২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ শাবান ১৪৪৬
`

ইসলামের আলোকে বন্ধু নির্বাচন

-

আমরা এই পৃথিবীতে ক্ষণস্থায়ী যাত্রী মাত্র। আমাদের জীবনসফরে সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, বিপদ-মুসিবত ভাগাভাগি করার জন্য প্রয়োজন হয় সঙ্গীর। যারা আমাদের ব্যথায় ব্যথিত হবে এবং সান্ত্বনার সুমিষ্ট বাণী শুনিয়ে ধৈর্য ধারণ করার সাহস জোগাবে। আর আমাদের আনন্দে আনন্দিত হবে এবং সুখ ও সমৃদ্ধির পথে আরো এগিয়ে যেতে প্রেরণা জোগাবে। তাই সঙ্গী (বন্ধু) হিসেবে প্রকৃত দ্বীনদার ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী লোকদের নির্বাচন করা আবশ্যক। ইসলাম হলো ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের ধর্ম। দ্বীনি বন্ধুত্ব ও আল্লাহর জন্য পরস্পর ভালোবাসা একটি মহৎ ইবাদত। তবে এমন ব্যক্তিকে বন্ধু নির্বাচন করতে হবে, যার মধ্যে বিশেষ গুণ ও উত্তম চরিত্র রয়েছে। তাই রাসূল সা: বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘মানুষ তার বন্ধুর ধর্ম (স্বভাব-চরিত্র) দ্বারা প্রভাবিত হয় সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ রাখে সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে’ (আবু দাউদ-৪৮৩৩, তিরমিজি-২৩৭৮)। বন্ধুত্বের মাধ্যমে মানুষ সাধারণত দু’টি উপকারের প্রত্যাশা করে :
১. পার্থিব উপকার : বন্ধুর সম্পদ ও প্রভাব-প্রতিপত্তি দ্বারা উপকার লাভ করা অথবা শুধু দেখা সাক্ষাৎ ও মেলামেশার মাধ্যমে স্বস্তি অনুভব করা।
২. দ্বীনি উপকার : বন্ধুর ইলম ও আমলের মাধ্যমে উপকৃত হওয়া। তার প্রভাব-প্রতিপত্তির মাধ্যমে খারাপ মানুষের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া। বিপদাপদ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বন্ধুকে সহযোগী হিসেবে পাশে পাওয়া ইত্যাদি।
বন্ধুত্বকে আমরা সামান্য একটি বিষয় ভাবলেও তা মোটেও সামান্য নয়। এ বিষয়ে আমরা রাসূল সা:-এর এক হাদিস থেকে আরো স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারব : রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন বলবেন ‘সেইসব লোকেরা কোথায়, যারা আমার মহব্বতের জন্য পরস্পর ভালোবেসেছিল? আজ আমি আমার (আরশের) ছায়াতলে তাদের আশ্রয় দেবো। আজ আমার (আরশের) ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া নেই’ (মুসলিম-২৫৬৬)।
সৎ পুণ্যবান লোকদের সাথে বন্ধুত্ব করলে নিজের মর্যাদাও বৃদ্ধি পায়। যেমন আসহাফে কাহফের কুকুরের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছিল। আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেছেন, ‘...এখন তারা বলবে, তারা ছিল তিনজন; তাদের চতুর্থটি তাদের কুকুর’ (সূরা কাহাফ, আয়াত-২২)।
বন্ধু আয়নার মতো, তার মাধ্যমে তোমার চরিত্র প্রতিফলিত হয়। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে সূরা জুখরুফের ৬৭ নং আয়াতে বলেন- ‘বন্ধুরা সে দিন শত্রু হবে, তবে আল্লাহভীরুরা নয়।’ সুতরাং বন্ধুত্বের আগে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করতে হবে। সাধারণত বিভিন্ন কারণ ও উপলক্ষকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে থাকে। যেমন- প্রতিবেশী হওয়ার কারণে, একই অফিসে চাকরি করার কারণে, এক সাথে পড়াশোনা করার কারণে, দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ, ট্রেন কিংবা বিমানে পাশাপাশি বসার কারণে একে অপরের সাথে পরিচিতি এবং পারস্পরিক বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়। বন্ধুত্ব যেভাবেই তৈরি হোক না কেন, তার আগে বন্ধুত্বের আগে নিশ্চিত হতে হবে, সে ভালো মানুষ কি না? সে আল্লাহর প্রতি আনুগত্যশীল বান্দা কি না? কারণ উত্তম ও দ্বীনদার বন্ধু দুনিয়াতে আল্লাহর পর সাবচেয়ে উত্তম সহযোগী এবং আখিরাতের সফরে উত্তম সহযাত্রী হয়ে থাকে।
লেখক : শিক্ষার্থী, তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা, টঙ্গী


আরো সংবাদ



premium cement
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার : ধর্ম উপদেষ্টা ৪৬ হাজার বছর পর জীবন ফিরে পেল হিমায়িত কীট ডিএনসিসির আওতাধীন খালের টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক ইবরাহীম ঝড়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ইংল্যান্ড সিরিয়ায় সামরিক অবস্থানের ঘোষণা নেতানিয়াহুর, দামেস্কসহ কয়েকটি শহরে প্রতিবাদ ডিসেম্বরেই নির্বাচন করা সম্ভব : ইসি আনোয়ারুল ৩ নির্বাচনে বাংলার মানুষ ভোট দিতে পারেনি : মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা উপদেষ্টা মাহফুজ পেলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যাকাত সমাজে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার আহ্বান সৌদি আরবের

সকল