১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

সিংগাইরে ভাষা শহীদ রফিক সেতুর টোল বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

মানিকগঞ্জের সিংগাইর-ঢাকার সাভার উপজেলা সংযোগস্থলে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত ভাষা শহীদ রফিক সেতুর টোল আদায় বন্ধে ফুঁসে ওঠেছে সর্বস্তরের মানুষ। টোল আদায় স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে টোল পয়েন্টে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরসহ বিক্ষোভ -সমাবেশ করেছে আন্দোলনকারীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিংগাইর-হরিরামপুর ও সাভার উপজেলার তেতুঁলঝোড়া এলাকার লোকজন পৃথক মিছিল নিয়ে টোল প্লাজায় জড়ো হন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে টোল আদায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এতে সড়কটিতে প্রায় দেড় ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় জনদুর্ভোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। অবশ্য অ্যাম্বুলেন্স ও বিমানবন্দরের যাত্রীদের চলাচলে শিথিল করা হয়।

এদিকে, টোল বন্ধের আন্দোলনের খবর পেয়ে সকালেই গা-ঢাকা দেয় ইজারাদার লুৎফর রহমানের লোকজন। বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা টোল প্লাজার চারটি অফিস ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে।

এছাড়া একই দিন দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ভাষা শহীদ রফিক সেতুর টোল বন্ধ আন্দোলনের সমন্বয়কারী ইঞ্জিনিয়ার আবু সায়েমের সভাপত্বিতে প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস শেখ সালাউদ্দিন, মানিকগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওমর ফারুক, সিংগাইর উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, মাওলানা মাসুদুর রহমান আইয়ুবী, ইঞ্জিনিয়ার রমিজ উদ্দিন ও ছাত্রনেতা মাহফুজ আহমেদ।

এ সময় হেফাজত ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, জায়গীর দরবার শরীফের পীর দ্বীন মোহাম্মদ ও যুবদল নেতা মো: রমজান আলীসহ অসংখ্য ওলামায়ে কেরামগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবাদ সভায় বক্তারা টোল আদায়ের নামে স্থায়ীভাবে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান।

ইঞ্জিনিয়ার আবু সায়েম বলেন, ‘এ নদীর সংযোগস্থল সাভারের নামাবাজার ও কেরানীগঞ্জের ইটাভাড়ায় আরো দুইটি ব্রিজ রয়েছে। ওই দুই সেতুতে টোল আদায় হচ্ছে না। অথচ শহীদ রফিকের নামের এ ব্রিজটিতে দীর্ঘ ২৪ বছর ধরে অন্যায়ভাবে টোল আদায় করা হচ্ছে। হিসেব অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণ ব্যয়ের ১২ গুণ টাকা এ পর্যন্ত আদায় হয়েছে।

অতিসত্ত্বর টোল আদায়ের নামে হয়রানি বন্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ ও কামনা করেন আন্দোলনকারীরা। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ও আন্দোলনকারীদের সহনশীল মনোভাবে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষা শহীদ রফিক সেতুটি উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে টোল আদায় অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন সময় স্থানীয় সংসদ সদস্যরা সেতুটির টোল আদায় বন্ধে সংসদে বক্তব্য দিলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই। তবে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয় সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুলের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে থ্রী হুইলার যানবাহনের বেলায় টোল বন্ধ হলেও বছর না যেতেই আবার তা শুরু হয়।


আরো সংবাদ



premium cement