২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`

জুমার দিন সূরা কাহফ পড়ার ফজিলত

-

সপ্তাহের শুক্রবার জুমার দিন মুমিনদের জন্য একটি উত্তম দিন। আল্লাহ তায়ালার কাছেও এ দিনটি শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তায়ালার রহমতের দুয়ার এই দিনে খুলে যায়। সব বান্দা-ই এদিনের সুবিধা গ্রহণের সুযোগ পায়। হাদিস থেকে জানা যায়, এ দিনে জাহান্নামে অধিবাসীরাও রহমতের ছোঁয়া পায়। জাহান্নামের শাস্তি সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় লঘু হয়।
এ দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যার ওপর আমল করলে বিশেষ মর্যাদা অর্জন হয়। অনেক সওয়াব প্রত্যাশা করা যায়। তন্মধ্যে একটি আমল হচ্ছে- কুরআন মজিদের সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা। শুক্রবার দিনে এ সূরা পাঠের বিভিন্ন ফজিলতের কথা হাদিসে পাওয়া যায়।
নূর বর্ষণ : শুক্রবার সূরা কাহফ তিলাওয়াত করলে আল্লাহ তায়ালা তিলাওয়াতকারীর ওপর নূর বর্ষণ করেন। হজরত আলী রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবার সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে দুই শুক্রবারের মধ্যবর্তী সময় নূর দ্বারা জ্যোতির্ময় করে দেবেন। (সুনানে বায়হাকি-৬২০৯)
ফেতনা থেকে মুক্তি : শুক্রবার দিনে মহান আল্লাহ বান্দার জন্য বিশেষ সুযোগ রেখেছেন। এ দিনে নিয়মিত কাহফ পাঠ করলে ফেতনা মুক্ত থাকা যায়। বিশেষ করে কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে দাজ্জালের ফেতনা।
হাদিসে নবীজী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শুক্রবার সূরা কাহফ তিলওয়াত করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে আট দিন পর্যন্ত ফিতনা থেকে নিরাপদে রাখবেন, এমনকি দাজ্জালের ফেতনা থেকেও।’ (আল আহাদিসুল মুখতারা, হাদিস-৪২৯)
কিয়ামতের দিনে সফলতা : সূরায়ে কাহফ পাঠ কিয়ামতের দিনে সফলতা বয়ে আনে। এটি পাঠ করলে মুমিন বান্দা আল্লাহ তায়ালার অশেষ প্রতিদান পাবে। তার আপাদমস্তক নূরে আলোকিত হবে। এমনকি তার কদম থেকে নিয়ে ঊর্ধ্ব গগন পর্যন্ত। ইবনে ওমর রা: নবীজী সা: থেকে বর্ণনা করেন, নবীজী সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার কদম থেকে নিয়ে ঊর্ধ্বাকাশ পর্যন্ত একটি নূর প্রদান করবেন। কিয়ামতের দিন তাকে আলোকময় করবেন। তার দুই জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব-১/২৯৮)
মক্কায় অবতীর্ণ এ সূরাটির মর্যাদা আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক। শুধু শুক্রবারই নয়; এ সূরা সাপ্তাহের যেকোনো দিন পাঠ করলে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের দাবিদার হওয়া যায়। এক হাদিসে এসেছে, নবীজী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম ১০টি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে ম্ক্তু থাকবে।’ (মুসলিম-৮০৯, আবু দাউদ-৪৩২৩)
এখানে একটি প্রশ্ন হয় যে, শুক্রবার এ সূরাটি কখন পড়লে হাদিসে বর্ণিত ফজিলত পাওয়া যাবে। উত্তর হলো- বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে নিয়ে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময়ে এ সূরাটি পড়া যাবে। ইবনে হাজার আসকালানি রহ: স্বীয় গ্রন্থ ‘আমালি’তে এমনটিই উল্লেখ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে শুরু হওয়া এবং শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত বহাল থাকার কারণ হলো আরবিতে নতুন দিন শুরু হয় সূর্যাস্ত থেকেই। এ হিসাবে বৃহস্পতিবার সূর্যাস্ত থেকে পরদিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুক্রবার দিনটি বাকি থাকে।
লেখক : শিক্ষার্থী, ইফতা বিভাগ, মাদরাসা মারকাযুল হিদায়াহ ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement