টি ব্যাংক সম্মিলিতভাবে ১ হাজার ৬৬৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা লোকসান করেছে।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে লাগামহীন দুর্নীতি, নিয়ন্ত্রণ কাঠামোর অপব্যবহার এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে অসাধু ও অদক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগের ফলে ব্যাংকিং খাতে বর্তমান অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহারের আগে এই ব্যাংকগুলো লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল। গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের জমানো বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট করা হয়েছে, যার ফলে বর্তমান সঙ্কট দেখা দিয়েছে।’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই লুটপাটের ফলে ব্যাংকগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’

বিভিন্ন ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৭ সালের পর এস আলম গ্রুপের সাথে সংশ্লিষ্ট শুধু কাগজে-কলমে থাকা কোম্পানি এবং গ্রুপটির সহযোগীদের ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ ইস্যু করা হয়।

আত্মসাৎ করা এই অর্থ সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে অনেক ব্যাংক বর্তমানে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। এরই ধারাবিকতায় জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে ব্যাংকগুলো।

প্রতিবেদনে ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ইউনিয়ন ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের মোট ১ হাজার ৬৬৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া এবি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংকসহ ১০টি ব্যাংকের মুনাফাও আগের বছরের এই সময়ের তুলনায় কমেছে।

জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি লোকসান দিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক, যা আগের বছরের এই সময়ের চেয়ে ২০১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ৪০ শতাংশ বেশি।

এই প্রান্তিকে কর-পরবর্তী ৫৬৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা লোকসানের কথা জানিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। অথচ গত বছর এই সময়ে তাদের মুনাফা ছিল ৫৩৩ দশমিক ৯ কোটি টাকা মুনাফা।

ব্যাংক এশিয়ার লোকসান হয়েছে ১০৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছর মুনাফা ছিল ২৭৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

একইভাবে ইসলামী ব্যাংক ৮৯ কোটি ২০ লাখ টাকা লোকসান করেছে, যেখানে গত বছর এই সময়ে তাদের মুনাফা ছিল ৯৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফলে মুনাফায় ১৯৪ শতাংশ পতন হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

২০২৩ সালের এই সময়ে ৫২ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুনাফার বিপরীতে চলতি বছর ৮০ কোটি ১৮ লাখ টাকা লোকসান করেছে ইউনিয়ন ব্যাংক।

এছাড়াও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে অথবা লোকসান বেড়েছে।
সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement
ইরানের পারমাণবিক গবেষণাকেন্দ্রে ইসরাইলি হামলার দাবি অস্বীকার রাফায়েল গ্রোসির ট্রাইব্যুনাল চাইলে বিচারকার্য অডিও ভিজ্যুয়াল প্রচার করতে পারবে : আসিফ নজরুল বাউবি ১ লাখ বেকার যুবকের দক্ষতাবৃদ্ধিতে কাজ করবে চৌগাছায় আ’লীগ নেতার কবল থেকে ৪ একর সরকারি জমি উদ্ধার গাজীপুরে সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র কিরণের ফাঁসির দাবিতে মিছিল ‘আপনি বাইরে যুদ্ধ শেষ করবেন, আমরা কারাগার থেকেই আবার শুরু করব’ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সুমাইয়ার লাশ ৪ মাস পর উত্তোলন কলেজছাত্র লিশাদ হত্যার রহস্য উন্মোচন, নেপথ্যে পরকীয়া স্বৈরতন্ত্র ফেরানোর অপকৌশল তোশাখানার নতুন মামলায় জামিন পেলেন ইমরান খান প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি

সকল