ইসলামের দৃষ্টিতে সমাজসেবার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
- ডা: মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
- ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০৫
জাতীয় সমাজসেবা দিবস ২০২৫। ২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পালিত হলো। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নেই পাশে কেউ যার’ সমাজসেবা আছে তার। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকায় বস্তি সমস্যা উদ্ভূত হয়। এ সমস্যার সমাধানে ১৯৫৫ সালে জাতিসঙ্ঘের পরামর্শে সমাজকল্যাণ কার্যক্রম শুরু হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সমাজকল্যাণ পরিদফতর। পরবর্তীতে কার্যক্রমের পরিধি বিস্তৃতির কারণে ১৯৭৮ সালে এই পরিদফতরকে সরকারের একটি স্থায়ী জাতি গঠনমূলক বিভাগ হিসেবে উন্নীত করা হয় এবং ১৯৮৪ সালে একে সমাজসেবা অধিদফতর হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ২০১২ সালের ৪ জুন বাংলাদেশ সরকার ২ জানুয়ারিকে সমাজসেবা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। পৃথিবীতে কল্যাণ ও হিতকর একটি কাজ সেবা। সেবার বিভিন্ন খাত থাকলেও সমাজসেবা অন্যতম। ইদানীং একটি মানসিক বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছি। যত আপ্তবাক্য ও হেদায়েতি বয়ান আমার মতো অনেক অভাজন পত্রিকার মাধ্যমে করে থাকেন, এর ভালো কিছু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আদৌ আমলে নেন কি না?
মানবজীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সমাজসেবা সীমাহীন গুরুত্বের দাবিদার। সাধারণত সমাজের অসুবিধাগ্রস্ত নি¤œশ্রেণীর মানুষের কল্যাণে গৃহীত সেবামূলক কার্যক্রমকে সমাজসেবা বলা হলেও আধুনিক ধারণামতে, সমাজসেবা হচ্ছে- সমাজে মানুষের নিরাপত্তা ও মঙ্গলার্থে গৃহীত যাবতীয় কার্যক্রমের সমষ্টি।
বর্তমানে সমাজসেবাকে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাতিসঙ্ঘের সংজ্ঞানুযায়ী, ‘ব্যক্তি ও তার পরিবেশের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানে সহায়তাদানের লক্ষ্যে গৃহীত ও সংঘটিত কাজের সমষ্টিই সমাজসেবা।
এ ছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও সমস্যা প্রতিরোধকল্পে গৃহীত ও সংঘটিত যাবতীয় কার্যক্রমও সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত।
ইসলামে সমাজসেবা কার্যক্রম কেবল মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং ইসলাম সব সৃষ্টির প্রতি দয়া ও কল্যাণ নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে। এ হিসেবে সমাজসেবামূলক সব কার্যক্রম ইসলামে ইবাদাত হিসেবে গণ্য। তবে এটি হতে হবে নিঃস্বার্থ সমাজসেবা। ইসলামে সমাজসেবার পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। যেমন, রোগীর চিকিৎসা করা, দুর্যোগপীড়িত মানুষের সেবা, যতœ ও সাহায্য-সহযোগিতা করা, কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, অনাহারী মানুষের আহার জোগানো, পিপাসার্ত মানুষের পিপাসা নিবারণ, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র প্রদান, অসহায়, নিঃস্ব ও দরিদ্রদের আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা করা, আশ্রয়হীন ও কর্মক্ষম ও প্রতিবন্ধী মানুষের পুনর্বাসন, দারিদ্র্য বিমোচন, রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি ও সেতু নির্মাণ, পরিবেশ উন্নয়ন ও বৃক্ষরোপণ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাস দূরীকরণ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি স্থাপন এবং জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান প্রভৃতি সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত। ইসলামের দৃষ্টিতে সমাজসেবা কার্যক্রম শুধু মানবিকই নয়; বরং একটি মৌলিক দায়িত্ব। মুসলিমদের জন্য এটি উম্মাহগত পরিচয়ও বটে।
শুধু তা-ই নয়, এ সমাজসেবা হচ্ছে ইসলামী দাওয়াতের ভূমিকাস্বরূপ। হজরত রাসূলে আকরাম সা: সমাজসেবার মাধ্যমে আরবের জনমানুষের হৃদয় ও মন জয় করেছিলেন- যা নবুয়তপ্রাপ্তির পর দাওয়াতি কাজে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
‘হিলফুল ফুজুল’ নামে কল্যাণ সংস্থার সেবাকর্ম দ্বারা নবী সা: এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন, লোকেরা তাকে ‘আল আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেছিল। নবীর সেবাধর্মী চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন হজরত খাদিজাতুল কুবরা রা: সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আল্লাহ আপনাকে কখনোই অপমানিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়স্বজনের সাথে সদ্ব্যবহার করেন, অসহায়-দুর্বলের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সাহায্য করেন। মেহমানের সমাদর করেন এবং দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করেন। (বোখারি)
হজরত রাসূলুল্লাহ সা: আদর্শকে সামনে রেখে আমাদের সমাজসেবামূলক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে হবে। বান্দার হক তথা আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখী মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা এবং আর্তমানবতার সেবা, সামাজিক সমস্যা দূরীকরণ ও সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে।
বস্তুত আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, দরিদ্র, নিঃস্ব, এতিম, নিরাশ্রয়, রোগী ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে যথাযথ সেবা করা খুবই সওয়াবের কাজ। আর এতে অমনোযোগী হওয়া আল্লাহপাকের অসন্তুষ্টি ও গোনাহর কাজ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহতে গুরুত্বসহকারে তাকিদ দেয়া হয়েছে। কুরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে ও কোনো কিছুকে তাঁর সাথে শরিক করবে না এবং বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, পথচারী এবং তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ দাম্ভিক ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না- যারা কৃপণতা করে, মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দিয়েছেন, তা গোপন করে।’ (সূরা নিসা : ৩৬-৩৭)
হজরত রাসূলে আকরাম সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তোমার ভাইয়ের প্রতি তোমার হাসিমুখে তাকানো একটি সদকা, কাউকে ভালো কাজ করার জন্য তোমার নির্দেশ দেয়া একটি সদকা, কাউকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখাও তোমার একটি সদকা, পৃথিবীতে পথভ্রষ্ট ব্যক্তিকে সুপথ দেখানোও তোমার জন্য একটি সদকা, যে ব্যক্তি চোখে কম দেখে তাকে সাহায্য করাও তোমার জন্য একটি সদকা, যদি রাস্তা থেকে পাথর-কাঁটা ও হাড় সরিয়ে দাও তা-ও তোমার জন্য একটি সদকা, তোমার বালতির পানি দ্বারা তোমার ভাইয়ের বালতি ভরে দেয়াও একটি সদকা।’ (সুনানে তিরমিজি)
অতএব, ইহকালের শান্তি ও পরকালীন নাজাতের জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই সাধ্যমতো সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে হবে। এ সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, তা নিচে আলোকপাত করা হলো-
বিশেষ তহবিল গঠন করে দেশের দানবীর ও শুভাকাক্সক্ষীদের কাছ থেকে জাকাত, ওশর, ফিতরা, কোরবানির চামড়া ও ত্রাণসামগ্রী বা আপৎকালীন ব্যয় বাবদ অর্থ আদায় করে বিশেষ তহবিলে জমা করতে হবে।
সমাজসেবা খাতের জন্য আদায়কৃত অর্থ-সামগ্রী কেন্দ্রীয় বিশেষ তহবিলে পাঠাতে হবে। কেন্দ্রীয় সংগঠন শরিয়তসম্মত উপায়ে সমাজসেবামূলক কাজে এ অর্থ ব্যয় করবে। পাশাপাশি আইন সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করে এর মাধ্যমে ন্যায্য অধিকার রক্ষায় বিচারপ্রার্থীকে আইনি সহায়তা দিতে হবে। শিক্ষা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে। ব্যক্তিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিরক্ষর লোকদের অক্ষরজ্ঞান ও সহিহ-শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত, জরুরি মাসায়েল শেখার ব্যবস্থা করতে হবে।
