সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ
- মীযান মুহাম্মদ হাসান
- ১৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫
কালিমা নামাজ রোজা হজ জাকাত এগুলো ইসলামের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। এসবের মধ্যে হজ হলো, অন্যতম প্রধান একটি। এটি আরবি শব্দ। অভিধানে যার অর্থ- ইচ্ছা করা, সঙ্কল্প করা ইত্যাদি। শরয়ি পরিভাষায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত কতক বিধিবিধান ও নিয়মনীতি পালনের নামই হজ। বায়তুল্লাহ তথা আল্লাহর ঘর জিয়ারত করা, মসজিদে নববী জিয়ারত করা, আরাফায় অবস্থান করা, মুজদালিফায় অবস্থান করা, সাফা মারওয়া সায়ি করা ইত্যাদি হজের গুরুত্বপূর্ণ আমল। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা শারীরিক ইবাদত। সাওম বা রোজা পালনও একটি শারীরিক ইবাদত। জাকাত অর্থনৈতিক ইবাদত, যা অর্থনৈতিক সচ্ছল ব্যক্তির ওপর আবশ্যক। আর হজ একই সাথে আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। নির্ধারিত সময়ে, নির্দিষ্ট কতক নিয়মনীতি মেনে যা আদায় করতে হয়। শাওয়াল জিলকদ ও জিলহজ হলো, হজের জন্য নির্ধারিত মাস। হজ আদায়ে প্রয়োজন শারীরিক সক্ষমতা। তবে শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতা থাকাও অত্যন্ত জরুরি। পবিত্র আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আর মানুষের মধ্যে যে ব্যক্তির সেখানে (বায়তুল্লাহ) যাওয়ার সামর্থ্য সক্ষমতা আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই গৃহের হজ করা তার ওপর অবশ্য কর্তব্য। আর যে তা অস্বীকার করবেন (সে জেনে রাখুক যে), আল্লাহ তায়ালা বিশ্বজগতের প্রতি অমুখাপেক্ষী’ (সূরা আলে ইমরান-৯৭)।
কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন ‘যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে’ বলার উদ্দেশ্য হলো, বায়তুল্লাহ আসা-যাওয়ার খরচ পূর্ণ হওয়ার জন্য যথেষ্ট অর্থ ও পাথেয় যার কাছে আছে। একইভাবে রাস্তা ও জান-মালের নিরাপত্তা এবং শারীরিক সুস্থতা ইত্যাদিও সামর্থ্যরে অন্তর্ভুক্ত। আর মহিলাদের জন্য মাহরাম (স্বামী অথবা যার সাথে তার বিয়ে চিরতরে হারাম এমন কোনো পুরুষ) থাকা জরুরি (ফাতহুল কাদির)।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কোনো মহিলা যেন সাথে মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া একাকী তিন দিনের (দূরত্বে) সফর না করে’ (মুসলিম-৩১৪৯)। এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, নারীরা মাহরাম ছাড়া হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ এ আমল থেকে বিরত থাকবেন। তথা মাহরাম ছাড়া নারীদের জন্য হজ করা জরুরি নয়।
সূরা আলে ইমরানের ৯৭ নং এই আয়াতটি প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর হজের বিধান ফরজ হওয়ার দলিল (তাফসিরে ইবনে কাসির)।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ না করাকে কুরআন ‘কুফরি’ (অস্বীকার) বলে আখ্যায়িত করেছে। এ থেকেও হজ ফরজ হওয়া এবং তা যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না। বহু হাদিস ও সাহাবিদের উক্তিতে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে হজ করে না, তার ব্যাপারে কঠোর ধমক এসেছে (তাফসিরে ইবনে কাসির)।
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা:-কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞেস করা হলো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে (শত্রুর মোকাবেলায়) জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, হজে মাবরুর তথা কবুল হজ (বুখারি-১৫১৯)।
যখন কোনো মানুষের ওপর হজ ফরজ হয়, যাবতীয় সক্ষমতা অর্জিত হয়, তখন তার জন্য দ্রুত হজ করে নেয়া উচিত। বিলম্ব করা উচিত নয়! সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি হজ পালনের ইচ্ছা পোষণ করেছে সে যেন তাড়াতাড়ি হজ পালন করে (সুনানে আবু দাউদ-১৭৩২)।
লেখক : খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা