১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নদী দূষণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কিছুটা দায়ী : মেয়র আইভী

নদী দূষণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কিছুটা দায়ী : মেয়র আইভী - ছবি : নয়া দিগন্ত

নদী দূষণে সিটি করপোরেশনের দায় স্বীকার করে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, নদী দূষণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কিছুটা দায়ী। কারণ আমাদের যত বর্জ্য আছে তা নালার মাধ্যমে নদীতে ফেলা হয়। আমাদের একা নয় শুধু, সারা বাংলাদেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এভাবেই বর্জ্য ফেলছে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগারে আয়োজিত নদীতে শিল্প দূষণ রোধে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরাই সবার আগে প্রস্তাব দিয়েছি ইটিপির মাধ্যমে পানি নদীতে ফেলতে চাই। ড্রেনের মাধ্যমে আসা সব পানি পরিশোধন করে নদীতে ফেলতে চাই। কিন্তু এর জন্য অর্থ দরকার, সেই ফান্ড কেউ দিচ্ছে না আমাদের।

এ সময় মেয়র আইভী আরো বলেন, হাইকোর্টের রায় আছে নদীর তীরবর্তী জায়গা স্থানীয় সিটি করপোরেশন বা পৌরসভাকে দিতে হবে। সেখানে সবুজায়ন, খেলার মাঠ করতে হবে। আমরা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিলাম জায়গার জন্য। মন্ত্রণালয় বিআইডব্লিউটিএকে নির্দেশনা দিলেও সেই জায়গা আমাদের দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে সেই জায়গা দখল করেছি আমরা।

ক্ষমতাধরদের হাতে নদী দখল হয়ে আছে দাবি করে মেয়র আইভী বলেন, নদীর পাড় তারাই দখল করে আছে যাদের ক্ষমতা আছে। আমি একা কত প্রতিবাদ করব? আপনারাও একটু প্রতিবাদী হন। আমি আছি আপনাদের সাথে। মাঝখানে নদীতীরে থাকা সব ডকইয়ার্ডের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চলল। এখন আবার এসব অভিযান থেমে আছে। কেন থেমে আছে আমার জানা নেই। সেই আগের মতো আবারো নদী দখল শুরু হয়েছে।

আমরা নদীর তীর ঘেঁষে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করব বলে ১৪টি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। তাদের বলেছি, আমি আপনাদের প্রতিষ্ঠান ভাঙব না, আপনারা আমাকে ডিজাইন দেন। কিন্তু তারা প্রথমে সম্মতি দিলেও এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ ডিজাইন দেয়নি। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি ফান্ড পেলে এগুলো ভেঙে আমার ডিজাইন বাস্তবায়ন করব।

নদীকে বাঁচাতে সরাসরি জরিমানা ও আইন প্রয়োগ প্রয়োজন দাবি করে আইভী বলেন, প্রতিটা সংস্থা এখন ডেভেলপমেন্টের কাজ করতে চাচ্ছে। জানি না এখানে কী মধু আছে। দেশে এত সংস্থার প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি। সরকার নির্দেশ দেবেন স্থানীয় সরকারকে।

স্থানীয় সরকার তার লোকবল নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ও সমন্বয় করে কাজ করবে। দেশের সকল মেয়র সমন্বয়হীনতার কথা বারবার বলে আসছি। আমরা যারা মেয়র নির্বাচিত হয়ে এসেছি, তাদের মূলত ক্ষমতা খুবই সামান্য। চাইলেও অনেক কিছু করতে পারি না।

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কারখানার দূষণের বিষয়গুলো সরকার অবগত রয়েছে। কিন্তু কোনো প্রক্রিয়ায় এই দূষণ রোধ করা সম্ভব এবং কিভাবে তা করতে হবে সেই বিষয়ে আমাদের সরকারকে সহযোগীতা করার পাশাপাশি ভুমিকা রাখতে হবে। আমরা আগামী নভেম্বরে পরিবেশ ও নৌ মন্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জ এনে এই দূষণের বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। লোকবলের অভাব এটা কোনো উল্লেখ করার মতো যুক্তি নয়, দেশের মানুষকে কাজে লাগাতে পারলে লোকবলের অভাব হবে না। যেসব প্রতিষ্ঠান দূষণ করছে কিভাবে তাদের দূষণ না করে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আসতে বাধ্য করা যায় সেই কাজটিই পরিবেশ অধিদফতর ও কলকারখানা অধিদফতরের দায়িত্ব।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, নাসিক সিও জাকির হোসেন, নদী রক্ষা কমিশনের সহকারী প্রধান (পরিবেশ) সাকিব মাহমুদ, পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার, এলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement