০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

হাবিল-কাবিলের ঘটনা

-


মানব সৃষ্টির শুরুতেই ঘটনাটি ঘটেছিল। আমাদের আদি পিতা হজরত আদম আ:-এর স্ত্রী হজরত মা হাওয়া আ:-এর গর্ভে একই সাথে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করত। আপন ভাই ও বোনের মধ্যে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া শরিয়তে বৈধ নয় কিন্তু ওই সময়ের প্রয়োজনে আল্লাহ শরিয়তের বিধানকে শিথিল করে দিয়েছিলেন এবং শর্তসাপেক্ষে আপন ভাইবোনদের মধ্যে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ করেছিলেন। অর্থাৎ প্রথমবার জন্মগ্রহণকারী পুত্র দ্বিতীয়বার জন্মগ্রহণকারী মেয়ের মধ্যে বিয়ে হবে। দ্বিতীয়বার জন্মগ্রহণকারী পুত্রের সাথে প্রথমবার জন্মগ্রহণকারী মেয়ের বিয়ে হবে। কিন্তু কাবিলের সাথে জন্মগ্রহণকারী কন্যাটি ছিল পরমাসুন্দরী। হাবিলের সাথে জন্মগ্রহণকারী কন্যাটি ছিল কুশ্রী ও কদাকার। কাবিল ও হাবিলের বিয়ের সময় উপস্থিত হলে সেই সময়ে শরিয়তের নিয়মানুযায়ী কুশ্রী ও কদাকার কন্যাটি কাবিলের ভাগে পড়ে। এতে কাবিল অসন্তুষ্ট হলো এবং জিদ ধরল যে, আমার সাথে জন্মগ্রহণকারী কন্যাকে আমার সাথে বিয়ে দিতে হবে। হজরত আদম আ: তার শরিয়তের নিয়মানুযায়ী কাবিলের আবদার প্রত্যাখ্যান করলেন। ফলে কাবিল ও হাবিলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিলো। এরপর হজরত আদম আ: কাবিল ও হাবিলের মতবিরোধ দূর করার উদ্দেশ্যে বললেন, তোমরা আল্লাহর জন্য নিজ নিজ কোরবানি পেশ করো। হাবিল পশু পালন করত। তার ছিল উট, দুম্বা ও ভেড়া।

সে একটি উৎকৃষ্ট মানের দুম্বা কোরবানি করল। কাবিল কৃষিকাজ করত। তার অনেক কৃষিজমি ছিল। তিনি কিছু শস্য ও গম কোরবানির জন্য পেশ করলেন। হজরত আদম আ: বললেন, যার কোরবানি কবুল হবে, সেই সুন্দরী কন্যাকে বিয়ে করবে। তৎকালীন সময়ে কোরবানি কবুল হওয়ার একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন ছিল এই যে, আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা এসে কোরবানিকে ভস্মীভূত করে দিতো। যার কোরবানি ভস্মীভূত হতো, তার কোরবানি কবুল হয়েছে বলে ধরে নেয়া হতো। আর যার কোরবানি ভস্মীভূত হতো না, তার কোরবানি কবুল হয়নি বলে মনে করা হতো। নিয়মানুযায়ী আকাশ থেকে অগ্নিশিখা এসে হাবিলের কোরবানি ভস্মীভূত করে দিলো এবং কাবিলের কোরবানি যেমন ছিল তেমনি পড়ে রইল। এ দৃশ্য দেখে কাবিলের দুঃখ ও ক্ষোভ বেড়ে গেল। কাবিল হাবিলের শত্রু হয়ে গেল। কাবিল আত্মসংবরণ করতে পারল না এবং সে প্রকাশ্যে ভাইকে বলে দিলো, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। অতঃপর যা ঘটল তা কুরআনের ভাষায়- ‘আপনি তাদেরকে আদম আ:-এর দুই পুত্রের বাস্তব অবস্থা পাঠ করে শুনান। যখন তারা উভয়েই কিছু উৎসর্গ নিবেদন করেছিল, তখন তাদের একজনের উৎসর্গ কবুল হয়েছিল এবং অপরজনের উৎসর্গ কবুল হয়নি। সে (কাবিল) বলল, আমি অবশ্যই তোমাকে হত্যা করব। সে (হাবিল) বলল, আল্লাহ মুত্তাকিদের পক্ষ থেকেই তো (কোরবানি) গ্রহণ করেন। যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে আমার দিকে হস্ত প্রসারিত করো, তবে আমি তোমাকে হত্যা করতে তোমার দিকে আমার হস্ত প্রসারিত করব না। কেননা, আমি বিশ^জগতের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করি। আমি চাই যে, আমার ও তোমার পাপ তুমি নিজের মাথায় চাপিয়ে নাও। এরপর তুমি দোজখিদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। এটিই অত্যাচারীদের শাস্তি। এরপর তার অন্তর ভাই হত্যায় তাকে উদ্বুদ্ধ করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। আল্লাহ এক কাক প্রেরণ করলেন। সে মাটি খনন করে তাকে (কাবিলকে) শিক্ষা দেয় যে, আপন ভাইয়ের লাশ কিভাবে আবৃত করবে। সে (কাবিল) বলল, আফসোস, আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না, আপন ভাইয়ের মৃত দেহ আবৃত করি? এরপর সে অনুতাপ করতে লাগল।’ (সূরা মায়েদা: ২৭-৩১, তাফসিরে মা আরেফুল কুরআন পৃষ্ঠা ৩২৩-৩২৪)
লেখক : খতিব, পূর্ব খামার জামে মসজিদ, শোভাগঞ্জ, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন : তাজুল ইসলাম চিফ প্রসিকিউটর আবুধাবির কারাগার থেকে দেশে ফিরেছেন ১৪ বীর কোনাবাড়ীতে কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা : কনস্টেবল গ্রেফতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তগুলো যৌক্তিক : ফখরুল ‘একটি চক্র জামায়াত আমিরের বক্তব্য নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে’ অস্ত্র জমা দেয়নি শামীম ওসমান ও গাজী পরিবার এবি পার্টির উপদেষ্টার পদ ছাড়লেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক কর্মকর্তাদের তালিকা চাওয়া নিয়ে বিতর্কে মন্ত্রণালয়ের দুঃখ প্রকাশ আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫ রূপগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা না দেয়া ডাক্তারদের সনদ বাতিলের দাবি ড্যাবের

সকল