২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রেমাল সবচেয়ে বেশি আঘাত হানবে খুলনা ও বরিশালে!

রেমাল সবচেয়ে বেশি আঘাত হানবে খুলনা ও বরিশালে! - ছবি : সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রেমাল আজ রোববার আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পশ্চিমঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মেদিনীপুর জেলার ওপর সামান্য আঘাত হানলেও বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানার আশঙ্কা বেশি। কানাডাভিত্তিক আবহাওয়অবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ ঘূর্ণিঝড়টির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

পলাশ জানিয়েছেন, রেমালের অগ্রভাগ আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টার মধ্যে আঘাত হানবে। আর বিকেল ৩টা থেকে রাত ১২টার মধ্যে এবং ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পেছনের অর্ধেক অংশ রাত ১২টার পর থেকে সোমবার সকাল ৬টার মধ্যে উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

পলাশ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত করলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতা এবং ভাটার সময় আঘাত হানলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

তিনি জানান, বাতাসের গতিবেশ থাকবে ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশাল, খুলনা, চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, ময়মনসিং ও রংপুরে বৃষ্টিপাত হতে পারে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, ভোলা, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, মাগুরা, ফরিদপুর, মাদারিপুর, শরিয়তপুর, যশোর, ঝিনাইদহ জেলায়।

এদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ৭ নম্বরে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গভীর নিম্নচাপ ( অবশ্য এ রিপোর্ট পাঠকদের কাছে যখন পৌঁছবে তখন এটা ঘূর্ণিঝড় হয়ে যেতে পারে) কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ছিল ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী সাগর উত্তাল রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে অতি দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

মংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা জানান, মংলা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এ কারণে মংলা বন্দরে জারি করা হয়েছে নিজস্ব অ্যালার্ট-৩। এতে বন্দরে অবস্থানরত সব বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য ওঠানামার কাজসহ অপারেশনাল কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান গতকাল শনিবার রাতে বলেন, মংলা বন্দরের জেটিসহ পশুর চ্যানেলে নোঙর করা দেশী-বিদেশী ছয়টি বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধসহ ওই সব জাহাজকে নিরাপদ নোঙর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের অপারেশনাল সব কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ দিকে ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারির ফলে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না বলেন, এরই মধ্যে ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ওসি হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ৭ নম্বর বিপদ সঙ্কেত জারির পর পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের প্রতিটি স্টেশনসহ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement