ভারতীয় গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে ৫৩ নাগরিকের উদ্বেগ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:২৯
ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশবিরোধী প্রোপাগান্ডার (অপপ্রচার) নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫৩ বিশিষ্ট নাগরিক। পাশাপাশি ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে লেখক সালাহ উদ্দিন শুভ্র স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এবং ভারতের সহযোগিতায় দেশে যে স্বৈরশাসন ও লুটপাট চলে আসছিল, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার কবল থেকে দেশের মানুষ নিজেদের মুক্ত করেছে। স্বৈরশাসনকে পরাজিত করার পর এখন চেষ্টা করা হচ্ছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এবং জাতীয় পুনর্গঠনের পথে যাত্রা শুরু করার। এই সময় অবশ্যই ঐক্য ধরে রাখতে হবে এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ভারতীয় ‘গদি মিডিয়ার’ অপপ্রচার রুখে দিতে হবে।
এতে বলা হয়, ভারত সরকার যখন গণহত্যাকারী পতিত স্বৈরশাসককে নিজেদের আশ্রয়ে রেখেছে, তখন ভারতীয় ‘গদি মিডিয়া’ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ‘কল্পিত ক্র্যাকডাউনের’ গল্প প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করে চলেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। দেখা গেছে, এসব কথিত খবর হয় মিথ্যা, নয়তো বিভ্রান্তিমূলক।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে মিথ্যা তথ্য ও অপতথ্যের উৎপাদনে শীর্ষ একটি দেশ হচ্ছে ভারত এবং তাদের দানবীয় প্রোপাগান্ডা-যন্ত্র এখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ‘গদি মিডিয়ার’ এই আক্রমণের কারণে জাতি হিসেবে আমরা এখন ভারতের আধিপত্যের বাইরে এসে আমাদের স্বাধীন পথে যাত্রা শুরু করেছি আবার।
বৈচিত্র্যকে বাংলাদেশের মূল শক্তি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে দেশের সব জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম, সামাজিক ও রাজনৈতিক মতামতের মানুষ একত্র হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল। এতে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
বিবৃতিতে দেশবাসী ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ৫৪ নাগরিক বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে যে যেখানেই থাকুন না কেন, সবাই বাংলাদেশবিরোধী এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও সামাজিক-রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বাংলাদেশের শক্তি।
বিবৃতি প্রদানকারী ৫৩ নাগরিক হলেন— আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানসুর, গীতিকার ও অ্যাক্টিভিস্ট লতিফুল ইসলাম শিবলী, লেখক ও অধ্যাপক সুমন রহমান, অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও দ্য মিরর এশিয়া সম্পাদক ড. মারুফ মল্লিক, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ, কবি কাজল শাহনেওয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. হাসান আশরাফ, লেখক আহমাদ মোস্তফা কামাল, স্বাধীন নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক স্বাধীন সেন, ডয়চে ভেলে ও বন রেইস-সেইজ ইউনিভার্সিটির প্রভাষক ড. সাইমুম পারভেজ, গবেষক ও লেখক বাস্তুসংস্থান ও বৈচিত্র্য পাভেল পার্থ, সাংস্কৃতিক কর্মী বীথি ঘোষ, গবেষক মাহবুব সুমন, লেখক ও অনুবাদক ওমর তারেক চৌধুরী, শিল্পী ও লেখক দেবাশীষ চক্রবর্তী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ-আল মামুন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর রাজি, প্রকাশক মাহাবুব রাহমান, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট তুহিন খান, কবি ও সাংবাদিক মিছিল খন্দকার, সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন, কবি ও বুদ্ধিজীবী নাহিদ হাসান, লেখক গাজী তানজিয়া, কবি ও লেখক মৃদুল মাহবুব, কবি ও অধিকার কর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. হাবিব জাকারিয়া, সাংবাদিক শাহতাব সিদ্দিক অনিক, কবি ও সমালোচক ইমরুল হাসান, লেখক ও সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নি, লেখক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, উদ্যোক্তা মিশায়েল আজিজ, বাংলাদেশ ইয়ুথ এনভায়রনমেন্টাল ইনিশিয়েটিভের কো-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সৈয়দ মুনতাসির রিদওয়ান, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট পারভেজ আলম, লেখক ও সাংবাদিক আরিফ রহমান, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক মোহাম্মদ রোমেল, লেখক কামরুল আহসনা, লেখক ও অনুবাদক জিয়া হাশান, কবি আলতাফ শাহনেওয়াজ, অ্যাকাডেমিক ও গবেষক শরত চৌধুরী, কবি বায়েজিদ বোস্তামি, চলচ্চিত্র নির্মাতা পার্থিব রাশেদ, সাংবাদিক কাজী জেসিন, অভিনেতা, নির্মাতা এবং নাট্যকার দীপক কুমার গোস্বামী, শিক্ষক ও অনুবাদক জি এইচ হাবিব, লেখক ও গবেষক আবুল কালাম আল আজাদ, যমুনা টিভির রাজনৈতিক সম্পাদক আলমগীর স্বপন, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট সারোয়ার তুষার, সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট এহসান মাহমুদ।