০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

আবুধাবিতে ৪ জন নিহত, নবাবগঞ্জের বালেঙ্গা গ্রামে শোকের ছায়া

নিহত রাজুর মায়ের আহাজারি - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঢাকার নবাবগঞ্জের বালেঙ্গা গ্রামের চারজন প্রবাসী আবুধাবিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৮ জুলাই) সকালে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বালেঙ্গা গ্রামে এ খবরে চলছে শোকের ছায়া। এর আগে রোববার আবুধাবিতে গাড়ি বিস্ফোরণে পাঁচজন নিহতের সাথে ওই গ্রামেরই চারজন নিহত হয়।

নিতহদের মধ্যে নবাবগঞ্জ উপজেলার বালেঙ্গা গ্রামের শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম রানা (২৯), শেখ এরশাদের ছেলে মো: রাজু হোসেন (২৬), শেখ ইব্রাহিমের ছেলে শেখ ইবাদুল (৩৫), মো: পঙ্খুর ছেলে মো: রাশেদ (৩০) ও অপরজনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী উপজেলার দোহার খালপাড়া এলাকার মনজু মিয়ার ছেলে হিরা মিয়া (২২)।

খবর শোনে গ্রামটি এখন শোকের গ্রামে পরিণত হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে চলছে শোকের আহাজারি। তাদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস যেন ভারি হয়েছে উঠেছে।

জানা যায়, পদ্মা নদীর করাল গ্রাসে বার বার নদী ভাঙনের শিকার হওয়ার পর এ গ্রামের মানুষের একটু ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা কিংবা একটি সুখের জন্য অনেকেই দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু সেই সুখ যেন বেশি দিন স্থায়ী হলো না। একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন মুহূর্তেই সব স্বপ্ন তছনছ হয়ে গেলো।

রোববার সকালে মধ্যপাচ্যের দেশ আবুধাবীর আজমান শহর থেকে কাজের জন্য দুবাইয়ে যাওয়ার সময় এক গাড়ী দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হলে পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে প্রাগলপ্রায় পরিবার ও স্বজনেরা।

নিহত ইবাদুলের বাবা শেখ ইব্রাহিম জানায়, বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটলে আমরা বিকেলে খবর শোনি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুই দিন আগে ইবাদুলের সাথে আমার কথা হয়। সে জানায়, পাঁচ মাস পর বাড়িতে আসবে। পরিবারে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার জন্য দেড় বছর আগে একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আবুধাবী পাড়ি জমান বলে জানা যায়।

নিহত রানার বাবা শেখ লুৎফর রহমান জানান, তার ছেলের বৃহস্পতিবার এনগেটসম্যান হওয়ার কথা। তার আগে এই দুঃসংবাদ পেয়ে তিনি শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন। তিনি তার সন্তানের লাশ দেশে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিনীত আহ্বান জানান।

নিহত রাজুর বড় ভাই রাসেল হোসেন জানান, এ বছরের শুরুর দিকে ছুটিতে বাড়িতে এসে বিয়ে করে রাজু। ছুটি শেষে ফেরুয়ারিতে প্রবাসে চলে যায়। স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামীর মৃতুর সংবাদ শোনার পর অসুন্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, আবুধাবী আজমান শহর থেকে একটি গাড়িতে করে পাঁচজন কাজের জন্য দুবাই শহরের দিকে যাওয়ার পথে একটি লরির সাথে গাড়িটির ধাক্কা লাগে। এতে আগুন ধরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই গাড়িতে থাকা সবাই মারা যায়। সেদেশে সবাই ফ্রি ভিসায় গিয়ে বিভিন্ন কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করতে বলেও জানা যায়।

নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে নিহতের শরীরের সম্পূর্ণ অংশ পড়ে যাওয়ায় লাশ সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। লাশ সনাক্তের জন্য কাজ চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন নিহতের স্বজনরা।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল