থাইল্যান্ডের ই-ভিসা জটিলতায় বাংলাদেশীরা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৪, আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৫
বাংলাদেশী নাগরিকরা যাতে ঝামেলামুক্তভাবে সহজে ভিসা পেতে পারেন, সেজন্য থাই দূতাবাস যে ই-ভিসা পদ্ধতি চালু করেছে, তাতে প্রতিদিনই ভিসা আবেদন আটকে যাচ্ছে হাজারো ভ্রমণপ্রত্যাশীর। তাদের অভিযোগ, অনলাইনে ভিসার আবেদন করার পর টাকা জমা দিতে পারছেন না অনেকই।
সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ডে বেড়েছে বাংলাদেশীদের ভ্রমণ। পর্যটনের পাশাপাশি চিকিৎসার জন্যও বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী এখন দেশটিতে যাচ্ছেন। এ কারণে বাংলাদেশীদের জন্য সম্প্রতি ই-ভিসা চালু করে থাই দূতাবাস। চালুর সময় বলা হয়েছিল, এখন থেকে মাত্র ১০ দিনেই থাইল্যান্ডের ভিসা পাবেন বাংলাদেশীরা। তবে এই ই-ভিসা নিয়েই জটিলতায় এখন থাইল্যান্ডে যাওয়াই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশীদের।
জানা গেছে, গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্টধারীদের ই-ভিসা কার্যক্রম শুরু করে থাইল্যান্ড। পরে গত ২ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের সাধারণ পাসপোর্টধারীদের জন্যও ই-ভিসা কার্যক্রম চালু করে থাই দূতাবাস। সে সময় দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘরে বসে মাত্র ছয় ধাপে অনলাইনেই আবেদন করে ১০ দিনের ভেতর থাইল্যান্ডের ভিসা পাবেন বাংলাদেশী নাগরিকরা। এ ছাড়া নতুন এ ব্যবস্থার মাধ্যমে আবেদনকারী ভিসা পেয়েছেন কি না, তা ইমেইলের মাধ্যমে জানা সম্ভব হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত জটিলতা তৈরি হয় ভিসার পেমেন্ট নিয়ে। থাই কর্তৃপক্ষ সহজে ভিসা পাওয়ার আশা দেখিয়ে অনলাইনে কার্যক্রম শুরু করলেও ই-ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ৪০০ অনলাইন ভিসা আবেদনের কোটা নির্ধারণ করে দেয়। পাশাপাশি পেমেন্টের জন্য গেটওয়ে হিসেবে শ্রীলঙ্কার কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসিকে নির্দিষ্ট করে দিয়ে সেখানে পেমেন্ট সম্পন্ন করার জন্য মাত্র তিন ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়। এতে থাই ভিসার জন্য অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করে আবেদন করা গেলেও তা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই পেমেন্ট অপশনে গিয়ে আটকে যেতে হচ্ছে।
জানা যায়, আগে বাংলাদেশিরা অনুমোদিত কেন্দ্রের মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা দিয়ে থাই স্টিকার ভিসা পেতেন। দিনে গড়ে তখন ৮শ’র মতো ভিসা ইস্যু করা হতো বাংলাদেশীদের জন্য। কিন্তু অনলাইনে দিনে কেবল ৪শ’ ভিসা আবেদন জমা দেয়ার সুযোগ রেখেছে থাই কর্তৃপক্ষ, যার বিপরীতে দিনে জমা পড়ছে ১৭-১৮ হাজার আবেদন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে ব্যাংকে অনলাইনে পেমেন্টের জন্য সকাল ৯টা থেকে তিন ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। ফলে আবেদনকারীরা কম্পিউটারের মাউসে আঙুল রেখে সকাল ৯টা থেকেই বসে থাকেন। কিন্তু তিন ঘণ্টা পর দেখা যায় তার ‘পেমেন্ট ফেইলড’।
এদিকে থাই ভিসা নিয়ে পর্যটকদের এমন ভোগান্তি সম্পর্কে অবগত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, থাইল্যান্ডের ভিসা প্রাপ্তিতে পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে, ফলে অনলাইনে দিনে আবেদনও অনেক জমা পড়ছে। আর বিপুল আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ যাবতীয় সমস্যা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে থাই দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। সমস্যা নিরসনে কাজ চলমান রয়েছে।
থাই দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, পর্যটকদের ভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছে তারা।