কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান
- আব্দুল্লাহ আল মামুন
- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ছয় হাজারেরও বেশি আয়াত রয়েছে পবিত্র কুরআনে, যার মধ্যে সহস্রাধিক আয়াত আছে বিজ্ঞান নিয়ে। আজকের আলোচনায় প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে কথা বলব। থিওরি বা তত্ত্ব নিয়ে কোনো কথা বলব না, কারণ আমরা জানি, অনেকসময় থিওরি বা তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হতে পারে। আল কুরআন যে পরিপূর্ণ সন্দেহমুক্ত কিতাব, সে বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমের সূরা আল বাকারায় অবিশ্বাসীদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন- ‘আর তোমরা যদি সে বিষয়ে সন্দেহের মধ্যে থাকো যা আমি নাজিল করেছি আমার বান্দা মুহাম্মদ সা:-এর ওপর, তাহলে অনুরূপ একটি সূরা রচনা করো এবং আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সাহায্যকারীদের ডাকো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। আর যদি তা করতে না পারো, আর নিশ্চয়ই তোমরা তা পারবে না, তাহলে ভয় করো সেই আগুনকে, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর, যা অবিশ্বাসীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।’ (সূরা আল বাকারাহ : ২৩-২৪)
আল কুরআনে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মহাবিশ্ব সৃষ্টির তত্ত্ব ‘মহাবিস্ফোরণ তত্ত্ব’-এর বর্ণনা (ইরম ইধহম ঞযবড়ৎু রহ ঃযব যড়ষু ছঁৎধহ) : কুরআনে বলা হয়েছে- ‘অবিশ্বাসীরা কি লক্ষ করে না যে, আসমানগুলো ও পৃথিবী একসাথে ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করেছি, আর আমি প্রত্যেক জীবন্ত বস্তুকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছি। তবুও কি তারা বিশ্বাস করবে না?’ (সূরা আল-আম্বিয়া-৩০)
আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, মহাবিশ্ব একটি একক বিন্দু থেকে বিস্তৃত হয়েছে (ইরম ইধহম)। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এটি মহাবিশ্বের সূচনাকে ব্যাখ্যা করে।
পাহাড়ের ভূমিকা : কুরআনে বলা হয়েছে- ‘তিনি পৃথিবীতে স্থির পর্বত স্থাপন করেছেন, যাতে তা তোমাদের নিয়ে কেঁপে না ওঠে।’ (সূরা আন-নাহল-১৫)
বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, পর্বতমালাসমূহ পৃথিবীর ভূত্বকের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে। পর্বতমালাগুলো মূলত ভূ-ত্বকের ভেতরে গভীর ভিত্তি বা শিকড়ের মতো কাজ করে যা ভূমিকম্প বা ভ-ূত্বকের অস্থিরতা হ্রাস করে।
আল কুরআনে ভ্রƒণতত্ত্বের বর্ণনা (ঊসনৎুড়ষড়মু রহ ঃযব যড়ষু ছঁৎধহ) : কুরআনে বলা হয়েছে- ‘আমি মানুষকে মিশ্রিত তরল থেকে সৃষ্টি করেছি, যাতে তাকে পরীক্ষা করি। পরে আমি তাকে বিন্যস্ত (নতুন) রূপে পরিণত করেছি এবং আমি নুতফা (বীর্য) থেকে আলাকা (রক্তের জমাট অংশ), অতঃপর আলাকা থেকে মুদগা (মাংসপিণ্ড) সৃষ্টি করেছি, অতঃপর মুগদা (মাংসপিণ্ড) থেকে ইজাম (হাড়গোড়) সৃষ্টি করেছি, অতঃপর ইজামে (হাড়গুলো) লাহম (মাংস) লাগিয়ে দিয়েছি।’ (সূরা আল-মুমিনুন : ১২-১৪)
ড. কিথ মুর (কবরঃয গড়ড়ৎব), একজন প্রখ্যাত ভ্রƒণ বিশেষজ্ঞ, এই তথ্যগুলো নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং বলেছেন, কুরআনে ভ্রƒণের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে তা আধুনিক ভ্রƒণবিদ্যার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পানি জীবনের উৎস : কুরআনে বলা হয়েছে- ‘আমি প্রত্যেক জীবন্ত বস্তুকে পানি থেকে সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা আল-আম্বিয়া-৩০)
আর বিজ্ঞান বলছে, পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তির জন্য পানি অপরিহার্য। জীবনের মৌলিক কার্যক্রমগুলো সম্পন্ন করতে পানি অপরিহার্য উপাদান হিসেবে কাজ করে।
আল কুরআনে মহাজাগতিক ঘটনাবলির বর্ণনা (ঈড়ংসড়ষড়মু রহ ঃযব যড়ষু ছঁৎধহ) : আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘সূর্যের জন্য সম্ভব নয় যে, সে চাঁদের নাগাল পাবে, আর রাতের জন্য (সম্ভব নয়) দিনের অগ্রবর্তী হয়; আর প্রত্যেকে তার নিজ নিজ কক্ষপথে বিচরণ করছে।’ (সূরা ইয়াসিন-৪০)
বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, সূর্য ও গ্রহগুলো তাদের নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান রয়েছে। এই ধারণা আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আকাশের সুরক্ষা স্তর : আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আমি পৃথিবীর আকাশকে এক সুরক্ষাময় ছাদ বানিয়েছি; কিন্তু তারা এটির নিদর্শনগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।’ (সূরা আল-আম্বিয়া-৩২)
আধুনিক বিজ্ঞান বলে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল আমাদেরকে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি ও মহাজাগতিক বিকিরণ থেকে রক্ষা করে। এটি একটি ‘সুরক্ষা স্তর’ হিসেবে কাজ করে।
কুরআনে উল্লিøøখিত বৈজ্ঞানিক তথ্য বলা হয়েছে সাড়ে চৌদ্দ শত বছর আগে আর বিজ্ঞান এগুলো প্রমাণ করেছে কিছু দিন আগে। এ থেকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়, আল কুরআন সর্বশক্তিমান, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ও সর্বজ্ঞানী মহান আল্লাহর বাণী।
লেখক : শিক্ষার্থী, ফলিত গণিত বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা