জীবনের পরিধেয় শব্দ দল!
- তামীম আল আদনান
- ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
জীবনে নানান বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ মনে হলো, একটা বিকেল কিংবা স্নিগ্ধ ভোরের গায়ে যে মুগ্ধতার স্পর্শ লেগে থাকে সেই মুগ্ধতাটুকু জড়িয়ে ধরেই কি পার্থিব জীবনের এই ছোট্ট জার্নিটুকু ক্রস করে দেয়া যায় না! কালো মেঘের মতো বিবর্ণ, ধূসর জীবনের পৃষ্ঠায় অজানা কত স্কেচ পড়ে আছে। অপরিচিত কিংবা খুব প্রিয় কোন স্কেচে চোখ রাখতেই কি মায়াময় অদৃশ্য বালিকার মিষ্টি হাসির কাঁচভাঙা আওয়াজে হারিয়ে যায় অনুভূতির আকাশে রঙিন প্রজাপতি। ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ, আশা-আকাক্সক্ষার তীব্র প্রতিহিংসার জ্বলন্ত অঙ্গারের ওপর জীবনের সমস্ত আয়োজনের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে যে মানুষটা পৃথিবীর অজানা কক্ষপথে চলে গেল, সেও বুকের ভেতর সুখপাখি নিয়ে গল্পের নকশা তৈরি করেছিল। আবার দেখো, রাস্তার ধারে বেওয়ারিশ কুকুরের দল, দস্যি বালকের ছলছল চোখ, চায়ের ধোঁয়ায় উড়ে যাওয়ার যাপিত জীবনের সুখের অনুগল্প, রিকশার ভেতরে অদূর ভবিষ্যতে দুঃখের চারাগাছের অজানা ফুলের হাসি, শহরের ফুটপাত থেকে গ্রামের মেঠোপথ সব জায়গায় কেমন লকলকে বেড়ে ওঠা লাউয়ের ডগার মতো বেঁচে থাকা কিংবা বাঁচিয়ে রাখা শত-শত অপূর্ণ সংসার। এগুলো কি জগৎ সংসারের একেকটা গল্প নাকি একটা গল্পেরই নানান অধ্যায়! বুঝ অবুঝের সমীকরণ মিলাতে গিয়ে পৃথিবীর সাথে জীবনের আরো নানান জটিলতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাই। বৃদ্ধার ভাঁজপড়া চামড়ার নিচে যেই বয়সের দাফন হয়েছে সেই সব দিনগুলো মখমলি রুমালের সুগন্ধি হয়ে ভেসে আসে জীবনের উঠোনে। জীবনের আকাশে নক্ষত্রের মেলা শুরু হয়। পৃথিবীর পথে ঝরে পড়ে মুগ্ধতার তারাফুল। আমি সেই ফুল কুড়াতে যাই। বয়সের দোলনায় দোল খায় সফেদ কাফনের ঝকঝকে রোদ। সময় ফুরায়। পদ্মার তীরে কতো ঢেউ নিখোঁজ হয়ে যায়। ঘাসফুলের মতো বেড়ে উঠি। তিরতির করে কাঁপে আমার ওষ্ঠ। যেমন কুমার নদের উপর বয়ে যাওয়া বাতাসে কাঁপে আকাশনীলা ফুলের ফিনফিনে শরীর।
বর্ষায় জমে যাওয়া পানিতে স্নান করা চড়ুই দম্পতির মতো, রাত্রির গভীরে প্রেমের জলসাঘরে নর্তকী নাচে। তখন বাস্তবতার হিংস্র থাবায় ক্ষত-বিক্ষত আমার দৃষ্টির পুরো আকাশ। দেখি উত্তরের আকাশে দাউদাউ করে জ্বলছে নীলাভ আগুন। আঁধারে পর্দার আড়ালে হারিয়ে যায় স্বপ্নের মুখরোচক স্লোগান। নির্লজ্জ শহরের অসম বণ্টনের উনুনে পুড়ে যায় স্বপ্নের ঘুড়ি। শূন্য নাটাই হাতে দাঁড়িয়ে থাকি যেন আমি ব্যর্থ প্রেমিক। অথচ, বিকেলের নরম রোদের সাথে সেলফিতে মিশে আছে আমার পূর্ণতার জীবন্ত হাসি। কচি ঘাসফুল মরে যায় দানবীয় হাতির খামচিতে। নগ্ন আকাশের উদাম বুকে উড়ে বেড়ায় সফল কপোত-কপোতীর পূর্ণতার ফানুস। ফানুসের পেটভর্তি আগুন। একটা নিষ্পাপ শিশুর কোমল সুরে উড়ে যায় একটা দুঃখের ফানুস। ফানুশের পেটে আগুন নেই। শিশুটি বলছে, ‘আমার পেটে ক্ষুধার আগুন জ্বলছে। আমাকে দু’মুঠো ভাত দেও’।
একটা ভাঙাচোরা সম্পর্ক বুকে জড়িয়ে আজীবন দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটারও একটা কাঠগোলাপের চারা আছে। দৈন্যতার পৃথিবীতে যে মানুষগুলো পূর্ণতার খোশবু হয়ে জড়িয়ে যাচ্ছে প্রিয় মানুষের বোতামে, তারও ডায়েরির ভাঁজে প্রিয় কিছু ইচ্ছের কথা খুব গোপনে লেখা আছে। এক আকাশ অপেক্ষার পরে গোলাপের নরম শরীর ছুয়ে গড়িয়ে পড়া দু’ফোঁটা নোনাজল হয়তো পৃথিবীর কেউ দেখেনি। বুকের ভেতর বিষণœতার বৈশাখ পুষে নির্ঘুম কাটিয়ে দেয়া রাত্রির কথাও হয়তো কেউ জানেনি। মায়ার কফিনে একটা অসমাপ্ত জীবনের বেওয়ারিশ দাফনের কথাও কেউ বোঝেনি। রাত্রির কোল ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়ছে নির্মমতার জল। তাগুত সরকারের মতো একচেটিয়া প্রেমে আমি বিশ্বাসী না। সেই হিসেবে কেউ যদি আমাকে নাস্তিক বলে নামকরণ করে দেয়, আমি তাকে পৃথিবীর পথে ঘুরে বেড়ানো বেওয়ারিশ কুকুর বলে আখ্যা দেব। সরকার মানে কী প্রভু? যে জনগণ তার অর্চনায় মাথা ঠুকে কপালের কালো দাগ দেখে মুগ্ধ হবে! সম্পর্কের দরসে আমি তুমি এক মালারই বকুলফুল। তোমার ঘ্রাণে আমি মাতাল হবো তুমি আমার কপালে ঠোঁট ঘষে বলবে, ‘প্রিয় প্রেম! এক বিঘাত বুকের জমিনে তোমার লিগ্গা এক আকাশ প্রেম পুইষা রাখছি। গণতন্ত্রের মতো না। পৃথিবীর সব মানুষ তোমারে বহিষ্কার কইরা দিলেও আমার বুক সবসময় তোমার জন্য উদাম। তুমি আমার বুকে আইবা। জিরাবা। আমি তোমারে প্রেমের চাদরে ঢাইকা নিমু।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা