২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ নিয়ে সর্বশেষ যা জানা যাচ্ছে

ভোলায় মেঘনা নদীর তী‌র, দানার প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন - সংগৃহীত

পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরো উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে এবং এটি আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত নাগাদ আঘাত হানতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, দানার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার এবং এটি ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে।

তবে এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে।

ওমর ফারুক বলেন, ‘টেরিটোরিয়াল ইফেক্টের কারণে’ বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বেশ ঝড়ো হাওয়া বইবে। একইসাথে বৃষ্টিও থাকবে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগও ওই দুই অঞ্চলে ‘মুষলধারে বৃষ্টিপাত’ হওয়ার আশঙ্কা জানিয়েছে।

দানার অবস্থান ও আঘাত হানার সময়
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরেরপ্ত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান সম্বন্ধে বলা হয়েছে, এটি সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯৫ ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

বলা হচ্ছে, সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভারতের আবহাওয়া অফিসও বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানে তারা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দানা উপকূল অতিক্রম করবে।

দানার গতিপথ হবে পুরী ও সাগরদ্বীপ বরাবর। এই পথ হয়ে দানা ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল দিয়ে যাবে। তার গতিবেগ সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার হতে পারে।

এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল অবস্থায় রয়েছে।

তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং সাগরের সকল মাছ ধরার নৌকাকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

দানা মোকাবিলায় প্রস্তুতি
দানা যেহেতু বরিশাল ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর ওপর প্রভাব ফেলবে, তাই সেখানে এটি মোকাবিলা করার জন্য জোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো: শওকত আলী বলেন, ‘ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনাতে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলার জন্য দুই নম্বর সতর্ক সংকেত।’

একইসাথে বরিশালের সব জেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত থাকার কথাও তিনি জানান।

জানা গেছে, বরিশালে ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। ভোলায় ৮৬৯টি, পিরোজপুরে ৫৬১টি, ঝালকাঠিতে ৮৮৫টি এবং পটুয়াখালীতে ৬৭৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে।

তবে মহাবিপদ সংকেত না দেয়া পর্যন্ত বরিশালের কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চায় না বলে জানান মো: শওকত আলী।

এর বাইরে, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় খুলনা জেলায় ৬০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দানার প্রভাবে বাংলাদেশে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে, জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, খুব বেশি হবে না, তবে কিছু প্রভাব পড়বে।

তিনি জানান, দানার প্রভাবে জোয়ারের পানি বেড়ে যেতে পারে।

এছাড়া, এই বিভাগ দু’টির প্রত্যেক জেলায় স্বেচ্ছাসেবক, নগদ অর্থ, চাল, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গো খাদ্য প্রস্তুত রয়েছে। একইসাথে মেডিক্যাল টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement