১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ভারতে বাংলাদেশের ‘ইলিশ কূটনীতি’র ধাক্কা

- প্রতীকী ছবি

পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয়রা এবার তাদের প্রিয় মাছ ইলিশের অভাবে পড়তে পারেন। কারণ সেখানে লাখ লাখ মানুষ অক্টোবরে সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা উদযাপন করতে যাচ্ছেন যেখানে রুপালি ইলিশের ঘাটতি হতে পারে। বিশ্বের বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী বাংলাদেশ, প্রতিবেশী ভারতে ইলিশ পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, রফতনির ওপর দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা জোরদার করেছে। বিগত বছরগুলিতে, সরকার দুর্গাপূজার সময় বছরে ৩ থেকে ৫ হাজার টন ইলিশ রফতনির অনুমতি দিত। বিবিসি বিষয়টিকে দেখছে ভারতের জন্যে বাংলাদেশের ‘মাছ কূটনীতি’র ধাক্কা হিসেবে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ইলিশ মাছ বাংলাদেশের ভোক্তাদের কাছে আরো সহজলভ্য করার জন্যে এর রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। উপদেষ্টা এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, এখনো অনেক মাছ বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে (নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও)। এবার আমরা ইলিশকে সীমান্ত পার হতে দেব না।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই অবস্থানটি ভারতের সাথে ক্ষমতাচ্যুত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিখ্যাত ‘ইলিশ কূটনীতি’ থেকে একটি স্পষ্ট প্রস্থান চিহ্নিত করে, যেখানে তিনি প্রায়শই উৎসবের মরসুমে মাছের চালান ভারতে পরিবহনের অনুমতি দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা একাধিকবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে ইলিশ পাঠিয়েছেন। দীর্ঘদিনের পানি বিরোধের সমাধানের আশায়, তিনি ২০১৭ সালে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে ৩০ কেজি ইলিশ উপহার দিয়েছিলেন।

ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ, কিন্তু এটি একটি বিলাসবহুল, শুধুমাত্র ধনী ও মধ্যবিত্তদের জন্য সাশ্রয়ী; গরীব এটা কিনতে পারে না। উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, ‘আগের সরকার দুর্গাপূজার সময় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিত। তারা এটাকে উপহার বলত। এইবার আমি মনে করি না আমাদের উপহার দেয়ার দরকার কারণ (যদি আমরা তা করি) ভারতে প্রচুর পরিমাণে রফতানি করার অনুমতি দেয়া হলে আমাদের লোকেরা মাছ খেতে পারবে না।’

কয়েক সপ্তাহের ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের পর ৫ আগস্ট নাটকীয়ভাবে হাসিনাকে অপসারণ করা হয় যা দেশব্যাপী মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। প্রাথমিকভাবে সংক্ষিপ্তভাবে ভারতে থাকার আশা করা হয়েছিল, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের আশ্রয়ের জন্য তার প্রচেষ্টা এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।

ভারতে তার অব্যাহত উপস্থিতি ঢাকার নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য দিল্লির প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে। ভারতের জন্য, বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার এবং মিত্র, সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যক, বিশেষ করে এর উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির জন্যে।

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ইলিশ সরবরাহের অনুমতি দিয়ে ভারতের প্রতি সদিচ্ছা প্রদর্শন করতে পারত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মিসেস আক্তার বলেন,‘অন্য সব উপায়ে আমাদের শুভেচ্ছা থাকবে। তারা আমাদের বন্ধু। কিন্তু আমাদের জনগণকে বঞ্চিত করে কিছু করা উচিত নয়। শুভেচ্ছার প্রশ্ন এর থেকে আলাদা।’

তবে বাংলাদেশী গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে রফতানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বে স্থানীয় বাজারে ইলিশের দাম বেড়েছে। একটি ১.৫ কেজি ইলিশ প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকায় (১৫ ডলার; ১১.৫০ পাউন্ড), ১.২ কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা এবং এক কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এসবের দাম দেড়শ থেকে ২০০ টাকা বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মৎস্যজীবীরা মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ধরতে পারেননি। হোসেন মিয়া নামে এক জেলে বলেন, গত তিন মাসে আমরা পাঁচবার সমুদ্রে যাওয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে ফিরে যেতে হয়েছে।
সীমান্তের দুই পাশের বাঙালিদের কাছে ইলিশ প্রায় পবিত্র মর্যাদা ধারণ করে এবং এর অভাব অনেককে হতাশ করবে।


আরো সংবাদ



premium cement
রাজধানীতে সাবেক কাউন্সিলরসহ তিনজন গ্রেফতার যৌথবাহিনীর অভিযানে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার গ্রেফতার ৭২ সিলেটে বিচারপতি মানিকের ১ মামলায় জামিন, ঢাকায় এনে ফের গ্রেফতার স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নতুন সচিব পান্না আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী শ্রমিক নিহত বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাবিতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) পালিত অব্যাহতিপ্রাপ্ত ভিসি মোজাম্মেল হককে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ইসলামী ব্যাংকের সাথে ফরেন করেসপনডেন্ট ব্যাংকগুলোর মতবিনিময় সহকর্মীদের তোপের মুখে শিল্পকলা ছাড়লেন জ্যোতি বগুড়ায় আমরা বিএনপি পরিবারের সহায়তা পেল ৩ শহীদ পরিবার

সকল