১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

কোটা সংস্কার আন্দোলন : নিহত ৪ বছরের সেই আহাদের জন্য মসজিদে মসজিদে দোয়া

আহাদ - ছবি : নয়া দিগন্ত

কোটা আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে বাসভবনের ৮ তলার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিশু আহাদের আত্মার শান্তি কামনায় তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বিভিন্ন মসজিদ ও এতিমখানায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকার একটি বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয় আহাদ।

জানা যায়, ১১ তলা বাড়িটির আটতলায় থাকেন আবুল হাসান, তার স্ত্রী সুমি আক্তার, বড় ছেলে দিহান মাতুব্বর (১১) ও ছোট ছেলে আহাদ (৪)। আয়কর বিভাগের উচ্চমান সহকারী আবুল হাসানের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামে।

নিহত শিশু আহাদের চাচা মোখলেসুর রহমান বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেরদিন শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আহাদকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বেলা ৩টার দিকে আহাদের লাশটি তারা বুঝে পান। তারপর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামের বাড়ি ভাঙ্গার পুখুরিয়া গ্রামে চলে যান। বাদ মাগরিব পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আহাদকে।

মোখলেসুর বলেন, ‘বাড়িতে আগে পারিবারিক কবরস্থান ছিল না। আহাদকে দাফনের মধ্য দিয়েই কবরস্থানটির যাত্রা শুরু হলো,’ আবেগভরা কণ্ঠে কথাগুলো বলেন তিনি।

আহাদের মৃত্যুতে শুক্রবার বাদ জুমা স্থানীয় পুখুরিয়া মুন্সিবাড়ী মাদ্রসা ও এতিমখানা, ব্রাম্মনকান্দা মাদ্রসা ও এতিমখানা, হরুপদিয়া মাদ্রসা ও এতিমখানা এবং পুখুরিয়া রেল স্টেশন জামে মসজিদ ও পুখুরিয়া গ্রামের আটটি মসজিদে মিলাদ মাহফিল এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

নিহত আহাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯ জুলাই বিকেলে নিজ বাসার বারান্দায় এক পাশে বাবা, আরেক পাশে মা, মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল ছোট্ট আবুল আহাদ। বাসার বারান্দায় দাঁড়ানো তিন জোড়া চোখ নিচের দিকে তাকিয়ে। বাসার নিচে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ চলছিলো। এর মাঝেই আচমকা মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে আহাদ।

বাবা ভেবেছিলেন ছেলে মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। ছেলেকে ধরে তুলতে গিয়ে বুকের রক্ত হিম হয়ে যায় আবুল হাসানের। ছেলেটার চোখ, মুখ, মাথা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। গুলিটা ডান চোখে বিদ্ধ হয়ে মাথার ভেতরেই আটকে গেছে।

রক্তাক্ত ছেলেকে কোলে নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে আসেন তিনি। অস্ত্রধারীরা এগিয়ে এসে তাঁকে বাধা দেয়। পরে ছেলের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে সরে দাঁড়ায়। আহাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা বলেন, গুলি মাথার মধ্যে আছে। কিন্তু কোন অবস্থানে আছে, তা বোঝার জন্য সিটিস্ক্যান করতে হবে। কিন্তু সিটিস্ক্যান করতে নেয়া হলে আইসিইউর যন্ত্রপাতি খুলে ফেলতে হবে। এতে শিশুটির মৃত্যুও হতে পারে। তবে সিটিস্ক্যান করাও জরুরি।

আবুল হাসান বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হয়ে আমার ছেলে চলে গেল। এ নিয়ে আমি আর কী বলব! চেয়েছিলাম পোস্টমর্টেম না করতে। অতটুকু শরীর যাতে আর কাটাছেঁড়া করা না হয়। কিন্তু আমাদের সে চেষ্টাও সফল হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেফতার সোনারগাঁয়ে শেখ হাসিনা-শেখ রেহেনাসহ ২৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা গাজার চলমান ঘটনাবলী সমসাময়িক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভুল : বসনিয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকে ভারতের আসাম-মেঘালয় সীমান্তে আটক ৬৫ বাংলাদেশী ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুসলিম উম্মাহ'র মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হোসেনপুরে স্কুলশিক্ষকের বসতঘর পুড়ে ছাই রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টির আভাস 'শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে' সিংগাইরে ধলেশ্বরী নদী থেকে লাশ উদ্ধার সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে মৎস্যচাষির মৃত্যু সাংবাদিক শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবুর ওপর ডিম নিক্ষেপ

সকল