১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মোদির শপথের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি, শুক্রবার যাচ্ছেন শেখ হাসিনা

- ছবি : বিবিসি

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ভারতের নয়াদিল্লিতে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি।

কিন্তু, আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ভারতের পক্ষ থেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী বা নরেন্দ্র মোদির শপথের ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।

এ সফর নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল বিকেল ৪টায় নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন এবং নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া শেষে ৯ জুন দুপুরে দেশে ফিরবেন।’

ভারতে নতুন সরকার গঠনের জন্য যতগুলো আসন দরকার হয় ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির বিজেপি এবারের নির্বাচনে তার চেয়ে কম আসনে জয়লাভ করেছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত জোট সঙ্গীদের সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তারা।

সবকিছু ঠিক থাকলে জওহরলাল নেহরুর পর টানা তৃতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি।

কিন্তু, এই মুহূর্তে তিনি ভারতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের ফলাফলের পরই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।

তবে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুরোধে নতুন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন মোদি।

আর সংবিধান অনুযায়ী, নতুন প্রধানমন্ত্রীকে শপথ গ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ডেকে থাকেন দেশটির রাষ্ট্রপতি। অনুষ্ঠানটিও হয় রাষ্ট্রপতি ভবনে এবং রাষ্ট্রপতিই ঠিক করেন এটি কবে ও কখন হবে, কারা কারা এতে আমন্ত্রিত হবেন।

বিবিসি বাংলার দিল্লি সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষ বলছেন, এ কারণেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মোদির শপথ অনুষ্ঠানের জন্য দিল্লি সফরের খবরটাকে খুবই অদ্ভুত।

তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি ভবন এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি, তাই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানি না যে রাষ্ট্রপতি নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে কাউকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কি-না, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি কী? কিন্তু এই পুরো ব্যাপারটি জানা যাচ্ছে দেশের বাইরে থেকে, ঢাকা থেকে খবর এলো যে মোদির আমন্ত্রণ গিয়েছে এবং শপথগ্রহণ কবে হতে যাচ্ছে সেটাও জানা যাচ্ছে।’

ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এসেছে যে ৮ জুন নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ, কিন্তু ওই সবই বিভিন্ন সূত্রের খবর। রাষ্ট্রপতি ভবন বা সরকারি কোনো সূত্রে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্তও কোনো কিছুই আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

কিন্তু বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার খবরে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে জানানো হয় মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের কথা।

খবরটিতে বলা হচ্ছে, ‘বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টেলিফোনে আলাপকালে তার সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনা এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।’

শুভজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘এই বিষয়টিও ইন্টারেস্টিং যে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নয়, বরং নরেন্দ্র মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে এখানে। আর আমন্ত্রণটা গেছে মোদির কার্যালয় থেকে, রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে নয়।’

তবে, শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেরও রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।

শুভজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘২০১৪-তে যেমন প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি নিজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবারো তিনি একই কাজ করছেন।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘তবে ওই বার পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু এবার এখনো আমরা জানি না পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি-না, কারণ নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যিনিই হন না কেন, তার শপথ নিয়ে এখনো যে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানা যায়নি।’

ভারতের সরকার গঠনের জন্য ২৭২টি আসন দরকার হয়। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ২৪০টি আসন। তবে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ পেয়েছে ২৯৩টি আসন। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট পেয়েছে ২৩৪টি আসন।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement