২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বিশেষ সাক্ষাৎকারে উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রোভিসি

-

দেশপ্রেমিক, নীতিবান ও আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে : প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা, প্রোভিসি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি
নয়া দিগন্ত : উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে কর্মোপযোগী কোন কোন প্রোগ্রাম চালু রয়েছে?
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব প্রোগ্রামই কর্মোপযোগী। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি, ব্যবসায় প্রশাসন থেকে ডিগ্রি অর্জন করার পর প্রায় সবাই এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। তা ছাড়া শিক্ষা ও শারীরিক শিক্ষা থেকে ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল ও কলেজে শিক্ষকতার দায়িত্বে নিয়োজিত হবে।
নয়া দিগন্ত : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা ও শিক নিয়োগ সম্পর্কে বলুন।
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : সাশ্রয়ী খরচে মানসম্পন্ন উচ্চশিার ভিশন নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তখন আমাদের শিার্থীর সংখ্যা কম ছিল, ভবনও কম ছিল। এখন আমাদের শিার্থীর সংখ্যা ৯ হাজার। ভবন সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ১৪টি। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ছয়টি প্রোগ্রামের পাঠদান চলছে। বাংলাদেশের নামকরা প্রতিষ্ঠান শহীদুল্লাহ অ্যাসোসিয়েটস আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের নকশা চূড়ান্ত করেছে। এ বছরই আমরা ১৪ তলা ভবনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। ভিসি মহোদয় যে মহান ব্রত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুরু করেছেন, আমরা সে ল্েযর দিকে এগিয়ে চলেছি বলেই এতটা উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আমাদের মানসম্পন্ন ও অভিজ্ঞ শিকমণ্ডলীর অকান্ত পরিশ্রম এ েেত্র ভূমিকা রেখেছে। ভালো মানের শিক নিয়োগে আমাদের কোনো আপস নেই। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশাবলি যথাযথভাবে পালন করেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক নিয়োগ দেয়া হয় ও এর শিাকার্যক্রম চলছে। আমরা বিভিন্ন বিভাগে মানসম্মত ও পিএইচডি করা শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার, কন্ট্রোলার, রেজিস্ট্রারসহ সব পদেই দায়িত্ববান ব্যক্তিরা কর্মরত রয়েছেন।
নয়া দিগন্ত : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান ও পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে বলুন।
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : পাঠদান ও পরীক্ষার ব্যাপারে আমরা আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে থাকি। কোর্সের ক্রেডিট অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট ঘণ্টা কাস অনুষ্ঠিত হয়। শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়ার সুযোগ রয়েছে। কাস টেস্ট, কুইজ, প্রেজেন্টেশনসহ মিড-টার্ম ও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। গ্র্যাজুয়েটদের সনদপত্রও চারটি বিশেষ সিকিউরিটি কোডের মাধ্যমে বিশেষায়িত করা হয়। এরই মধ্যে পাঁচটি কনভোকেশনের মাধ্যমে শিার্থীদের সনদপত্র দেয়া হয়েছে। আমাদের এখান থেকে প্রায় ১৯ হাজার শিার্থী ইতোমধ্যে সনদপ্রাপ্ত হয়েছেন।
নয়া দিগন্ত : নি¤œমধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : নি¤œ মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা উচ্চশিার সুযোগ থেকে যেন বঞ্চিত না হয়, সেদিকটা মাথায় রেখে বিভিন্ন কোটায় শতকরা ছয়জন শিার্থীকে বিনা খরচে পড়ানো হয়। মেধাবীদের জন্য ভিসি লিস্ট ও ডিন লিস্ট চালু আছে। এতিম ও প্রতিবন্ধী শিার্থীদের আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনা খরচে শিা দিয়ে থাকি। দু’জন প্রতিবন্ধী আমাদের এখান থেকে বিবিএ কোর্স শেষ করে এখন ভালো চাকরি করছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সেমিস্টার প্রতি ১০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি’তে ছাড় পাচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি অনেক কম, তাই সাশ্রয়ী খরচে শিক্ষার্থীরা মানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। এখানকার অনেক শিক্ষার্থী বর্তমানে পার্টটাইম চাকরি করে পড়াশোনা করছে। এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থী আছেন, যারা ভালো রেজাল্ট করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন। এখানে শিার্থীদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পাশাপাশি আমরা প্রতিটি ডিপার্টমেন্টেই সেমিনার লাইব্রেরি স্থাপন করেছি। এখানে শিকদের গবেষণা করার জন্য রয়েছে সেন্টার ফর রিসার্স অ্যান্ড ট্রেনিং (সিআরটি)। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ থেকে জার্নাল প্রকাশিত হয়। এখানকার শিক্ষকেরা যেসব গবেষণা করেছেন তা দেশ ও বিদেশের জার্নালে ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের দু’জন শিক গবেষণার জন্য রিসার্চ অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন।
নয়া দিগন্ত : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সম্পর্কে বলুন।
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : এখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। তবে যেকোনো যৌক্তিক দাবি শিার্থীরা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সুন্দর পরিবেশে কাজ করছেন। কারো কাজে কোনো হস্তপে নেই। আমাদের অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তা ইউনিভার্সিটির সূচনালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত কাজ করছে। এ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সম্পর্কে অনুমান করা যায়।
নয়া দিগন্ত : উত্তরা ইউনিভার্সিটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলুন।
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : ভবিষ্যতে এ ইউনিভার্সিটিতে যুগের চাহিদা অনুযায়ী বিভাগ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বর্তমানে অগ্রগণ্য হচ্ছে সর বিভাগকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা। এরপর নতুন নতুন বিভাগ খোলার চিন্তা রয়েছে।
নয়া দিগন্ত : শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
প্রফেসর ইয়াসমিন আরা লেখা : শিক্ষার্থীরা, তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে এসেছ। কাজেই তোমরা জ্ঞান আহরণের জন্য পড়ালেখা ঠিকমতো করে যাও। পাস করে চাকরি পাবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবে না। মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করে যাও, দেখবে চাকরি তোমাদের হাতের মুঠোয় এসে ধরা দেবে। শিক্ষার্থীরা তোমরা সবাই পড়ালেখা করে দেশপ্রেমিক, আদর্শবান, নীতিবান ও আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে, এটাই কামনা করি।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মাহমুদ কবীর

 

 


আরো সংবাদ



premium cement