১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, ৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

গাজীপুরে হাসিনা-কাদেরসহ ৮৫ জনের নামে আরো এক হত্যা মামলা

হাসিনা-কাদের - ছবি : নয়া দিগন্ত

গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজমিস্ত্রী মঞ্জু মিয়া (৪৩) হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ আওয়ামী লীগ ও জাতীয়পার্টির ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে গাছা থানায় আরো একটি মামলা করা হয়েছে।

মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৫০০-৭০০ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন নিহতের বাবা।

সোমবার (২৬ আগস্ট) ওই থানার (অফিসার ইনচার্জ) ওসি জিয়াউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহত মো: মঞ্জু মিয়া (৪৩) রংপুর জেলার পীরগাছা থানার জুয়ান এলাকার মো: ইনছার আলীর (৬৮) ছেলে।

তিনি গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন বড়বাড়ী এলাকার জয়বাংলা রোডে মোয়াজ্জেম সরকারের বাড়িতে স্ত্রীসহ বাবার সাথে ভাড়া থেকে এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।

গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, গত ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। মামলায় মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রসহ বেআইনি জনতাবদ্ধে মারপিট করত গুরুতর জখম করাসহ গুলি করে মানুষ খুন করা ও হুকুম দেয়ার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সাথে রংপুরের আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদেরও আসামি করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে উলেখযোগ্যরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (৭৬), রংপুরের পীরগাছা-কাউনিয়া এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য টিপু মুন্সি (৭৪), সাবেক মন্ত্রী-এমপি মশিউর রহমান রাঙ্গা (৭৩), গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান (৭০), সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহসান রাসেল (৪৬), গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরন (৫৮), কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি মো: সাদ্দাম (৩৫) ও সাধারণ সম্পাদক ইনান (৩৪)। মামলায় শেখ হাসিনাসহ প্রথম ১৭ জনকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-জনতার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে গাছা থানাধীন বড়বাড়ী বাজারের সামনের রাস্তায় সমাবেশে অংশ নেয় মো: মঞ্জু মিয়া। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে বিভিন্ন মারাত্মক দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে। এ সময় হামলাকারীদের এলাপাতাড়ি মারপিটে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রায় ২৫-৩০ জন আহত হয়। একপর্যায়ে মামলার ৬ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও ৭ নম্বর আসামি সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল সশরীরে উপস্থিত থেকে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ পিস্তল ও বন্দুকধারী এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন মো: মঞ্জু মিয়া। আসামিদের ছোড়া গুলি তার পেটের বাম পাশে গুলি ঢুকে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে মঞ্জু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম উপস্থিত ছাত্র-জনতার সহায়তায় তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মঞ্জু মিয়ার মৃত্যু হয়।

বাদি আরো জানান, মো: মঞ্জুজুর লাশ নিয়া গ্রামের বাড়ি রংপুর জেলার পীরাগাছা থানার জুয়ান গ্রামে লাশের দাফন সম্পন্ন করার পর দেশব্যাপী চলমান অস্থিরতা বিরাজমান অবস্থায় থানার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় সুষ্ঠ ও সঠিক এবং ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিবাদির নাম ঠিকানা সংগ্রহের করে পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।


আরো সংবাদ



premium cement