১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মাথার খুলি আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি

-

মাথার খুলির সৃষ্টিকৌশল নিয়ে চিন্তা করলে অবাক হতে হয়। আমাদের পুরো মাথাজুড়েই রয়েছে খুলি। মহান কারিগর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ৫৫টি হাড়ের টুকরোর সমন্বয়ে মাথার খুলি সৃষ্টি করেছেন। শরীরের হেডকোয়ার্টার মস্তিষ্ককে নিরাপদ রাখা ও বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করাই এর প্রধান কাজ। এগুলোকে পরস্পর জুড়ে দেয়া হয়েছে সূক্ষ্ম সেলাইয়ের মাধ্যমে। এসব সংযোগের মধ্যে অতি সূক্ষ্ম ফাটল রয়েছে। তাতে খুলির কোনো এক অংশে ব্যথা বা ক্ষত সৃষ্টি হলে তা অন্য অংশে পৌঁছাতে পারে। এক অংশের ওপর কোনো আঘাত লাগলে সেই অংশেই কষ্ট হয়। অন্য অংশ নিরাপদ থাকে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভ্রুণাবস্থায়ই মাথার খুলি তৈরি করেন। তখন ভীষণ নরম ও দুর্বল থাকে। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর এটি কিছুটা শক্ত হয়। শিশু যত বড় হতে থাকে, খুলিও তত শক্ত হয়। আর এভাবেই বিচিত্র শিল্পনৈপুণ্য ও আশ্চর্যজনক সৃষ্টিকৌশল আমাদের মধ্যে প্রতিভাত হয়।

মাথার খুলির ইংরেজিতে ‘স্কাল’ বলে আর খুলির উপরের অংশকে বলে ভল্ট। খুলির উপরের অংশ কানের দু’পাশে আড়াআড়িভাবে খাঁজকাটা থাকে। জন্মের সময় এই খাঁজকাটা ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে একটি হাড়ের উপর অন্য একটি হাড় উঠে মাথাটা পর্যায়ক্রমে ছোট হয়ে আসে। গর্ভের শিশুর শরীরের তুলনায় তার মাথা অনেক বড় থাকে। খুলিটা ছোট হওয়ার জন্যই প্রাকৃতিকভাবে সন্তান প্রসবে সুবিধা হয়। তা না হলে মাকে আরো বেশি কষ্ট পেতে হতো। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুদের মাথার হাড় এভাবে ছোট হয় না।

খুলির গঠন : আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের এই মাথার খুলির সৃষ্টির বৈচিত্র্য দেখে বিস্ময়ে বিহ্বল হয়ে যেতে হয়। তিনি আমাদের শরীরের গঠন, উচ্চতা ও বয়সভেদে একেকজনের মাথার খুলি একেক রকম করে সৃষ্টি করেছেন। মেয়েদের খুলি গোলাকার আর তুলনামূলকভাবে ছোট। ছেলেদের ঘাড়ের হাড় চওড়া হওয়ায় তাদের খুলি বড় ও লম্বা। খুলির সাথে ছোট ও নরম হাড়গুলো সংযুক্ত থাকে। আর খুলির নিচের দিকে মুখের দু’পাটির হাড়ের উপরের অংশ লাগানো থাকে। আবার এই দু’পাটির হাড়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন দাঁত সংযুক্ত করে রেখেছেন।

খুলির কাজ : আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টিনৈপুণ্য আমরা দেখতে পাই মাথার খুলিতে। কী সুন্দর করে মস্তিষ্কের টুপির মতো তৈরি করেছেন খুলিকে। একে তাই চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের হেলমেট বলে অভিহিত করেছেন। খুলির নিচের দিকে গোলাকার ছোট্ট একটি ছিদ্র রয়েছে। এই ছিদ্রকে বলে ‘ফোরামেন ম্যাগনাম’। এই ছিদ্র দিয়ে স্পাইনাল কর্ড-সহ বিভিন্ন স্নায়ু মস্তিষ্ক থেকে ঘাড় বেয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে গেছে।

লেখক : সাকী মাহবুব, সহকারী শিক্ষক, নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, পাংশা, রাজবাড়ী


আরো সংবাদ



premium cement