৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ২৯ রজব ১৪৪৬
`

ব্যবসাবাণিজ্য ও ইসলামের বিধান

-

ইসলাম একটি শাশ্বত, সর্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। সৃষ্টিজগতের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে ইসলাম সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেনি। এ বিষয়ে মহান আল্লাহর বাণী প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, আমার এ কিতাবে কোনো কিছুই অবর্ণিত রাখিনি। (সূরা মায়েদাহ ৫/৩৮)
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা: পাপ-পঙ্কিলতাময় এ পৃথিবীর সব অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বিশেষ করে মানবসভ্যতা ও সমাজবিনাশী সুদ, ঘুষ, জুয়া, লটারি, কালোবাজারি ও মজুদদারি। মানবজাতির মুক্তির দিশারি মহান আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ গ্রন্থ আল কুরআনের আলোকে হালাল ব্যবসাভিত্তিক একটি আদর্শ ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আল কুরআনে ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক সব বিষয়ে রয়েছে সঠিক ও কল্যাণকর দিকনির্দেশনা। ইসলামী জীবনব্যবস্থায় ব্যবসার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। সব ব্যবসায়ীর জন্য এ ফজিলত নয়। ইসলামের মূলনীতি অনুসরণ করে যারা ব্যবসা পরিচালনা করবে, তাদের জন্যই এ ফজিলত। নিম্নে ব্যবসার মূলনীতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. ব্যবসায় কারো ক্ষতি করা যাবে না
সবসময় ব্যবসায় মানুষের উপকার করার মন-মানসিকতা থাকতে হবে। কারো যেন ক্ষতি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ও অন্যের ক্ষতি করা কোনোটাই উচিত নয়। (ইবনে মাজাহ : ২৩৪১)
২. মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে না
মিথ্যা একটি মানবসমাজ বিধ্বংসী মহাপাপ। এটি নিন্দনীয় ও বড় ধরনের অপরাধ। ব্যবসায় মিথ্যার সংমিশ্রণ ক্ষতিকর। মহান আল্লাহ পাক বলেন, সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্যকে গোপন করো না। (সূরা বাকারাহ : ৪২)
৩. ওজনে কম বা বেশি করা যাবে না
নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য কাউকে কম দেয়া যাবে না। ওজনে কম দেয়া ইসলাম পরিপন্থী জঘন্য কাজ। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ঠগবাজদের জন্য ধ্বংস অনিবার্য (যারা ওজনে কম দেয়)। (সূরা মুতাফফিফিন : ১-৩)
৪. ব্যবসায় সুদ মেশানো যাবে না
ইসলামী জীবনব্যবস্থায় সুদ একটি জঘন্য অপরাধ। সুদ থেকে অবশ্যই মুসলমানদের দূরে থাকতে হবে। ইসলামে সুদ নিষিদ্ধ। সুদ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, যারা সুদ খায় তারা কিয়ামতের দিন দণ্ডায়মান হবে শয়তানের আসরে মোহাবিষ্টদের মতো। কারণ, তারা মনে করে ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) সুদের মতো। অথচ আল্লাহ পাক ব্যবসাকে হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে হারাম করে দিয়েছেন। (সূরা বাকারাহ : : ২৭৫)

৫. মজুদ/গুদামজাত করা যাবে না
ইসলামের দৃষ্টিতে পণ্য বা মালামাল মজুদ করা বড় ধরনের অপরাধ। অধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্য মজুদ করে বাজারে বিশৃঙ্খলাকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। মজুদদারির প্রভাবে দ্রব্যমূল্য অনেক বেড়ে যায়। এতে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় এবং ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। রাসূল সা: বলেন, পাপাচারী লোক ব্যতীত কেউ গুদামজাত করে না। (সহিহ মুসলিম : ৪০১৫)
সৎ ও হালাল উপার্জনের মধ্যে ব্যবসা অন্যতম। তাই প্রতিটি মানুষকে জীবন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সৎভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে। কালোবাজারি ও সিন্ডিকেট রোধে ব্যবসায়ী ও সচেতন সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
লেখক : শিক্ষক, দূড়াগাড়ী জিপিএস,
পীরগাছা, রংপুর


আরো সংবাদ



premium cement
১৫ দিন বাড়তে পারে আয়কর রিটার্ন জমার সময় ঢাকায় লেনদেন শুরু সূচকের উত্থানে, চট্টগ্রামে পতন মুন্সিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১৫ পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ১০ সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় পরিবর্তনে কী লাভ গ্রাহকের যুক্তরাষ্ট্রে অবতরণের সময় যাত্রীবাহী বিমানের সাথে হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির ঘরে বড় জয়েও অপেক্ষা বাড়ল রিয়াল মাদ্রিদের সমন্বিত অনলাইন সত্যায়ন ব্যবস্থাপনা চালু করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুবসমাজকে বৈশ্বিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারে পরিণত করাই লক্ষ্য : আসিফ নজরুল ভেনেজুয়েলার ৬ লাখ অভিবাসীকে ডিপোর্ট করছে যুক্তরাষ্ট্র

সকল