জলবায়ু সম্মেলনে অনুদানভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের আহ্বান উপদেষ্টার
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৩
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২৯) চলমান নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোলস (এনসিকিউজি) আলোচনায় অভিযোজন, ক্ষয় ও ক্ষতিপূরণসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে অনুদানভিত্তিক অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
শুক্রবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এনসিকিউজি বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তৃতাকালে তিনি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও সমতাভিত্তিক জলবায়ু অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা জোর দিয়ে বলেন, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাস্তব পরিস্থিতি প্রতিফলিত করে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘উদ্দেশ্য নির্ধারণের প্রথম বিকল্পটি (অপশন-১) এখনো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) বাস্তবতা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় আনেনি এবং এটি এখনো দুর্বল। অভিযোজন খাতে অন্তত ৫০ শতাংশ বরাদ্দের একটি পরিমাণগত ভাগ নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি নেগোশিয়েশনে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল জি৭৭, এলডিসি এবং ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর (সিডস) সাথে একাত্ম হয়ে একটি শক্তিশালী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এনসিকিউজি কাঠামোর পক্ষে কথা বলেছে। তবে তিনি প্রস্তাবিত খসড়ার স্পষ্ট অনুদান উপাদানের অনুপস্থিতি এবং অনুদান অর্থায়নকে মোবিলাইজড ফাইন্যান্সএর সাথে সংযুক্ত করার বিষয়টি (যা অনুচ্ছেদ ২৩-এ উল্লেখ রয়েছে) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি দ্বিতীয় বিকল্পটি (অপশন-২) প্রত্যাখ্যান করেন, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর সকল অর্থায়ন, বিনিয়োগ এবং এমনকি অভ্যন্তরীণ সম্পদ অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। এছাড়া, অনুচ্ছেদ ৩২ এবং ৩৩-এ উল্লেখিত কিছু অর্থায়ন চ্যানেলের বিষয়েও তিনি উদ্বেগ জানান।
তিনি বলেন, এ ধরনের প্রস্তাব প্যারিস চুক্তির ন্যায্যতা, নীতিমালা, সমতা ও কমন বাট ডিফারেন্সিয়েটেফ রেস্পন্সিবিলিটি নীতির পরিপন্থী।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উল্লেখ করেন, এফডিসির আর্থিক বোঝা লাঘব করতে ঋণ মওকুফ অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, ‘অস্তিত্ব রক্ষার এই সঙ্কটে এলডিসির আর কোনো ঋণ বহন করার সামর্থ্য নেই।’ পাশাপাশি, তিনি ‘অস্বচ্ছ কার্বন বাজার’ বিষয়ক যেকোনো উল্লেখ অপসারণের আহ্বান জানান, কারণ এটি প্যারিস চুক্তির মূল চেতনাকে ক্ষুণ্ণ করে।
তিনি বলেন, কপ-২৯ আলোচনা সমাপ্তির দিকে এগোতে থাকায় বাংলাদেশ এবং এলডিসি গোষ্ঠী সর্বাত্মকভাবে অংশগ্রহণ করে নিশ্চিত করতে চায়। এনসিকিউজি- এর চূড়ান্ত কাঠামো ন্যায্যতা ও সমতা বজায় রাখবে এবং প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য ও উদ্দেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে।
এর আগে, পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সায়েদা রিজওয়ানা হাসান কপ-২৯ -এ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন। তিনি সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ও প্রত্যাশা ইইউ সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন।
সূত্র : বাসস