গ্রামগঞ্জের মানুষের সবসময় কাজ থাকে না। তাই এ রকম একটি মাস বেছে নিয়ে কোনো মসজিদে মাসব্যাপী এ ধরনের বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা যায়। মাগরিব বা এশার নামাজের পরে সম্ভব হলে সপ্তাহে, প্রতিদিন অথবা অন্তত তিন বা চার দিন ক্লাস নেয়া যেতে পারে। নিজেদের মধ্য থেকে অভিজ্ঞ কোনো দায়িত্বশীল ক্লাস নেবেন অথবা অন্য কোনো উপযুক্ত ব্যক্তিকে দিয়েও ক্লাস নেয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে হজরত রাসূলে আকরাম সা:-এর একটি হাদিসে এসেছে, ‘হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত, একদিন নবী সা: মসজিদে নববীতে দু’টি মজলিসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন ইরশাদ করলেন, এ দুটি দলই ভালো কাজে রত আছে, তবে একদল অন্য দলের চেয়ে উত্তম। এ দল আল্লাহকে ডাকছে এবং তার দিকে মনোনিবেশ করছে। আল্লাহ যদি ইচ্ছা করেন তো উত্তম প্রতিদান দেবেন, আর যদি ইচ্ছা করেন কিছু না-ও দিতে পারেন। আর ওই দল ধর্মতত্ত্ব ও জ্ঞান আহরণ করছে এবং অজ্ঞদের শিক্ষা দিচ্ছে, তারা উত্তম। বস্তুত আমি নিজেও শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। এই বলে তিনি শিক্ষার্থী দলের সাথে বসে পড়লেন।’ (দারেমি)
দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করে অসহায় রোগীদের মধ্যে ফ্রি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা করা যেতে পারে। খুব স্বল্প ব্যয়ে হোমিওপ্যাথি ওষুধপথ্যের সাহায্যে দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করা যায়। তা ছাড়া রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোসহ চিকিৎসকরা ফ্রি-ফ্রাইডে ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সহজেই এ কাজ করতে পারেন।
এমনকি বৃক্ষরোপণও একটি উত্তম সেবা ও সওয়াবের কাজ। রাস্তার পাশে ও পতিত জমিতে গাছ লাগিয়ে সৃষ্টিকুলের খেদমত করা যায়। আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যদি কোনো মুসলমান একটি বৃক্ষ রোপণ করে অথবা শস্য জন্মায় এরপর তা থেকে কোনো মানুষ, পাখি বা পশু (ফল-ফসল) ভক্ষণ করে তাহলে সেটি তার জন্য সদকাস্বরূপ গণ্য হবে।
আর মহানবী সা: সামাজিক সেবাকে জিহাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি একদিন বলেন, ‘যারা বিধবা এবং গরিবের উন্নতির জন্য কাজ করে তারাই যেন আল্লাহর পথে জিহাদের মতোই কাজ করল।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘তোমরা দান করো, সাহায্য করো এবং নিজেদের আগুন থেকে রক্ষা করো, সেদিন পর্যন্ত যখন তোমরা সামান্যতম সময়ও পাও।’
মহানবী সা: তাঁর অনুসারীদের বিভিন্ন সময় দান ও বদান্যতা সম্পর্কে উৎসাহিত করতেন। তিনি বলেছেন, ‘যে কেউ কোনো ঈমানদারের দুঃখ দূর করবে আল্লাহ বিচারের দিন তার একটি কষ্ট লাঘব করে দেবেন। যে কেউ কোনো গরিব বা অভাবী মানুষের অভাব দূর করবে আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার অনেক সমস্যা দূর করে দেবেন। যে কেউ কোনো মুসলমানকে আশ্রয় দেবে আল্লাহ এখানে ও পরপারে তাকে আশ্রয় দেবেন। যে তার ভাইকে সাহায্য করে আল্লাহও তাকে সাহায্য করবেন।’
আল্লাহর নবী সা:-এর এসব উদ্দীপনামূলক ও গঠনমূলক বক্তব্য শুনে সাহাবিরা অভাবী ও অসহায় লোকদের সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন।
পরিশেষে বলতে চাই, সমাজসেবা একটি ইবাদত। এ সেবার মাধ্যমে সমাজে হিংসা-বিদ্বেষের মতো অধঃপতিত কাজ থেকে বেঁচে থাকা যায়। তা ছাড়া এ সেবা কার্যক্রম প্রত্যেকেই চালিয়ে যেতে পারে। আইনজীবীরা আইন মারফত মজলুমের সাহায্য করে, তাদের মামলা-মোকদ্দমায় বিনা পারিশ্রমিকে সহায়তা করতে পারে। ডাক্তাররা প্রাথমিক ওষুধপথ্যের মাধ্যমে এবং ফ্রি চিকিৎসা ও অতিরিক্ত ফি না নিয়ে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারে। এ রকম প্রতিটি সেক্টর থেকেই নিজ নিজ পরিসরে এ মহান সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। কুরআন কারিমে ঈমানের সাথে যে আমালে সালেহকে সংযুক্ত করা হয়েছে অধিকাংশ স্থানে- তা বাস্তবায়নের জন্য অন্যতম প্রধান মাধ্যম এটি। তবে তার মধ্যে ঈমান ও ইখলাস থাকতে হবে। ইবাদাত কবুলের সব শর্তই এখানে প্রযোজ্য হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের একমাত্র তার সন্তুষ্টির জন্য সব কাজ করার তাওফিক দিন। আর মহান আল্লাহ আমাদের ভালোবেসে সৃষ্টি করেছেন। অসুস্থ মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ালে আল্লাহ খুশি হন। আসুন আমরা অসুস্থ মানুষকে সেবা করি। অসহায়দের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। আমিন।
লেখক : কলাম লেখক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা