১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফতুল্লায় গ্যাসলাইনে আগুন, ১১ ঘণ্টা ধরে বন্ধ গ্যাস সরবরাহ

ফতুল্লায় গ্যাসলাইনে আগুন, ১১ ঘণ্টা ধরে বন্ধ গ্যাস সরবরাহ - ছবি : নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা শাসনগাও এলাকায় রোববার বেলা ১১টার দিকে গ্যাসের পাইপ ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে বাসা বাড়িতে ও কলকারখানায় গ্যাস না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। বিশেষ করে বাসা-বাড়িতে গ্যাস না থাকা রান্নাবান্না করা যাচ্ছে না। অনেকে হোটেল থেকে দুপুরের খাবার কিনে খাচ্ছেন।

রোববার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ চালু হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গ্যাস সরবরাহ কখন শুরু হতে পারে এমন প্রশ্নে তিতাসের নারায়নগঞ্জ জোনের ডিজিএম মামুনুর রশিদ জানান, কাজ চলছে। আশাকরি রোববার রাত ১২টা নাগাদ গ্যাস সরবরাহ শুরু হতে পারে।

জানা গেছে, শাসনগাঁও এলাকায় দ্বিতল ফ্লাইওভার প্রকল্পের জন্য রাস্তা খুঁড়ে পাইলিং করার সময় তিতাস গ্যাসের মূল বিতরণ সংযোগের পাইপ ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে রাস্তার পাশের একটি ভবনের প্লাস্টিকের সুয়ারেজের বেশ কয়েকটি লাইন ও বিদ্যুতের তার পুঁড়ে যায়। এছাড়া ৮/৯টি টিনশেড দোকান পুঁড়ে ব্যবসায়িরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।

রোববার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে ২০২৩ সাল থেকে দ্বিতল ফ্লাইওভার প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলছে। রোববার সকাল ১০টায় শাসনগাঁও এলাকায় রাস্তা খুঁড়ে পাইলিং করার সময় মাটির নিচে তিতাস গ্যাসের মূল বিতরণ সংযোগের ১২ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ ফেটে আগুন ধরে যায়। গ্যাসের চাপের কারণে আগুন প্রায় ৬তলা ভবন সমান উঁচুতে উঠে যায়। এ সময় আতঙ্কে আশপাশের বাসিন্দারা রাস্তার বের হয়ে এসে ছোটাছুটি শুরু করে। আগুনে একটি ৫তলা ভবনের প্লাস্টিকের সুয়ারেজের বেশ কয়েকটি লাইন ও বিদ্যুতের তার পুঁড়ে যায়। এছাড়া অন্তত ৮/৯টি টিনসেড দোকান পুঁড়ে গিয়ে ব্যবসায়িরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে আগুনে কেউ হতাহত হননি।

এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহর, ফতুল্লা, পাগলা, সিদ্ধিরগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের একাংশের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগের পড়েছে মানুষ।

ফতুল্লা পাগলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদের নয়া দিগন্তকে জানান,সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ করে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। গ্যাস আসবে এই আসায় বিকেল গড়িয়ে গেলেও গ্যাস না আসায় হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হয়েছে।

দেলপাড়া এলাকা গৃহবধূ মুক্তি বেগম জানান, দুপুরে গ্যাস ছিল না রাত ১০টার দিকেও গ্যাস আসেনি। রান্নাবান্না নিয়ে আমরা কষ্টে আছি।

সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার বাসিন্দা পিন্টু দেওয়ান জানান, বিসিকের দিকে আগুন লাগছে শুনেছি তাই গ্যাস বন্ধ। রাত ১০টার দিকেও গ্যাস আসেনি। হোটেল থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হয়েছে।

ভূঁইগড় এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, দুপুর থেকে বাসার চুলাতে গ্যাস নেই। কাঠ পুড়িয়ে মাটির চুলাতে রান্না করতে হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারি পরিচালক মো: ফখরুদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিতাস কতৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ওই এলাকার মূল বিতরণ লাইনের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিলে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ফতুল্লা, পাগলা ও শহরের মন্ডলপাড়া স্টেশনের ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে বেলা ১১টায় আগুন পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনে।


আরো সংবাদ



premium cement