১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয়

-

মানুষসহ আল্লাহ তায়ালার সব সৃষ্টিই দুর্বল। আর আল্লাহ তায়ালা হলেন মহান ক্ষমতাধর ও প্রবল শক্তিশালী। ঘূর্ণিঝড়সহ যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয় মহান আল্লাহ তায়ালার শক্তি ও ক্ষমতার কথা। আমাদের দুর্বলতা, হীনতা ও মুখাপেক্ষিতার কথা। তাই এসব দুর্যোগ ও বিপদের সময় আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা উচিত।
ঝড়-বাতাস, ঘূর্ণিঝড় ও জলবায়ুসহ যেকোনো দুর্যোগের সময় করণীয় হলো আল্লাহমুখী হওয়া। পিছনে গুনাহ থাকলে তা থেকে তওবা করা। বেশি বেশি তওবা, ইস্তেগফার, জিকির ও দোয়া করা। মনে রাখতে হবে, মানুষের ওপর সকল বিপদ-মুসিবত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আসে। আবার একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই তা বন্ধ করতে পারেন। অন্য কারো ক্ষমতা নেই।
বিভিন্ন দুর্যোগের সময় মানুষকে বিভিন্ন ধরনের অমূলক কথাবার্তা বলতে শোনা যায়। অনেকে কান্নাকাটি আবার চিল্লাচিল্লিও করে। কেউ কেউ আবার একটু সাহস দেখাতে গিয়ে বলে, ‘আমরা ঘূর্ণিঝড় ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত।’ এসব কথা বা কাজ কোনোটাই করা ঠিক নয়। কারণ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কোনো কিছু এলে, তা বান্দা মোকাবেলা করবে তা কল্পনাও করা যায় না।
তাই, এই সময়টা হলো আল্লাহমুখী হওয়ার। আল্লাহ তায়ালার দরবারে মাফ চাওয়ার।
ঘূর্ণিঝড় বা যেকোনো বিপদে রাসূলের শেখানো আমলগুলো আমাদের বেশি বেশি করা :
ঝড়-বাতাস, ঘূর্ণিঝড়, জলবায়ু, অতিবৃষ্টিসহ সব ধরনের অকল্যাণ থেকে মহানবী সা: আল্লাহ তায়ালার কাছে পরিত্রাণ চেয়েছেন। তাই কঠিন দুর্যোগকালে বাহ্যিক প্রস্তুতির পাশাপাশি তা থেকে পরিত্রাণ চেয়ে দোয়া করা সুন্নত।
যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আমাদের প্রধান কর্তব্য হলো, বেশি বেশি ইস্তেগফার ও রাসূল সা:-এর শেখানো দোয়াসমূহ পড়া। আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। হজরত আয়েশা রা: বর্ণনা করেছেন, রাসূল সা: প্রচণ্ড বাতাস দেখলে এই দোয়া পড়তেন-
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরিহা, ওয়া খাইরি মা ফিহা, ওয়া খাইরি মা উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজু বিকা মিন শাররিহা, ওয়া শাররি মা ফিহা, ওয়া শাররি মা উরসিলাত বিহি।’
অর্থ : হে আল্লাহ, এই প্রচণ্ড বাতাস যেসব কল্যাণ ও উপকার নিয়ে এসেছে তা আমি আপনার কাছে চাই। এই প্রচণ্ড বাতাস যেসব ক্ষতি ও মন্দ নিয়ে এসেছে তা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি। (তিরমিজি : ৩৪৪৯)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা: বলেছেন, ‘রাসূলুল্লাহ সা: যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন-
আল্লাহুম্মা লা তাকতুলনা বিগজবিকা ওয়া লা তুহলিকনা বিআজাবিকা ওয়া আফিনা কবলা জালিকা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি আমাদের আপনার গজব দিয়ে হত্যা করবেন না। আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। বরং এসবের আগেই আমাদেরকে পরিত্রাণ দিন। (তিরমিজি : ৩৪৫০)
অন্য হাদিসে আনাস রা: বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সা: অতিবৃষ্টি থেকে পরিত্রাণ পেতে দুই হাত উঁচিয়ে এই দোয়া করেছন-
‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা, আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াজ জিরাবি। ’
অর্থ : হে আল্লাহ, বৃষ্টি আমাদের ওপর থেকে আশপাশের অঞ্চলে সরিয়ে দিন, পাহাড়-মরু, খাল-বিল ও বনাঞ্চলের দিকে সরিয়ে নিন। (বুখারি : ১০১৩)
লেখক : শিক্ষক, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement