নামাজ পড়েও যারা জাহান্নামি
- নিজামুল ইসলাম নিজাম
- ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম ‘নামাজ’। আর নামাজ মহান আল্লাহর অন্যতম ফরজ বিধান। এই বিধান যথাযথভাবে পালন করে কেউ জান্নাতে চিরকাল সুখময় জীবন-যাপন করবে, আবার অনেকেই নামাজ আদায় করেও জাহান্নামের আগুনে অনন্তকাল জ্বলবে। যেসব কারণে নামাজিরা নামাজ আদায় করেও জাহান্নামে যাবে, তা হচ্ছে-
১. উদাসীনতা : অন্তরে আল্লাহর পূর্ণ ধ্যান-খেয়াল নিয়ে একনিষ্ঠতা ও বিনয়ের সাথে আল্লাহকে হাজির-নাজির জেনে নামাজ আদায় করা উচিত। কিন্তু অনেক মুসল্লি আছে, যারা দুনিয়াবি চিন্তা-চেতনা নিয়ে উদাসীনতার সাথে, বেখেয়ালি মনে নামাজ আদায় করে থাকে। যার কারণে নামাজ আদায় করেও তারা নিশ্চিত জাহান্নামে যাবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা স্পষ্টভাবে বলেন-‘দুর্ভোগ ওই সব সালাত আদায়কারীর জন্য, যারা উদাসীনতার সাথে বেখেয়ালি মনে নামাজ আদায় করে।’ (সূরা মাউন : ৩-৪)
২. অলসতা : হাদিসে জিবরাইলে রাসূল সা: বলেন, ‘যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে তখন তুমি এই খেয়াল করবে যে, তুমি আল্লাহকে দেখতেছ। আর যদি তুমি এমন ধ্যান-খেয়াল না করতে পারো, তাহলে মনে করবে; স্বয়ং মহান আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। আল্লাহ আমার দিকে তাকিয়ে আছেন এই ভয়ভীতি নিয়ে খুশু-খুজুর সাথে নামাজ আদায় করা উচিত। অথচ অনেক নামাজি আছে, যারা আল্লাহর ভয়ভীতির তোয়াক্কা না করে, নির্ভয়ে অলসতার সাথে গুরুত্বহীনভাবে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। যার ফলে নিশ্চিত সে সব নামাজি নামাজ আদায় করেও জাহান্নামে যাবে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন- ‘যখন তারা (মুনাফিকরা) নামাজে দাঁড়ায় তখন তারা শৈথিল্যের সাথে, অলসতার সাথে নামাজে দাঁড়ায়, শুধু লোক দেখানোর জন্য এবং তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ (সূরা নিসা-১৪২)
এ ধরনের নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না; বরং তাদের নামাজকে নোঙরা একটি কাপড়ে পেঁচিয়ে আসমান থেকে নামাজির মুখে নিক্ষেপ করা হয়।
৩. লোক দেখানো : আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে, যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সমাজের সাথে সর্বদা তাল মিলিয়ে চলে। যার ফলে ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় তারা সমাজকে খুশি করার উদ্দেশ্যে, লোক দেখানোর জন্য দুই-এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে নিজেকে বড় নামাজি বলে পরিচয় করে। কিন্তু তাদের অন্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকে না। তাই আল্লাহর সন্তুষ্টিবিহীন এই নামাজ তাদের কোনো উপকার দেবে না; বরং লোক দেখানো এই নামাজ তাদের জন্য নিশ্চিত ধ্বংসের কারণ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেছেন-‘ধ্বংস ওই সব নামাজি যারা উদাসীনতার সাথে, শুধু লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে।’ (সূরা মাউন : ৩, ৪ ও ৫)
দুনিয়াবি চিন্তায় মগ্ন হয়ে যারা উদাসীনতা, অলসতার সাথে কিংবা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতীত লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে, তারা সবাই কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে নামাজি বলে পরিচয় দিয়ে চরমভাবে লাঞ্ছিত, অপদস্থ হবে। তারা যখন মহান আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদেরকে নামাজি বলে পরিচয় দেবে, তখন মহান আল্লাহ তাদের সিজদা দিতে আদেশ করবেন কিন্তু শত চেষ্টা করেও তারা কোনোভাবেই মহান আল্লাহর সামনে সিজদা দিতে পারবে না। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন- ‘স্মরণ করুন, সে দিনের কথা যেদিন (মহান আল্লাহর) পায়ের গোছা উন্মোচিত করা হবে, সেদিন তাদের ডাকা হবে সিজদা করার জন্য, কিন্তু তারা সিজদা দিতে সক্ষম হবে না। তখন লজ্জায় তাদের দৃষ্টি অবনত হবে এবং চরম হীনতা তাদেরকে আচ্ছন্ন করবে।’ (সূরা ক্বালাম : ৪২ ও ৪৩)
লেখক : সিনিয়র শিক্ষক, সি পি ক্যাডেট মাদরাসা, চিলমারী, কুড়িগ্রাম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা