ভাষার বৈচিত্র্য সংরক্ষণের আহ্বান রাষ্ট্রদূত মুশফিকের

ভাষার বৈচিত্র্য সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মেক্সিকোর ন‍্যাপেন্তলা শহরে শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন ও দেশটিতে নির্মিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধায় মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস, মেক্সিকো। এতে বাংলাদেশী প্রবাসীদের পাশাপাশি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত ন‍্যাপেন্তলা শহরে পৌঁছলে ন‍্যাপেন্তলা পৌরমেয়র আলবারো রোজারিও এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হুগোলয়েজা তাকে স্বাগত জানান।

এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে ওই দিন সকালে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আইবারো আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিদেশী কূটনীতিক, বাংলাদেশী প্রবাসী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।

রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি জাতির পরিচয়, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি।’

তিনি ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে মাতৃভাষার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছে। ভাষা আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং স্বাধীনতার ভিত্তি।’

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভাষার দ্রুত বিলুপ্তির হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘ভাষার মৃত্যু মানে ইতিহাসের মৃত্যু।’ এ সময় তিনি ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার দৃঢ় আহ্বান জানান।

আইবারো আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. অ্যারিবেল কনটেরাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মেক্সিকোতে নিযুক্ত আইভরি কোস্টের রাষ্ট্রদূত লি ডিজেরো রবার্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রদূত বেরিল রোজ সিসুলু ও মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত জামাল শরিফ উদ্দিন জোহান নিজ নিজ দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন এবং বিশ্বব্যাপী ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

সাবেক মেক্সিকান সিনেটর ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সাচিত গালভেজ রুইজ, আইবারো আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জুয়ান ম্যানুয়েল গঞ্জালেজ ও মেক্সিকান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি ফ্রান্সিসকো মস্কেদা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত সিলিবেত ডায়াপারা, ভারতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত দীপ্তি গাঞ্জী, ফিলিস্তিনের কূটনীতিক ফাখরি তাহা, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সানটোস এরদান্দেজ, দক্ষিণ আফ্রিকার কূটনীতিক সায়মন মারোবে উপস্থিত ছিলেন।
সবার উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত মিলনমেলায় পরিণত হয় এ দিনের আয়োজন।