ফরিদপুরে রাসেল ভাইপার : অবশেষে যা জানা গেল
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ২০ জুন ২০২৪, ২০:০২
ফরিদপুর শহরের কমলাপুরের চাঁদমারির জনবসতি এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপ বিচরণ করতে দেখে সেটি মেরে ফেলেছে স্থানীয় জনতা। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকাল থেকে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। তবে এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য জানতে কয়েক ঘণ্টা চেষ্টায় গলদঘর্ম হলেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বিষয়টির সত্যতা।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জেলার সাথে ফরিদপুরের চরাঞ্চলে এই সাপের বিস্তৃতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে এতে। ফরিদপুরের চরাঞ্চলে রাসেল ভাইপার সাপের ভয়ে কৃষি শ্রমিক মিলছে না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এবার শহরেও এই সাপ মেরে ফেলার খবরে নতুন আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে।
জানা গেছে, শহরের উত্তর-পূর্বাংশে চাঁদমারি এলাকাটি শহরের প্রাণকেন্দ্রের পাশেই অবস্থিত। সেখানে আগে জনবসতি কম থাকলেও গত কয়েক বছরে ব্যাপক হারে জায়গা-জমি বিক্রি ও জনবসতি গড়ে উঠেছে। এমন একটি ব্যস্ততম বসতি এলাকায় রাসেল ভাইপার সাপের মতো ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের উপস্থিতির খবরে শহরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝেও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষত যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই বিষধর সাপের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আরো জানা গেছে, শহরের কমলাপুরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পাশ থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি রাসেল ভাইপার সাপ দেখতে পেয়ে সেটি মেরে ফেলা হয়েছে, ফেসবুকে ওই মৃত সাপটির একটি ছবি আপলোড করে এমন একটি পোস্ট দেন মশিউর রহমান নামে এক ব্যক্তি। সেখানে শাওন ভুঁইয়া নামে এক ব্যক্তি রাসেল ভাইপার সাপককে এখন জাতীয় দুর্যোগের অন্তর্ভুক্ত করে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেয়া অতীব জরুরি বলে মন্তব্য করেন।
তবে এ বিষয়ে মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইসহাক নামে একজনের ফেসবুক ওয়ালে ছবিটি পেয়ে তিনি পোস্ট করেন। এরপর ইসহাকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও তার পরিচিত এক ছোট ভাইয়ের ফেসবুক ওয়ালে দেখে ছবিটি পোস্ট করেন। এরপর তার ওই পরিচিত ছোট ভাইয়ের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সে জানায়, সেও আরেকজনের ফেসবুকে দেখে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন।
কমলাপুরের বায়তুল আমান নিবাসী মাসুম মোল্লা (৪৩) নামে এক যুবক জানান, বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদমারির বিলুপ্ত ফায়ারিং স্কোয়াডের পাশে পরিত্যক্ত মাঠের মধ্যে সাপটি দেখতে পায় স্থানীয় একজন মহিলা। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে সাপটি পিটিয়ে মেরে ফেলে। তবে কে বা কারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন সেটি তিনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে জানতে ফরিদপুর পৌরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত ওই এলাকার কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মৃধা এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর তানিয়া আক্তার ইভা ফরিদপুরের বাইরে থাকায় তারা কিছু জানেন না বলে জানান।
ফরিদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মনিরুল ইসলাম বলেন, শহর এলাকায় এই সাপের বিস্তৃতির খবর পাওয়া যায়নি। যদি এমন কোনো খবর পাওয়া যায়, সেটি নতুন উদ্বেগের বিষয়। এ ব্যাপারে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, এর আগে সাপটি ফরিদপুরের সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার চরাঞ্চলেই দেখা গেছে। যদিও শহরের উপকণ্ঠে পদ্মাবতী ধলার মোড় এলাকায় রুবেল হোসেন নামে এক যুবক চার বছর আগে একটি রাসেল ভাইপার সাপ জীবিত অবস্থায় ধরেছিলেন। তবে শহরের কোনো এলাকায় এই রাসেল ভাইপারের দেখা মেলার খবর এবারই প্রথম পাওয়া গেলো ফেসবুকে। এর সত্যতা পাওয়া গেলে সেটি শহরবাসীর জন্য নতুন উদ্বেগের বিষয়।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: রফিকুল ইসলাম এ অবস্থায় রাসেল ভাইপারের উপদ্রব থেকে বাঁচতে কৃষকদের ক্ষেতে মশার কয়েল জ্বালিয়ে কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ধোঁয়া সাপের চোখে গেলে সেখান থেকে দ্রুত তারা সরে যায়। কৃষকরা এ পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলও হচ্ছে। তাছাড়া চাষিদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা