ইসলামে আমানতদারি
- মীযান মুহাম্মদ হাসান
- ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
সময়ের প্রয়োজনে মানুষ তার টাকাপয়সা অর্থ-সম্পদ ও দামি মূল্যবান অনেক বস্তুসামগ্রী মানুষের কাছে গচ্ছিত রাখেন। দামি গহনা বা অলঙ্কারও এক সময় হেফাজতের জন্য কারো সিন্দুকে জমা রাখা হতো। আধুনিক যুগে ব্যাংকে টাকাপয়সা অর্থ গচ্ছিত রাখা হয়। যাতে করে টাকাপয়সা হেফাজতে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে জমি বন্ধক ও সম্পদ জমা রাখারও প্রচলন আছে। উদ্দেশ্য হলো- অর্থ-সম্পদ প্রভৃতি হেফাজত করা। চুরি, ডাকাতি ও লুট হওয়ার ভয়েই সাধারণত এভাবে অর্থ সম্পদ জমা রাখা হয়, যাতে দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করা যায়।
কিন্তু খুব হতাশার কথা হচ্ছে, এ জাতীয় আমানত গ্রহণকারী বা বন্ধকগ্রহীতা; গচ্ছিত এ অর্থ-সম্পদ তার মূল মালিককে ফিরিয়ে দিতে গড়িমসি করেন। বিভিন্ন ওজর আপত্তি বা বাহানা তালাশ করেন, যা কখনো কারো জন্য কাম্য নয়। এ জন্য আমানত বা বন্ধক গ্রহণকারীর কর্তব্য হলো- নির্দিষ্ট বৈধ শর্তসাপেক্ষে পাওনাদারকে তার প্রাপ্য হক যথাসময়ে বুঝিয়ে দেয়া। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তোমাদের আদেশ করছেন, গচ্ছিত বিষয় তার অধিকারীকে অর্পণ করো।’ (সূরা নিসা-৫৮)
উল্লিখিত আয়াত আমাদের গচ্ছিত অর্থ-সম্পদ ও আমানত তার প্রাপকের হাতে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে পরিষ্কার নির্দেশনা প্রদান করে। বুখারির বর্ণনায় এসেছে, আমানতের খেয়ানত করা তথা আত্মসাৎ করা মুনাফেকি। কাজেই এমন আচরণ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। যে-সব কারণে মুনাফিক হতে হয়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আমানতের খেয়ানত করা। আর মুনাফিকের ঠিকানা হচ্ছে জাহান্নাম। সাহাবি হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেন, ‘তোমাদের পর এমন লোকেরা আসবে। যারা খিয়ানত করবে। আমানত রক্ষা করবে না।’ (বুখারি)
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- আল্লাহর রাসূল সা: বলেন, ‘মানুষের নিকট এমন এক ধোঁকার যুগ আসবে, যখন মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদীরূপে এবং সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদীরূপে গণ্য করা হবে। খেয়ানতকারীকে আমানতদার মনে করা হবে। আর আমানতদার আমানতের মধ্যে খেয়ানত করবে। যখন জনসাধারণের ব্যাপারে তুচ্ছ লোক মুখ চালাবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)
এ হাদিসটিতে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। যেখানে নবী সা: আমাদেরকে বলেছেন, মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদী বলে মনে করা হবে। বাস্তবে বর্তমানে প্রায় তাই হচ্ছে। একইভাবে মানুষের খেয়ানত আত্মসাৎকারীকেই আমানতদার ভাবা হচ্ছে। আর অনেক আমানতদারও আমানতের মধ্যে খেয়ানত করছেন, যা কখনো উচিত নয়। এ জন্য আমাদের কর্তব্য হলো- প্রত্যেকের পাওনা হক তার প্রাপককে যথাসময়ে বুঝিয়ে দেয়া।
লেখক : খতিব, ভবানীপুর মাইজপাড়া হক্কানি জামে মসজিদ, গাজীপুর
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা