২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইসলামের দৃষ্টিতে ট্রান্সজেন্ডার

-

বর্তমানে ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে সারা দেশে তুমুল আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সপ্তম শ্রেণীর একটি বইতে ‘শরীফ ও শরীফা’ নামে একটি গল্পের সূত্র ধরেই এই ঝড়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গ সম্পূর্ণ ভিন্ন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ট্রান্সজেন্ডার মহান আল্লাহর বিরুদ্ধে চরম সীমালঙ্ঘন। এটি মহান আল্লাহর সৃষ্টিতে ইচ্ছাকৃত পরিবর্তন আনা। ট্রান্সজেন্ডার এমন একজন পুরুষ বা নারীকে বোঝায় যাকে মহান আল্লাহ তায়ালা একজন সম্পূর্ণ পুরুষ বা নারী হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এই ট্রান্সজেন্ডাররা মহান আল্লাহর সৃষ্টিতে অসন্তুষ্ট। ফলে, তারা মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও তাদের জন্মগত লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে নারী বা নারী থেকে পুরুষ হতে চায়। যাতে তারা সহজভাবে সমকামিতা করতে পারে ও বৈধতা পায়।

ট্রান্সজেন্ডার ও তৃতীয় লিঙ্গ তথা হিজড়াদের বক্তব্য অনুযায়ী দুটো জিনিস এক নয়, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। হিজড়াদের সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে অর্থাৎ তারা পুরুষ ও নারী কোনোটিই নয়। অন্য দিকে সম্পূর্ণ পুরুষ বা নারী থেকে নিজের ইচ্ছা মতো চিকিৎসা এবং থেরাপির মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডারে রূপান্তরিত হয়।

যৌনত্রুটি বা জটিলতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করলে হিজড়া ইংরেজিতে ইন্টারসেক্স (ওহঃবৎংবী) বলে। অপর দিকে ট্রান্সজেন্ডার ইন্টারসেক্স (ওহঃবৎংবী) নয়, তারা সম্পূর্ণভাবে পুরুষ বা নারী হিসেবে জন্মগ্রহণ করে এবং পরে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী লিঙ্গ পরিবর্তন করে। তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক যৌনতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
মূলত সমাজে অবৈধ সম্পর্ককে বৈধ করার একটি ভুল মতবাদ প্রচার করা হচ্ছে বলে অনেক সেক্সুয়াল এবং হরমোন বিশেষজ্ঞ মনে করেন। এ ব্যাপারে ইসলামে বলা হয়েছে, ‘আমি (আল্লাহ) মানুষকে সৃষ্টি করেছি সুন্দরতম গঠনে’ (সূরা ত্বিন-৪)।

মহান আল্লাহ মানুষকে যে আকার বা আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা-ই উৎকৃষ্ট এবং উত্তম। ইসলামের বাইরে গিয়ে এটাকে পরিবর্তনের কোনো অধিকার মুসলিম মিল্লাতের নেই।
তাই ট্রান্সজেন্ডার বা লিঙ্গ পরিবর্তন জঘন্যতম কবিরাহ গুনাহ। মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও জন্মগত সৃষ্টির পরিবর্তন করার বিধান ইসলামে নেই। এ ব্যাপারে ইবনে আব্বাস রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, বেশধারী পুরুষ কিংবা বেশধারী নারীদের মহান আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন (বুখারি-৫৮৮৫)।
‘আমি (শয়তান) অবশ্যই তাদেরকে আদেশ দেবো যার ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টির বিকৃত করবেই। তবে যে আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, সে স্পষ্টতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়’ (সূরা আন-নিসা-১১৯)।

সব ইসলামী আইনবিদ এ বিষয়ে একমত যে, ট্রান্সজেন্ডার তথা লিঙ্গের বিকৃত সাধন সুস্পষ্টভাবে হারাম। অনেকে এটাকে কুফরিও বলেছেন। তাই এমন ভয়ানক মতবাদের ব্যাপারে মুসলিম মিল্লাতের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

লেখক : আল-ফিকহ্ বিভাগ, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়

 


আরো সংবাদ



premium cement