ফিরেছেন ৮৫ বাংলাদেশী, মিয়ানমারে যাচ্ছেন ১২৩ বিজিপি-সেনা সদস্য
- হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া (কক্সবাজার)
- ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৪, আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৩
মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি থাকা ৮৫ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন। একই জাহাজে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১২৩ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনা সদস্য ফেরত যাবেন।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএর ঘাটে নিয়ে আসা হয় ১২৩ মিয়ানমার বিজিপি-সেনা সদস্যদের। আর ফেরত আসা বাংলাদেশীদের পৌঁছানোর অপেক্ষা করা হচ্ছে। এদের নামিয়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে জাহাজ আবার রওয়ানা হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মুহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী জানান, মিয়ানমারের কারাগারে বন্দি থাকা ৮৫ বাংলাদেশী কারাভোগ শেষে বাংলাদেশে ফিরেছেন। একইসাথে ১২৩ জন মিয়ানমারের বিজিপি এবং সেনা সদস্য মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এরমধ্যে আটজন সেনা সদস্য এবং ১১৫ জন বিজিপি সদস্য রয়েছে বলে জেনেছি। দুই দেশের দূতাবাসের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে এবার ৮৫ বাংলাদেশী কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ঘাটে এসে পৌঁছেছেন। যাছাই-বাছাইয়ের যে প্রক্রিয়া, সেটি চলছে। তাদের বরণ করে নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে স্বজনরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। স্বজনরা বলছেন যে তারা কেউ কেউ পাঁচ, সাত এমনকি ১৩ বছর পর্যন্ত মিয়ানমারে কারাভোগ করে এবার দেশে ফিরেছেন।
তিনি বলেন, সাগরের মাছ ধরতে যাওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে অনেকেই মিয়ানমারের নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়ে কারাগারে বন্দি ছিলেন। এখন ৮৫ জন রোববার সকালে ফিরে এসেছেন। আরাকান আর্মির সাথে জান্তা বাহিনীর তুমুল সংঘাতের জেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য ও সেনাসদস্য মিলিয়ে ১২৩ জন ফিরবে একইদিন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: সালাহ উদ্দিন বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে সিতওয়ে বন্দর থেকে শনিবার ৮৫ জন বাংলাদেশীকে নিয়ে দেশের উদ্দেশে রওনা হয়। রোববার সকালে তারা কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাটে পৌঁছায়।
জেলা প্রশাসক জানান, আগের তিনবারের মতো এবারো একইভাবে দুই দেশের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন করা হচ্ছে। ৮৫ জন বাংলাদেশীকে নিয়ে আসা মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল রোববার দুপুরের মধ্যে ১২৩ জন বিজিপি ও সেনাসদস্য ফেরত নিয়ে যাবে। পুরো প্রক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব রাহাত বিন কুতুব উপস্থিত থাকবেন। এদিকে মিয়ানমারে নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএমএস চিন ডুইন এরই মধ্যে ৮৫ বাংলাদেশীকে নিয়ে কক্সবাজারে এসে পৌঁছায়। প্রত্যাগত ৮৫ জন বাংলাদেশীর মধ্যে ২৬ জন মিয়ানমারের মলামাইন কারাগার, ১৬ জন পাথেইন কারাগার, তিনজন চকমারউ কারাগার আর বাকিরা রাখাইনের বিভিন্ন কারাগারে ছিলেন। কক্সবাজার, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও ঢাকা জেলায় তাদের বাড়ি।
এর আগে, গত ৯ জুন ৪৫ বাংলাদেশী কারাভোগ শেষে দেশে ফিরে। সেদিন মিয়ানমারে ফেরত যায় ১৩৪ বিজিপি ও সেনা সদস্য। তার আগে ২৫ এপ্রিল মিয়ানমার থেকে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছিল ১৭৩ জন বাংলাদেশী। একইসাথে ওইদিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ২৮৮ জন বিজিপি ও সেনাসদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৩৩০ জন বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রথম শুরু হয় এ বছরের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা