১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সালাম, ইসলামী সম্ভাষণ রীতির উৎকৃষ্ট উদাহরণ

-

সালাম ইসলামী সংস্কৃতিতে বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গগুলোর অন্যতম। ইসলামে প্রত্যেক মুসলিমের মধ্যে সালাম আদান-প্রদানের ব্যাপক প্রচলনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইসলামী সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ সালাম আভিধানিক অর্থ- হুকুম, সালামের মাসনুন শব্দসমূহ, সালামের জবাবের মাসনুন শব্দসমূহ ও সালাম ব্যতীত অন্য সংস্কৃতির সম্ভাষণসমূহ ব্যবহারে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি ও সালাম আদান-প্রদানের গুরুত্ব জানা দরকার।

‘সালাম’ শব্দটি আরবি। বাংলায় এর আভিধানিক অর্থ দাঁড়ায় ‘শান্তি কামনা করা’, ‘নিরাপত্তা কামনা করা’ প্রভৃতি। ‘সিলম’ শব্দধাতু থেকে শব্দটির উৎপত্তি। এ শব্দধাতু থেকে উদ্ভূত ‘ইসলাম’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ দাঁড়ায় ‘আত্মসমর্পণ করা’, ‘ইসলাম গ্রহণ করা’ প্রভৃতি। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আর যখন তোমরা সম্ভাষিত হও কোনো সম্ভাষণ শব্দ দ্বারা, তখন তোমরা সম্ভাষণ জানাও তার থেকে উত্তম সম্ভাষণের শব্দ দ্বারা অথবা তাই ফিরিয়ে দাও’ (সূরা নিসা-৮৬)।

নবী করিম সা: বলেছেন, ‘অপর মুসলিমের উপর একজন মুসলিমের ছয়টি কর্তব্য রয়েছে : অসুস্থ হলে তার সেবা করবে, আর সে মারা গেলে তার নিকট উপস্থিত, ডাক দিলে তার জবাব দেয়া এবং সাক্ষাতে সালাম দেয়া, হাঁচি দিলে জবাব দেয়া এবং অনুপস্থিত ও উপস্থিত সর্বাবস্থায় তার কল্যাণ কামনা করবে’ (বুখারি ও মুসলিম)।

জান্নাতিদের একে অপরের মধ্যে সম্ভাষণের মাধ্যম হবে সালাম। জান্নাতিরা একে অপরকে সালাম দেবেন এবং আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতারা তাদেরকে সালাম জানাবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘সেখানে তাদের প্রথম কথা হবে- পবিত্রতা আপনার হে আল্লাহ এবং তাদের সম্ভাষণ হবে সালাম। আর তাদের শেষ কথা হবে এটিই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য’ (সূরা ইউনুস-১০)।
সম্ভাষণে সালামের পরিবর্তে অন্য শব্দ ব্যবহার করা মাকরুহ। কোনো অমুসলিমকে সালাম দেয়া জায়েজ নেই। তবে কোনো মজলিসে মুসলিম-অমুসলিম একসাথে বসলে তখন তাদেরকে ‘আসসালামু আলা মানিত্তাবাআল হুদা’ বলে সালাম দেবে।

কখন সালাম দেয়া মাকরুহ : দিনে ও রাতে কয়েকটি সময় আছে যখন সালাম দেয়া মাকরুহ।

১. নামাজ পড়া অবস্থায় কোনো ব্যক্তিকে সালাম দেয়া উচিত নয়;

২. প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়া অবস্থায়;

৩. অজুরত অবস্থায়;

৪. খাওয়ার সময়;

৫. কুরআন তিলাওয়াত করা অবস্থায়;

৬. জিকির ও মোরাকাবারত অবস্থায়;

৭. ওয়াজ ও নসিহত শোনা অবস্থায়;

৮. দ্বীনি শিক্ষার মজলিসে মশগুল ব্যক্তিকে অবস্থায় সালাম দেয়া উচিত নয়;

৯. আজানরত অবস্থায়;

১০. জরুরি হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত থাকা অবস্থায়।

সালাম দেয়া সুন্নাত হলেও এর জবাব দেয়া ওয়াজিব।
সালাম দেয়ার মাসনুন বাক্যসমূহ : সালাম দেয়ার জন্য বিভিন্ন মাসনুন বাক্য হাদিস থেকে পাওয়া যায় :

১. আসসালামু আলাইকুম;

২. সালামুন আলাইকুম;

৩. সালামুন আলাইকা;

৪. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ;

৫. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

সালামের জবাব দানের কুরআন সুন্নাহ-ভিত্তিক মূলনীতি হলো সালামের শব্দসমূহ থেকে এক শব্দ বৃদ্ধি করা। সালামের জবাবদানের অনেকগুলো মাসনুন বাক্য রয়েছে যেগুলো বিভিন্ন হাদিসের আলোকে সুন্নত হিসেবে সাব্যস্ত :

১. ওয়া আলাইকুমুস সালাম;

২. আলাইকুমুস সালাম;

৩. আলাইকাস সালাম;

৪. ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ;

৫. ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু;

৬. ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ওয়া মাগফিরাতুহু।

লেখক : শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রাথমিকের শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ চট্টগ্রামে টিভি বিস্ফোরণে বসতঘর পুড়ে ছাই কুয়াকাটায় সাবেক মেয়রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিএনপির সংবাদ সম্মেলন লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের ২ নেতা গ্রেফতার বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে নিবন্ধন দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ নাতনিকে অপহরণে বাধা দেয়ায় নানিকে হত্যার অভিযোগ, আহত ২ ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলায় দণ্ডিত বিএনপি নেতা মিজানুরের জামিন সাবেক ৫ এমপির স্ত্রী-সন্তানসহ বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা জানতে চায় ট্রাইব্যুনাল

সকল