রূপগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা, আহত কন্যাশিশুর হাসপাতালে মৃত্যু
- নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
- ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১৭
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে রোকসানা বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের কোপে তার আহত মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসীরও (৫) হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জান্নাতুল ফেরদৌসীর মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার সকালে রূপগঞ্জের তেতলাবো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রোকসানা বেগম বরগুনা জেলার আমতলী থানাধীন তারিকাটা এলাকার শাহজাহান হাওলাদারের মেয়ে। অভিযুক্ত নুরুজ্জামান আনিছ বরিশাল সদর এলাকার বাসিন্দা। তারা রূপগঞ্জের তেতলাবো এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
স্থানীয়রা জানান, নয় বছর আগে বরিশাল সদর এলাকার নুরুজ্জামান আনিছের সাথে বিয়ে হয় রোকসানার। তাদের উভয়েরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তারা তেতলাবো এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। নুরুজ্জমান স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গত কিছুদিন ধরেই নুরুজ্জমান তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়া করার সন্দেহ করছিলেন।
এ নিয়ে প্রায়সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। গত বৃহস্পতিবার রাতেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। সেই ঝগড়ার জের ধরে শনিবার সকালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রোকসানাকে হত্যা করে পালিয়ে যান নুরুজ্জামান। পাঁচ বছরের মেয়েকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন তিনি। পরে জান্নাতুলকে উদ্ধার করে ঢামেকে আনা হয়। সেখানে বিকেল ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো: ফারুক শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।
হত্যার পর নুরুজ্জামান আনিছ নিহতের ছোটভাই হাসানকে মোবাইলে ফোন করে জানান, তার বোন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেছে, তাড়াতাড়ি যেন বাসায় আসে। পরে ছোট ভাই হাসানসহ আশপাশের লোকজন এসে ঘরের ভেতর মেঝেতে রোকসানার লাশ পড়ে থাকতে দেখে।
লাশের পাশে গুরুতর জখম শিশুকে তারা দেখতে পেয়ে নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘নয় বছর আগে বরিশাল সদর এলাকার নুরুজ্জামান আনিছের সাথে বিয়ে হয় রোকসানার। তাদের উভয়ের এটা দ্বিতীয় বিয়ে। তারা রপগঞ্জের তেতলাবো এলাকার জাহাঙ্গীরে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। নুরুজ্জমান স্থানীয় একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করেন।’
ওসি জানান, কিছুদিন ধরে স্ত্রী রোকসানা মোবাইল ফোনে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়েছে এমন সন্দেহ করে আসছেন স্বামী নুরুজ্জামান আনিছ। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এদিকে এর জের ধরে আজ ভোর ৫টার দিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে রোকসানাকে। এ সময় তাদের পাঁচ বছরের শিশু জান্নাতকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে ঢামেক হাসপাতালে সে মারা যায়। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।