ওমরাহ খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে
- খালিদ সাইফুল্লাহ
- ০৯ নভেম্বর ২০২০, ০৬:৪৯
করোনার মধ্যেই সৌদি সরকার বিদেশীদের জন্য ওমরাহ পালনের সুযোগ দিয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে এখনো ওমরায় যাওয়া শুরু হয়নি। খরচ দ্বিগুণ ও বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়ায় ওমরায় যাওয়ার আগ্রহ কমে গেছে বলে এজেন্সি মালিকরা জানিয়েছেন।
মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে সীমিত আকারে ওমরাহ হজ পালনের অনুমতি দিয়েছে সৌদি সরকার। গত ৪ অক্টোবর শুধু সৌদি নাগরিকরা ওমরাহ করার সুযোগ পান। এরপর গত ১ নভেম্বর থেকে বিদেশীদের জন্য ওমরাহ পালনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশের যাত্রীরা ইতোমধ্যেই ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গেলেও বাংলাদেশ থেকে এখনো ওমরাহর কার্যক্রম শুরু হয়নি। ধর্ম মন্ত্রণালয় ওমরাহ কার্যক্রম শুরু করতে বৈধ এজেন্সির তালিকা করার জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যে আগ্রহী এজেন্সিগুলোকে আবেদন করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের তালিকা প্রকাশের পর এজেন্সিগুলো ওমরাহ কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এজেন্সি মালিকরা।
এজেন্সি মালিক মাহবুব হোসেন জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ওমরায় খরচ দ্বিগুণ হবে। গত তিন-চার বছর বাংলাদেশ থেকে ওমরাহর জন্য সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা খরচ হতো। এবার সেখানে সর্বনি¤œ দুই লাখ টাকা লাগবে। এয়ারলাইন্সের ভাড়া বৃদ্ধি, ভিসা প্রসেসিং, সৌদি আরবে আবাসিক খরচ, সামাজিক দূরত্ব মানা, বাসে যাত্রী কম থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এ খরচ বাড়বে। এ কারণে এবার ওমরায় যাওয়ার আগ্রহ কম দেখা যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এজেন্সির মালিকরা আরো জানান, করোনার এই বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এবার ওমরাহ পালনে বিভিন্ন নিয়মকানুন পালন করতে হবে। বিগত সময়ে বাংলাদেশ থেকে যেসব মুসল্লি ওমরাহ করতে যান তারা সৌদি আরবে পৌঁছেই ওমরাহ পালন করেন। তা ছাড়া যত দিন মক্কায় অবস্থান করেন তত দিনই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কাবা শরিফে গিয়ে পড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু শর্তের কারণে এবার তা করতে পারবেন না।
সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে সব বয়সের মানুষ এখন ওমরাহ পালন করতে যেতে পারবেন না। এবার শুধু ২৫ থেকে ৫০ বছর বয়সীরাই ওমরাহ পালনে যেতে পারবেন। সৌদি আরবে গিয়েই তাদেরকে তিন দিন অর্র্থাৎ ৭২ ঘণ্টা কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। নির্দিষ্ট অ্যাপসের মাধ্যমে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে ওমরাহ পালনে অনুমতি প্রদান করা হবে। হোটেলের একটি কক্ষে দু’জনের বেশি যাত্রী রাখা যাবে না। ওমরাহ প্যাকেজের আওতায় খাবারের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
বাংলাদেশ হজযাত্রী ও হাজী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আলহাজ অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নাসের বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ওমরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার যাত্রী ওমরাহ যাওয়ার জন্য ভিসা করেছিলেন। তাদের অনেকে এখন আর ওমরায় যেতে চান না। তারা এখন টাকা ফেরত চান। কিন্তু টাকা সৌদি আরবে আইবিএএন অ্যাকাউন্টে আটকে রয়েছে। আমাদের এজেন্সি মালিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত দেয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ওমরাহ পালনে এবার খরচের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বাড়বে। ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গিয়ে প্রত্যেক দেশের মুসল্লিদের তিন দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। সেখানে প্রত্যেক মুসল্লি শুধু একবার তিন ঘণ্টার জন্য কাবা (হেরেম) শরীফে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। তিনি আরো বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অংশ হিসেবে সৌদি সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ জন্য এক সাথে অনেকে থাকতে পারবে না, খাওয়া, বাসে যাত্রীসংখ্যা নির্দিষ্ট থাকাসহ বিভিন্ন কারণে খরচ বাড়বে। এজেন্সিগুলো ওমরাহ যাত্রী পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ যাত্রী যাওয়া শুরু হবে, তবে কবে থেকে শুরু হবে এখনই বলা যাচ্ছে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা