বিদ্যুৎ নেই ৩ দিন, জেনারেটরে ভাড়ায় চলছে মোবাইল চার্জ
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ২৮ মে ২০২৪, ১৯:৪৭
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ফরিদপুরের গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে গেছে। ফলে গত রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। এ কারণে জেনারেটর ভাড়া করে মোবাইল ফোনে চার্জ দিচ্ছেন অনেকে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, রোববার রাত থেকে শুরু হয়ে রেমালের প্রভাবে সোমবার সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে ফরিদপুরে। রাতেও বৃষ্টির বাতাসের ঝাপটা ছিল।
এতে বিভিন্নস্থানে কাঁচা বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। আর রোববার রাত থেকেই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে গোটা জেলা। এরমাঝে কিছু কিছু এলাকায় মঙ্গলবার থেকে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়ে এলেও গ্রামে অনেকস্থানে এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি।
পল্লী বিদ্যুৎ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্নস্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং গাছের ডালপালা ভেঙে সঞ্চালন লাইনে বিঘ্ন ঘটায় জেলা সদরের বাইরে প্রায় সবকটি উপজেলাতেই বিদ্যুতের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এ অবস্থা ছিল। তবে মঙ্গলবার সকালের পর আস্তে আস্তে দু-একটি উপজেলায় বিদ্যুৎ চালু করা সম্ভব হয়। তবে এখনো অনেকস্থানে বিদ্যুৎ নেই।
এ অবস্থায় কেরোসিন দিয়ে হারিকেন কিংবা কুপি জ্বালিয়ে অন্ধকার দুর করা গেলেও বিপাকে পড়েন মোবাইল ব্যবহারকারীরা। জরুরি যোগাযোগের প্রয়োজনে তাদের হাতের মোবাইল চালু রাখতে বিকল্প বেছে নিতে হয়েছে। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন জেনারেটর ব্যবসায়ীরা।
জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না বাজারে দেখা গেলো, জনৈক মামুন শেখের জেনারেটর ভাড়া করে কয়েক গ্রামের লোকেরা মোবাইলে চার্জ করিয়েছেন। মামুন শেখ বলেন, কারেন্ট না থাকায় এই ব্যবস্থা করেছি। এতে আমার যেমন দু’পয়সা আয় হলো, মানুষেরও উপকার হলো।
ময়না গ্রামের বাসিন্দা কসমেটিক ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, গক তিন দিন ধরে গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। ফলে মোবাইল বন্ধ হয়ে রয়েছে। এখন আমরা ময়না বাজারে এসে ২০ টাকা দিয়ে মোবাইলে চার্জ করিয়ে নিয়েছি।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ না এলে আবার হয়তো রাতে অনেকেরই মোবাইলে চার্জ দিতে হবে জেনারেটরে। রং মিস্ত্রি সিরাজুল ইসলাম বলেন, মোবাইল ছাড়াতো কোনো কাজই এখন চলে না। কাজের প্রয়োজনে যেমন মোবাইলে যোগাযোগ করতে হয়, তেমন অবসর সময়ও কাটে এই মোবাইল দেখে।
ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এস এম নাসির উদ্দিন জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সাথে বৃষ্টির কারণে রোববার ও সোমবার মনিটরিং বাদে লাইনের কোনো কাজই আমরা করতে পারিনি। মঙ্গলবার থেকেই মূলত: সব এলাকায় কাজ চলছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন উপজেলার মেইন লাইনসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা বাদে সব লাইন চালু করা হয়েছে। তবে যেখানে বিদ্যুতের লাইনের ওপর গাছের ডালপালা ভেঙে পড়েছে, খুঁটি হেলে গেছে, ট্রান্সমিটার বিকল বা অন্য যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটেছে, সেসবস্থানে এখনো কাজ চলছে। আশা করা যায় শিঘ্রই সেসবস্থানে বিদ্যুৎ চালু করা যাবে। এছাড়া সদরপুর ও ভাঙ্গায় ২৯ মে উপজেলা নির্বাচনের কারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেখানে লাইন চালু করার জন্য বেশি লোকজন পাঠানো হয়েছে।