সাগরকন্যার রূপ
- মো: রুকন উদ্দিন
- ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
সুন্দর এই পৃথিবী, চমৎকার যত সব আয়োজন! পৃথিবীর নানান জায়গায় নানান সৌন্দর্য ফোটে উঠেছে। যেমন- নায়াগ্রা জলপ্রপাত, আমাজন বন, সুন্দরবন, মাউন্ট এভারেস্ট আরো কত কী! পৃথিবীর এই চমৎকার আয়োজনে ছোট্ট অথচ সবার মন আকৃষ্ট করে আছে আমাদের মাতৃভূমি সুজলা সুফলা সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ। আপনি বাংলাদেশ নিয়ে পৃথিবীর যেকোনো জায়গার মানুষকে জিজ্ঞেস করবেন তারা বলবে বাংলাদেশ তো খুবই সুন্দর দেশ। সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে দারুণ একটি জায়গা বাংলাদেশের পটুয়াখালীতে অবস্থিত কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত। যাকে সাগরকন্যা বলা হয়।
আজকের এই লেখায় কুয়াকাটার কিছু দর্শনীয় স্থান নিয়ে লিখব। সমুদ্রসৈকত নিয়ে লিখতে গেলে সবার আগে আসবে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত। তবে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের অন্যতম সৌন্দর্য হলো সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখা। চমৎকার এই মুহূর্তটি কেউ মিস করবে বলে মনে হয় না। সূর্য উদয় মনে হবে আপনার সামনে আল্লাহ তায়ালার চমৎকার সৃষ্টির নিদর্শন আসমানের শেষ সীমানা থেকে সমুদ্রের পানি ভেদ করে একটি গোল আকৃতির লাল আভা বের হয়ে আসছে। সূর্যাস্তও আপনাকে আশ্চর্যান্বিত করবে। সারা দিনের কর্মব্যস্থতা পেছনে ফেলে মনে হবে সূর্য এখন একটু বিশ্রামে যাচ্ছে রক্তবর্ণ ধারণ করে আস্তে আস্তে পানিতে ডুবে যাচ্ছে। এক কথায় অসাধারণ একটি দৃশ্য।
সমুদ্রসৈকত : কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ও তিন কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। জোয়ার-ভাটার সময় দারুণ উপভোগ্য মনে হবে। মন চায়বে জোয়ার-ভাটায় আপনার ক্লান্ত দেহটা এলিয়ে দিতে। সারা বছরের কর্মব্যস্ত শরীর নিয়ে সমুদ্রসৈকতে গেলে আপনি দারুণ উপভোগ করবেন। সমুদ্রের মাঝে ছোট ছোট নৌকাগুলো ভাসছে, দেখতে যে কত চমৎকার লাগে পাঠক না দেখলে বুঝতে পারবেন না। কত বিচিত্র ধরনের পাখি সেখানে আসে। পুরো বিচটিই তারা দখল করে রাখে।
কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান : আপনি যদি প্রকৃতিপ্রেমী আর পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় হয়ে থাকেন তবে কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান ঘুরে দেখতে পারেন। এটি কলাপাড়া উপজেলার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই উদ্যানটি ১৬১৩ হেক্টর এলাকাজুড়ে অবস্থিত। তবে বিচ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এই উদ্যানে আপনি ঢুকতে পারবেন। অসাধারণ একটি উদ্যান। নানান জাতের গাছগাছালির ছড়াছড়ি সেখানে।
কুয়াকাটার ম্যানগ্রোভ বন : মূল বিচ থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে আপনার চোখে পড়বে ম্যানগ্রোভ বন। সেখানে শত বছর আগের গাছও আপনি দেখতে পাবেন। অত্যন্ত চমৎকার একটি বন। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে হাজারো গাছগাছালি।
গঙ্গামতী লেক : এটি ম্যানগ্রোভ বন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। গঙ্গামতী লেক আসলে মূল কোনো লেক নয়। এটি সমুদ্র থেকে সৃষ্টি হয়ে একটি লেকের আকার ধারণ করেছে। এই লেকের বৈশিষ্ট্য হলো- সরো নদীর মতো দেখতে চমৎকার। দুকূলজুড়ে ঘন বন। অসাধারণ দেখার মতো একটি জায়গা। প্রকৃতিপ্রেমীরা কোনো দিন এই জায়গা দেখতে কার্পণ্য করবে না।
এই সমুদ্রসৈকতের অন্যতম সৌন্দর্য হলো লাল কাঁকড়া দ্বীপ। যাকে আবার ক্রাব আইল্যান্ড, কাঁকড়ার দ্বীপও বলা হয়। চমৎকার একটি দ্বীপ। সমুদ্র থেকে গঙ্গামতী লেককে ঘিরে গড়ে ওঠে এই দ্বীপটি। দেখার জন্য নৌকা দিয়ে যেতে হয়। হাজার হাজার লাল কাঁকড়া ঘুরে বেড়ায় এই দ্বীপে। অসাধারণ ও চমৎকার একটি পরিবেশ।
আরো অনেক জায়গা যেমন- ফাতরার দ্বীপ, রাখাইন পল্লী যেখানে কুয়াকাটার কুয়াটি অবস্থিত, কুয়াকাটাকে দেখার মতো করে গড়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক এক অপার সৌন্দর্য সেখানে ঘিরে রেখেছে। তো পাঠক ঘুরে আসতে পারেন কুয়াকাটা। আপনার অবসাদ কাটিয়ে আসতে পারেন এবং সেই সাথে বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের এক অপার সম্ভাবনা হলো সাগরকন্যা কুয়াকাটা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা