ঘাসের ডগায় শিশির ফোঁটা
- হুসাইন আহমদ
- ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শরৎ ও শীতের শিশির ভেজা সকালের কুয়াশাচ্ছন্ন মিষ্টি ভোর, শিশিরসিক্ত দূর্বাঘাস ও শিউলি ফুল। গ্রামীণ উৎসবের পিঠাপুলি, ধান ক্ষেতের শিশির বিন্দু ও সুস্বাদু তাজা খেজুরের রস। সময়ের অনন্য আয়োজন ও ঋতুবৈচিত্র্য; যা লেখনীর মাধ্যমে যেমন ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয়। তেমনি শহরে বসেও পাওয়া ও উপভোগ করা সম্ভব নয়!
আমাদের গ্রামীণ জীবনের স্ব-চোখে দেখা প্রকৃতির সাথে শিশিরের প্রেম, সৃষ্টির এক অপার সৌন্দর্য। আর এই অপার সৌন্দর্যগুলো মানেই লাল সবুজের দেশ প্রিয় বাংলাদেশ। এখানে ঘটে ঋতুর মহাসমাবেশ। যেখানে প্রতিটি ঋতুই বৈচিত্র্যময় প্রকৃতিতে ভরপুর থাকে। প্রতিটি ঋতুতেই অপরূপ প্রকৃতি উপভোগ করার সুযোগ থাকে। আর এর জন্য গ্রামের কোনো বিকল্প নেই। যেখানে পাওয়া যায়, সবুজ-শ্যামলে ভরপুর সোনালি রোদ্দুর ফসলের মাঠ, ফুলে ফলে ভরপুর গ্রামবাংলার অপরূপ সৌন্দর্য ও আধুনিকতায় হারিয়ে না যাওয়া গ্রামের সেই আনন্দঘন মজার মজার স্মৃতি।
যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব প্রকৃতিপ্রেমীকে মুগ্ধ করবেই। এ জন্য গ্রামবাংলার অঞ্চলগুলোকে সৌন্দর্যের আধারও বলা যায়। যেখানে প্রতিটি ঋতুকে খুব ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। কখনো নদ-নদীর জলরাশিতে খুব বেশিই দৃষ্টিগোচর হয় নীলাদ্রির মুগ্ধ করা প্রতিচ্ছবি। তখন যতদূর চোখ যায় দৃষ্টি সীমানায় শুধু নীলাকাশ-নীলাদ্রির মনকাড়া দৃশ্যই চোখে পড়ে। গ্রামগুলো থাকে যেন সবুজ গালিচায় মোড়ানো ও ফুল-ফল আর হাজারো বৃক্ষে নিপুণভাবে সব কিছু সাজানো। আর নদ-নদীগুলো এঁকে বেঁকে চলে গেছে বহু দূর। দু’পাড়ে যার উঁচু-নিচু মেঠোপথ। পথের দু’পাশে নদীরপাড়ের ফুটে থাকা রঙ-বেরঙের নানা ফুল। কোথাও নদীর বুকে চিকচিকে বালুচর ও কাশফুলে ভরপুর দৃষ্টিসীমা! সত্যি তা প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়টা প্রশান্ত করে দেয়। যেখানে সদ্য বিদায় নেয়া শরতের আকাশটার সৌন্দর্য ধবধবে কাশফুলগুলো আরো একধাপ বাড়িয়ে দিয়ে থাকে।
শরতের কাশফুল মাটিতে নুয়ে পড়ার পরপরই হেমন্তের আগমন ঘটে। আর বর্তমান চলছে সেই হেমন্তকাল। হেমন্তকাল মানেই শিশিরস্নাত প্রথম প্রহর। হালকা কুয়াশায় ঢাকা মিষ্টি ভোর। এর পরেই আসে শীতকাল। তাই তো হেমন্তকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস। হেমন্তে সকালবেলা আবছা কুয়াশায় ঢাকা থাকে চার দিকের মাঠঘাট। হেমন্তে শিউলি, কামিনী, গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেবকাঞ্চন, হিমঝুরি ও রাজঅশোকসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল ফোটে। হেমন্তের সকালে শিউলি ফুলের সৌরভ বাঙালির মনেপ্রাণে আনে উৎসবের মহা আমেজ। আয়োজন শুরু হয় নানা রকমের পিঠা উৎসবসহ আরো নানা জিনিসের। এ সময়গুলোতে দিনের আকাশটা যদি সূর্যের আলোয় ঝলমলে ও মনকাড়া নীলের সাথে সাথে শুভ্র আভা ও খণ্ড খণ্ড মেঘমালায় সাজানো হয়। তাহলে পরিবেশটা কেমন হতে পারে! কতটা সুন্দর হতে পারে...! এককথায় অতুলনীয় ও অবর্ণনীয়। তা পরিপূর্ণ অনুভব করা সম্ভব নয়, যতক্ষণ না তা উপভোগ করা হবে, ফিল করা হবে। আর মনের রঙিন ভাবনাগুলোকেও মনোরম আকর্ষণীয় করে রাঙাতে পারব না। তাই কেউ যদি স্বপ্নের মতো করে এই প্রতিটি ঋতুর সৌন্দর্যকে ও ভালো দিকটাকে উপভোগ করতে চায়, তাহলে অবশ্যই তাকে প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপভোগ করার ও ভালোবাসার মনমানসিকতা তৈরি করতে হবে। কখনো সুযোগ হলে প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে কাছ থেকে উপভোগও করতে হবে। কেননা ঋতু ও প্রকৃতি থেকেই লাভ করা যায় হৃদয়ের প্রশান্তি, চোখের শীতলতা। তাই প্রতিটি ঋতুর কল্যাণকর দিকটাকে ও প্রকৃতিকে ভালোবাসুন, প্রকৃতির ছোঁয়া অনুভব করুন।
অতএব প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য ঋতুগুলোকে কখনো কখনো ভালোভাবে উপলব্ধি করুন। মাথার ওপরের বিশাল আকাশটাকে গভীরভাবে দেখুন। মনটাকে নতুনভাবে, নতুন সাজে একটু রাঙিয়ে তুলুন। হৃদয়ে নতুন কিছুর উপলব্ধি ও ভাবনার উদয় ঘটার ক্ষেত্র সৃষ্টি করুন। আর ঘাসের ডগায় শিশির ফোঁটার ও শিশিরের সাথে প্রকৃতির প্রেমকে উপলব্ধি করুন। দেখবেন প্রকৃতি সুন্দর। প্রকৃতি মনোমুগ্ধকর। প্রকৃতি আপনাকেও মুগ্ধ করবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা