মা-বাবা-সন্তানের পারস্পরিক অধিকার
- আদিয়াত উল্লাহ
- ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি মানুষের জন্য তার বাবা ও মাকে তাঁর মহান রহমতের নিদর্শনস্বরূপ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। মা-বাবার কল্যাণেই প্রতিটি মানুষ পৃথিবীতে আগমন করে এবং তাদের লালন-পালনে বড় হয়ে সে জীবনযাপন করতে শুরু করে। এ কারণেই কুরআনের বহু আয়াত ও বহুসংখ্যক হাদিসে মা-বাবার হক সম্পর্কে বিভিন্নভাবে ইরশাদ হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-“আর (হে নবী!) আপনার প্রভু এই মর্মে রায় দিচ্ছেন যে, তিনি ছাড়া আর কারো ইবাদত করবে না এবং মা-বাবার সাথে সদাচরণ করবেন। যদি আপনার কাছে তাদের কেউ বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হয় তাহলে তাদের ‘উফ’ বলবেন না এবং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করবেন না এবং তাদের উত্তম কথা বলুন। আর তাদের জন্য রহমতের ডানা প্রসারিত করে দিন আর বলুন, ‘হে আমার প্রভু, আপনি তাদের প্রতি তেমনি রহম করুন যেমন তারা আমাকে শিশুকালে লালন-পালন করেছেন।” (সূরা বনি ইসরাইল : ২৩-২৪)
হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, এক লোক এসে রাসূলুল্লাহ সা:-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল, আমার সর্বোত্তম সাহচর্যের বেশি অধিকারী কে? তিনি বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি বলল এরপর কে? তিনি বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি বলল এরপর কে? তিনি বললেন, ‘তোমার মা’। লোকটি বলল এরপর কে? তিনি বললেন, ‘তোমার বাবা’। (বুখারি)
মা-বাবার কাছে সন্তানদের অধিকার : কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের বিভিন্ন স্থানে সন্তানদের প্রতি মা-বাবার দায়িত্ব এবং দুনিয়াতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সন্তুষ্টি মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা ও আখিরাতে তাদেরকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচানোর জন্য বহু প্রকার করণীয় দায়িত্ব ও কর্তব্যের আদেশ এসেছে। বর্তমান কুরআন-হাদিসের আলোকে মা-বাবার কাছে সন্তানদের অধিকার বিষয়ে কথা বলা, সন্তানদের প্রতি মা-বাবার অধিকারের বিষয়ে কথা বলার মতোই গুরুত্ববহ।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে মা-বাবার কাছে সন্তানের অধিকারসমূহ : ১. জন্মের পরপরই মৃদুস্বরে ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দেয়া।
২. সুন্দর নাম রাখা।
৩. ছেলে সন্তানের জন্য দু’টি এবং মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল আকিকা করা।
৪. শিশুকে পুরো দুই বছর বুকের দুধ পান করানো। (সূরা বাকারা-২৩৩)
৫. সন্তানের লালনপালন ও ব্যয়ভার বহন করা।
৬. কন্যা সন্তানদের ব্যয়ভার বহনে অধিক গুরুত্ব দেয়া।
৭. ধর্ম শেখানো। (ইবনে মাজাহ-৩৬৭১)
৮. সন্তানদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করা এবং স্নেহ করা।
৯. সব সন্তানের প্রতি সমতা ও ন্যায় বজায় রাখা।
১০. বিয়ের উপযুক্ত হলে বিয়ের ব্যবস্থা করা।
সন্তানের কাছে মা-বাবার হক : কুরআন ও হাদিসের আলোকে সন্তানের উপর মা-বাবার ১৪টি হক রয়েছে। এদের মধ্যে জীবিত থাকাকালীন হক সাতটি এবং মৃত্যুর পর হক সাতটি।
জীবিত থাকাকালীন সাতটি হক :
১. তাদের সম্মান রক্ষা করা।
২. তাদের ভালোবাসা।
৩. তাদের আনুগত্য করা।
৪. তাদের খেদমত করা।
৫. তাদের অভাব মোচন করা।
৬. তাদের আরাম-আয়েশের প্রতি যতœবান থাকা।
৭. মাঝে মধ্যে তাদের দেখতে যাওয়া।
মৃত্যুর পর সাতটি হক :
১. তাদের জন্য মাগফিরাতের দোয়া করা।
২. তাদের উদ্দেশে সৎকর্মের সাওয়াব প্রেরণ করা।
৩. তাদের বন্ধুমহল ও নিকটতমদের সম্মান করা।
৪. তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের সাহায্য-সহযোগিতা করা।
৫. তাদের ঋণ ও আমানত পরিশোধ করা।
৬. তাদের শরিয়তসম্মত সব ওসিয়ত কার্যকর করা।
৭. মাঝেমধ্যে তাদের কবর জিয়ারত করা।
লেখক : শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা