১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

১৪ মাস আগে নিখোঁজ ব্যক্তির হাড়গোড় মাদককারবারির বাসা থেকে উদ্ধার

তোফাজ্জল হোসেন টোনো - ছবি : নয়া দিগন্ত

১৪ মাস আগে নিখোঁজ হন সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুরের তোফাজ্জল হোসেন টুনু (২৮) নামের এক গামের্ন্টস শ্রমিক। তাকে হত্যার পর লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আনন্দপুর সিটিলেনের চিহ্নিত মাদককারবারি স্বপন মিয়ার বাসায় সোমবার অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যায় স্থগিত করেন।

মঙ্গলবার (১১ জুন) পুনরায় আবার ঢাকা জেলা (উত্তর) ডিবি পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে মাটি খুঁড়ে তার লাশের হাড়গোড় ও মাথার খুলি উদ্ধার করা হয়।

তোফাজ্জল হোসেন টুনু সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুর ছেলামত মিয়ার ছেলে।

এর আগে স্বপনকে আটক করলে তার দেয়া তথ্যমতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে বলেন জানান ঢাকা জেলা (উত্তর) ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব।

তিনি আরো জানান, ঢাকা পুলিশ সুপার এ ব্যাপারে বিস্তারিত ব্রিফিং করবেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগরে স্বপনের আরেক বাড়ির পাশ থেকে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় সীমা বেগম নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বপন মিয়া সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুরের চিহ্নিত মাদককারবারি। ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল গত ১৩ মে অভিযান চালিয়ে স্বপন মিয়ার আনন্দপুরের বাড়ি থেকে ৩০০ পিচ ইয়াবাসহ বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হামিদ মিয়া ও স্বপনের স্ত্রী পপি আক্তারকে আটকের করে। স্বপন মিয়ার আরেক বাড়ি খনিজনগরের প্রতিবেশী সীমা বেগম তাদের আটকে সহায়তা করেছিলেন। ওই ঘটনার ১৯ দিন পর গত ২ জুন সীমা বেগম নিখোঁজ হন। গত বৃহস্পতিবার স্বপনের খনিজনগরের বাড়ির পাশ থেকে মাটি চাপা দেয়া অবস্থায় সীমার লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই লাশটি উদ্ধারের পর আটকৃত স্বপনের দেয়া তথ্যমতে স্বপন মিয়ার সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুরের দ্বোতলা বাড়ির নিচ তলার মেঝেতে পাকা করা ছয় ফিট বালির নিচ থেকে লাশের হাড়গোড়, মাথার খুলি ও শরীরের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে।

পোশাক শ্রমিক তোফাজ্জল হোসেন টুনুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৯ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে বাসায় বাজার (কাচা-তরকারি) পৌঁছে দিয়ে ঘুরতে বের হয়। এরপর আর সে বাড়ি না ফেরায় ২০ এপ্রিল সাভার মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ওই সময় (এসআই) মুজিবুর রহমান তদন্ত করেন। কিন্তু পুলিশ তার কোনো খোঁজ পাননি।

পরবর্তীতে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। টুনুর পরিবার আরো জানায় তাদের পাশের এলাকা আনন্দপুরের স্বপন মিয়া ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে মাদককারবার করে আসছিল। তোফাজ্জল হোসেন টুনু এসবের প্রতিবাদ করত। মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় টুনু ও এলাকার ছেলেদের সাথে স্বপন ও তার সহযোগীদের মারামারি হয়। তাদের ধারণা, ওই ঘটনার জের ধরেই স্বপন টুনুকে অপহরণ করে হত্যার পর লাশ তার ঘরের মেঝেতে পুঁতে রেখেছে।

তার পরিবার আরো জানান, স্বপনের অনেক টাকা পয়সা। স্বপন তার ইমান্দিপুর বাড়িটি টরসালসেল হিসেবে ব্যবহার করত।

ঢাকা জেলা (উত্তর) ডিবি পুলিশের (এসআই) মো: আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা হচ্ছে লাশের হাড়গোড় তোফাজ্জল হোসেন টুনুর। হাড়গোড়গুলোর ডিএনএস টেস্ট করা হবে।

তোফাজ্জল হোসেন টুনুর চাচা আব্দুল গনি মাদবর জানান, তিনি তার ভাতিজার হত্যাকারীর সর্ব্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করেন।

ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, স্বপনের তথ্যের ভিত্তিতে তোফাজ্জল হোসেন টুনুর লাশ উদ্ধারে স্বপন মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তোফাজ্জল হোসেন টুনু হত্যার পর লাশ পুঁতে রাখা হয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে স্বপনের ঘরের মাটি খুঁড়ে তোফাজ্জল হোসেন টুনুর হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement