কুয়েতে বাংলাদেশ থেকে আরো জনবল নিয়োগের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩৮
রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন কুয়েত সরকারকে বাংলাদেশ থেকে আরো দক্ষ ও আধা-দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে ঢাকায় তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতের মনোনীত রাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আবদুল ওয়াহাব হামাদাহ তার পরিচয়পত্র পেশ করার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
কুয়েতে সাড়ে তিন লাখেরও অধিক বাংলাদেশী কর্মী কাজ করছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান সেবিকা (নার্স) এবং কারিগরি কর্মীসহ দক্ষ ও পেশাদার কর্মী নিয়োগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো: সারওয়ার আলম বাসসকে জানান, কুয়েতের ক্রমবর্ধমান দক্ষ জনশক্তির চাহিদা মেটাতে তিনি ২০২৩ সালে নার্স ও কারিগরি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারকের কথাও উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, জাহাজ নির্মাণ, জ্বালানি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ওষুধ শিল্পসহ অন্যান্য কিছু খাতে সুযোগ অন্বেষণের জন্য বাংলাদেশে কুয়েতের বিনিয়োগকারীদেরকে আরো বিনিয়োগেরও কথা বলেন।
জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে তিনি অপরিশোধিত তেল এবং পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্যের জন্য বাংলাদেশের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে চাহিদাগুলো পূরণে কুয়েতের সমর্থন চান।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন রোহিঙ্গা সঙ্কটের বিষয়ে কুয়েতের নীতিগত অবস্থান এবং ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশে মানবিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসঙ্ঘ ও ওআইসিসহ দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় ফোরামে কুয়েতের অব্যাহত সমর্থন চেয়েছেন।
জ্বালানি ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বাংলাদেশের অবিলম্বে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং সাশ্রয়ী মূল্যে এই চাহিদা পূরণে কুয়েতের সহায়তা প্রদানের জন্যও অনুরোধ করেন।
উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় কুয়েতের স্বাধীনতায় বাংলাদেশের ভূমিকাকে দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রমাণস্বরূপ।
রাষ্ট্রপতি কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োজিত বাংলাদেশী সশস্ত্র বাহিনী বাহিনীর সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন এবং এই অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণেরও ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
কুয়েতের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার উল্লেখ করে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরো জোরদার করার ইচ্ছা পোষণ করেন রাষ্ট্রপ্রধান।
কুয়েতের আমির শেখ মিশাল আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
কুয়েতে কর্মরত বাংলাদেশীদের কর্মঠ, পরিশ্রমী ও নিবেদিতপ্রাণ উল্লেখ করে নতুন রাষ্ট্রদূত কুয়েতে বাংলাদেশী জনশক্তির অবদানের প্রশংসা করেন।
কুয়েত রাষ্ট্রদূত ঢাকায় তার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মো: জসিম উদ্দিন, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী ও প্রেস সচিব মো: সারওয়ার আলম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রাষ্ট্রাচারের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর)-এর একটি চৌকস অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রদূতকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।
সূত্র : বাসস