কুরআনে আল্লাহ তায়ালার পরিচয়
- জুবায়ের বিন মামুন
- ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। এই বিশ্বজগতের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্বের একমাত্র অধিপতি। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তিনিই প্রথম, যার অস্তিত্বের কোনো প্রারম্ভিকতা নেই। তিনিই শেষ, যার অস্তিত্বের কোনো শেষ নেই। তাঁর সত্তাগত অনেক গুণ রয়েছে। নিম্নে কুরআনের আলোকে তা উল্লেখ করা হলো :
তিনি এক ও অদ্বিতীয় : ‘আজ রাজত্ব কার? প্রবল প্রতাপশালী এক আল্লাহর।’ (সূরা গাফির-১৬) ‘আর তোমাদের ইলাহ এক। তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু।’ (সূরা বাকারা-১৬৩)
তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই : কুরআনে ইরশাদ রয়েছে- ‘আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই, আর ফেরেশতা ও ন্যায় দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দেন যে তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সূরা আলে ইমরান-১৮) অন্যত্র বর্ণিত- ‘আমি তো নূহকে তার কওমের কাছে প্রেরণ করেছি। এরপর সে বলেছে, হে আমার কওম, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। নিশ্চয় আমি তোমাদের মহাদিনের আজাবের ভয় করছি।’ (সূরা আরাফ-৫৯) অন্যত্র বর্ণিত-‘আর (প্রেরণ করলাম) আদ জাতির কাছে তাদের ভাই হুদকে। সে বলল, হে আমার কওম, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তোমরা কি তাকওয়া অবলম্বন করবে না’? (সূরা আরাফ-৬৫) অন্যত্র বর্ণিত- ‘আর সামুদের কাছে (প্রেরণ করেছি) তাদের ভাই সালিহকে। সে বলল, হে আমার কওম, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো (সত্য) ইলাহ নেই।’ (সূরা আরাফ-৭৩) অন্যত্র বর্ণিত- ‘আর স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম স্বীয় পিতা ও তার কওমকে বলেছিল, তোমরা যেগুলোর ইবাদত করো, নিশ্চয় আমি তাদের থেকে সম্পর্কমুক্ত।’ (সূরা জুখরুফ-২৬)
তিনি সমকক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঊর্ধ্বে : ‘আর তাঁর কোনো সমকক্ষও নেই।’ (সূরা ইখলাস-৪) যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে করেছেন বিছানা, আসমানকে ছাদ এবং আসমান থেকে নাজিল করেছেন বৃষ্টি। এরপর তার মাধ্যমে উৎপন্ন করেছেন ফল-ফলাদি, তোমাদের জন্য রিজিকস্বরূপ। সুতরাং তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না।’ (সূরা বাকারা-২২) ‘তিনি পবিত্র, তারা যাদের শরিক করে তিনি তাদের ঊর্ধ্বে।’ (সূরা জুমার-৬৭) ‘আর তোমাদের ইলাহ এক, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু।’ (সূরা বাকারা-১৬৩) ‘তারা যা ব্যক্ত করে তোমার রব তা থেকে পবিত্র মহান, সম্মানের মালিক।’ (সূরা সাফফাত-১৮০)
তিনি অনাদি-অনন্ত : ‘তিনিই প্রথম ও শেষ এবং প্রকাশ্য ও গোপন; আর তিনি সব বিষয়ে সম্যক অবগত।’ (সূরা হাদিদ-৩) ‘তাঁর চেহারা (সত্তা) ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল, সিদ্ধান্ত তাঁরই এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।’ (সূরা কাসাস-৮৮) ‘পৃথিবী পৃষ্ঠে যা আছে সবই ধ্বংসশীল। কিন্তু আর থেকে যাবে শুধু মহামহিম ও মহানুভব তোমার রবের চেহারা।’ (সূরা রহমান : ২৬-২৭)
তিনি অমর-অবিনশ্বর : ‘আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত ধারক।’ (সূরা আলে ইমরান-২) ‘আর তুমি ভরসা করো এমন চিরঞ্জীব সত্তার উপর যিনি মরবেন না। তাঁর প্রশংসায় তাসবিহ পাঠ করো। তাঁর বান্দাদের পাপ সম্পর্কে খবর রাখার ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট।’ (সূরা ফুরকান-৫৮) ‘আর চিরঞ্জীব, চিরপ্রতিষ্ঠিত সত্তার সামনে সবাই অবনত হবে। আর সে অবশ্যই ব্যর্থ হবে যে জুুলুম বহন করবে।’ (সূরা ত্বহা-১১১)
অসাদৃশ্যমান শক্তিতে সক্ষম : ‘তাঁর মতো কিছু নেই আর তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।’ (সূরা শুআরা-১১) ‘তাঁর সমকক্ষ কেউ নয়’। (সূরা ইখলাস-৪) ‘তিনি তা-ই করেন যা চান’। (সূরা বুরুজ-১৬) ‘আল্লাহ তো এমন নন যে, আসমানসমূহ ও জমিনের কোনো কিছু তাকে অক্ষম করে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সূরা ফাতির-৪৪) ‘আর বলো, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি, রাজত্বে তাঁর কোনো শরিক নেই এবং অপমান থেকে বাঁচতে তাঁর কোনো অভিভাবকের দরকার নেই। সুতরাং তুমি পূর্ণরূপে তাঁর বড়ত্ব ঘোষণা করো।’ (সূরা বনি ইসরাইল-১১১)
তিনি সজ্ঞানে সর্বজ্ঞাত : নিশ্চয় আল্লাহ, তাঁর কাছে গোপন থাকে না কোনো কিছু জমিনে এবং না আসমানে।’ (সূরা আলে ইমরান-৫) ‘বলো, তোমরা যদি তোমাদের অন্তরসমূহে যা আছে তা গোপন করো অথবা প্রকাশ করো, আল্লাহ তা জানেন। আর আসমানসমূহে যা কিছু আছে ও জমিনে যা আছে, তাও তিনি জানেন। আল্লাহ সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।’ (সূরা আলে ইমরান-২৯) ‘আর আল্লাহ জানেন তোমরা যা গোপন করো এবং যা প্রকাশ্যে ঘোষণা করো।’ (সূরা নাহল-১৯) ‘যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? অথচ তিনি অতি সূক্ষ্মদর্শী, পূর্ণ অবহিত।’ (সূরা মুলক-১৪)
তিনি মানবীয় ধ্যান-ধারণার ঊর্ধ্বে : ‘আর আমি তোমাদের উপদেশ দিতে চাইলেও আমার উপদেশ তোমাদের কোনো উপকারে আসবে না, যদি আল্লাহ তোমাদের বিভ্রান্ত করতে চান। তিনি তোমাদের রব এবং তাঁর কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।’ (সূরা হুদ-৩৪) ‘বলো, আল্লাহ থেকে কে তোমাদেরকে রক্ষা করবে যদি তিনি তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে চান? অথবা তিনি তোমাদের রহমত দান করতে ইচ্ছা করেন (কে তোমাদের ক্ষতি করবে)। আর তারা আল্লাহ ছাড়া তাদের কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।’ (সূরা আহজাব-১৭) ‘তিনি যা ইচ্ছা করেন তা-ই করে থাকেন।’ (সূরা বুরুজ-১৬) ‘তিনি তাদের আগের ও পরের সব কিছুই জানেন, কিন্তু তারা জ্ঞান দিয়ে তাঁকে বেষ্টন করতে পারবে না।’ (সূরা ত্বহা-১১০) আর যা আসমানসমূহে আছে এবং যা আছে জমিনে সব আল্লাহরই। আর আল্লাহ সব কিছুকে পরিবেষ্টনকারী।’ (সূরা নিসা-১২৬)
তিনি রিজিক ও মৃত্যুদাতা : ‘আর জমিনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণীর রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহরই এবং তিনি জানেন তাদের আবাসস্থল ও সমাধিস্থল। সব কিছু আছে স্পষ্ট কিতাবে।’ (সূরা হুদ-৬ ‘নিশ্চয় আল্লাহই রিজিকদাতা, তিনি শক্তিধর, পরাক্রমশালী।’ (সূরা জারিয়াত-৫৮) ‘বলো, আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্যকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করব, যিনি আসমানসমূহ ও জমিনের স্রষ্টা? তিনি আহার দেন, তাঁকে আহার দেয়া হয় না।’ (সূরা আনআম-১৪) ‘অভাব-অনটনের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। আমিই তাদের রিজিক দেই এবং তোমাদেরকেও।’ (সূরা বনি ইসরাইল-৩১)
সব কিছু তাঁরই ইচ্ছাধীন : ‘আর আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে তোমাদের ইচ্ছা কার্যকর হবে না; নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রাজ্ঞ।’ (সূরা দাহর-৩০) ‘আর তোমরা ইচ্ছা করতে পারো না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা করেন।’ (সূরা তাকভির-২৯) ‘আর তারা বলে, আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন। তিনি অতি পবিত্র; বরং আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে সবই তাঁর এবং সব কিছুই তাঁর একান্ত অনুগত।’ (সূরা বাকারা-১১৬)
সৃষ্টিজীবের ভাগ্য নির্ণায়ক : ‘নিশ্চয় আমি সব কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাণ অনুযায়ী।’ (সূরা কামার-৪৯) ‘যার অধিকারে রয়েছে আসমান ও জমিনের মালিকানা; আর তিনি কোনো সন্তান গ্রহণ করেননি এবং সার্বভৌমত্বে তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। এরপর তা নিপুণভাবে নিরূপণ করেছেন।’ (সূরা ফুরকান-২) ‘আল্লাহ জানেন যা প্রতিটি নারী গর্ভে ধারণ করে এবং গর্ভাশয়ে যা কমে ও বাড়ে। আর তাঁর কাছে প্রতিটি বস্তু নির্দিষ্ট পরিমাণে রয়েছে।’ (সূরা রাদ-৮) ‘আর প্রতিটি বস্তুরই ভাণ্ডারসমূহ রয়েছে আমার কাছে এবং আমি তা অবতীর্ণ করি কেবল নির্দিষ্ট পরিমাণে।’ (সূরা হিজর-২১)
(বাকি অংশ আগামী দিন)
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা