০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণ বিএনপি-জামায়াতের হাতে ছিল : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নারায়ণগঞ্জে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল - ছবি : নয়া দিগন্ত

কোটাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন করা ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণ বিএনপি-জামায়াতের হাতে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম ছাত্ররা সরকারের উদ্যোগ ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাবেন, কিন্তু দুঃখজনকভাবে তারা সেটি করেননি। তাদের কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিদের হাতে ছিল। তারা দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।’

শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এদের আক্রোশই ছিল পুলিশ ও আওয়ামী লীগের প্রতি। দুইজন সাংবাদিককে হত্যা ও একজন নারী সাংবাদিককে নাজেহাল করেছে তারা। এরা (বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিরা) মানুষের শত্রু, জনগণের ও দেশের শত্রু।’

তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে একটি ভবনে আগুন দিয়ে তিন শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা। শিমরাইলে মা হাসপাতালেও আগুন দেয় তারা। সেখান থেকে নবজাতক ও গর্ভবতী মায়েদের অনেক কষ্টে উদ্ধার করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে পুলিশের উপর হামলা করেছে। পিবিআই অফিস, পাসপোর্ট অফিস, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ২ নম্বর রেলগেইটে পুলিশ বক্স, সিটি করপোরেশন ভবন, যুব উন্নয়ন অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মদনপুরে ছয় পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, থানায় হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ওরা পদ্মা সেতুর গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, প্ল্যানও সেতু ভবনে হামলা করে পুড়িয়ে দিয়েছে। ত্রাণ ভবন বিনষ্ট করেছে তারা। যে বিটিভি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর্কাইভে রক্ষা করে, সেই বিটিভি ভবনও পুড়িয়ে দিয়েছে তারা। আমাদের স্বপ্নের ও গর্বের মেট্রোরেলও ওদের অগ্নিসংযোগে এখন বন্ধ।’

শিক্ষার্থীদের দাবি প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন যে ৮ দফা দাবি দিয়েছিলেন সে প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন এগুলোর মধ্যে যৌক্তিক দাবিগুলো ক্রমান্বয়ে মেনে নিবেন। কিন্তু সেই সুযোগ শিক্ষার্থীরা দেননি।’

এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী তিনজনকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। তারা নিজেদের উপরে হামলার শঙ্কা পরিবারকে জানিয়েছিলেন। কারা তাদের আক্রমণ করতে চায় সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে যে পুলিশ তাদের উপর নির্মমভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। আমাদের দেশপ্রেমিক বিজিবিদের উপরও হামলা করা হয়েছে। আমাদের র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি যখন একত্রে পারছিল না তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি। খুব শিগগিরই আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাবো। আমি আগেই বলেছি, ছাত্রদের মিসগাইড করে যে ঘটনাগুলো ঘঠিয়েছে, অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে আমাদের ছাত্রলীগের অনেকেই শাহাদাত বরণ করেছে। তিনজন পুলিশ মারা গেছেন। একজন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এদিকে বর্তমানে একটি মহল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের দায়িত্ব এসব গুজব থেকে দেশকে রক্ষা করা।’

এদিন মন্ত্রী হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ধ্বংসপ্রাপ্ত পিবিআই কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, সিটি করপোরেশন ভবন, শিল্প পুলিশ কার্যালয়সহ আরো বেশকিছু স্থাপনা পরিদর্শন করেন।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নুরুল ইসলাম, র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement