ভারতের নির্বাচনের পর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবস্থা : নানক
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ মে ২০২৪, ১৯:১৭, আপডেট: ১৪ মে ২০২৪, ২১:১৪
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ভারতের ভিসা প্রাপ্তি সহজ করা, ভোগান্তি ও চাপ কমাতে দুই বছর মেয়াদি ভিসা চালুর বিষয়ে দেশটির নির্বাচনের পরে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার ভারতের হাইকমিশনারের সাথে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের ভিসা পেতে মানুষের যে ভোগান্তি হচ্ছে সেজন্য ভিসা ব্যবস্থা আরো সহজ করার জন্য অনুরোধ করেছি। যাতে মানুষ অল্প সময়ের মধ্যে ভিসা পেতে পারে।
মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের মান্যবর হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা নিয়ে ভারত কী বলেছে এমন প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, আমরা যেসব সমস্যার কথা বলেছি সে বিষয়ে তিনি একমত হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সহজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে তাদের চাপ বেশি হয়। কখনো কখনো অতিরিক্ত চাপ হয়ে যায়। সেটা সামাল দেয়ার জন্য যেটা প্রয়োজন সেটা করতে হবে।
বস্ত্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমি গত বছর রাজনৈতিক সফরে ভারতে গিয়েছিলাম সে সময় ভারতের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনাকালে এ বিষয়টি বলেছি।
ভিসার চাপ কমাতে ভারত অন-অ্যারাইভাল ভিসার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, এ বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। তাদের বলেছি সৌদি আরবও ভিসা অনেক সহজ করেছে। কাজেই আপনাদের আগের জায়গায় থাকলে চলবে না। আপনারা বলছেন ওভারলোড হচ্ছে। সেটা কমাতে আমাদের যে ভিসা দিচ্ছেন সেটা দুই বছর মেয়াদি দিলে লোড কম হতো। লোড কমাতে ভিসার মেয়াদ দীর্ঘ মেয়াদি করতে হবে। এ বিষয়ে হাইকমিশনার একমত হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা চেষ্টা করছি। নির্বাচনের পরে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাটের অ্যান্টি ডাম্পিং নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পাটমন্ত্রী বলেন, ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। নির্বাচনের পরে দুই সরকারের মধ্যে আলোচনা হবে। আমরা আশা করছি, কোনো ফলপ্রসূ সমাধান আসবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের পাটকলগুলোতে আরো বেশি বিনিয়োগ করার জন্য বলেছি। ইতোমধ্যে ভারতের তিনটি কোম্পানি আমাদের তিনটি জুটমিলে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং কারো কারো সাথে আমাদের চুক্তিও হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ পাট বীজ ভারত থেকে আমদানি করি। এজন্য আমরা বলেছি আমাদের মানসম্পন্ন পাট বীজ দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাটবীজ দিতে হবে। কোনোক্রমেই যেন বিলম্বিত না হয়। সে বিষয়ে নজর রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছি। এবিষয়ে তাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চেয়েছি৷
তিনি বলেন, আমাদের থেকে ভারত সিল্কে অনেক বেশি এগিয়ে গেছে। সিল্ক উৎপাদনে ভারত পৃথিবীর শীর্ষে রয়েছে। এজন্য দেশে মানসম্মত সিল্ক উৎপাদনে আমাদের কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছি। টেক্সটাইল খাতে দুই দেশ এক সাথে কাজ করছি এটিকে আরো জোরদার করতে একমত হয়েছেন।
নানক বলেন, আমাদের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে আরো বেশি বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করেছি। কারণ আমাদের অনেকগুলো জুটমিল বন্ধ হয়ে আছে। সেগুলোকে আবার ফিরিয়ে আনতে চাই। এ বিষয়ে সোহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা করেছি।
পাটের বীজ উৎপাদন বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, পাট অধিদফতরের মাধ্যমে সারা দেশে একটি প্রজেক্ট চালু রয়েছে পাট বীজ উৎপাদনে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য। যাতে কৃষক পাটবীজ আরো বেশি করে উৎপাদন করে। এর মাধ্যমে আমরা পাটবীজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনতে পারব।
রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে নানক বলেন, ভারতে নির্বাচন চলছে, আমরাও নির্বাচন করেছি৷ এই মুহূর্তে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছেন এক্ষেত্রে রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে নানক বলেন, নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড লুর সফর নিয়ে অনেকেই আনন্দে ছিলেন। ডোনাল্ড লু এসেছিলেন যেন তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়ার জন্য। ভৌগলিক কারণে বাংলাদেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য বাংলাদেশ সরকার, জনগণের সরকার ও শেখ হাসিনা সরকারের সাথে সার্বিকভাবে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং দৃঢ় করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র : ইউএনবি